‘নদী তুিম কোথা হইতে আসিতেছ?’—চিরন্তন এই প্রশ্নের উত্তরসন্ধানে যাওয়ার আগে আমরা একটু রামায়ণ এবং মহাভারত-এর নানা আখ্যানের সূত্র ধরে মানসভ্রমণ করে
‘নদী তুিম কোথা হইতে আসিতেছ?’—চিরন্তন এই প্রশ্নের উত্তরসন্ধানে যাওয়ার আগে আমরা একটু রামায়ণ এবং মহাভারত-এর নানা আখ্যানের সূত্র ধরে মানসভ্রমণ করে নেব সরস্বতীর তীরে তীরে, এক তীর্থ থেকে অন্য তীর্থে। রামায়ণ এবং মহাভারতে নদী সরস্বতী : আর্য সভ্যতা তথা আর্য সািহত্যের অনবদ্য স্বর্ণ-ফসল হলো দুটি মহাকাব্য—রামায়ণ এবং মহাভারত। যেহেতু মহাকাব্য, তাই তার সবকিছুই মহা ব্যঞ্জনা এবং বর্ণনায় সম্পৃক্ত, মহাগুণে গুণান্বিত। যেহেতু এর সমস্ত কাহিনি ঐতিহাসিক সত্যতার দ্বারা পরীক্ষিত বা প্রতিষ্ঠিত নয়, তাই মহাকাব্য-দুটিকে ঐতিহাসিক দলিল বলা যাবে না। তবে মহাকাব্য-দুটিতে বর্ণিত স্থান, নগর, নদ-নদী, পাহাড়-পর্বত, সাগর-মরুস্থলী—সবই বাস্তব পৃথিবীর জড় অস্তিত্বের অংশ এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ভূখণ্ডে তাদের অবস্থান প্রশ্নাতীতভাবে আধুনিককালে নির্ণিত হয়েছে। অন্যান্য নদী-পাহাড়-জল-জঙ্গমের সঙ্গে নানা প্রসঙ্গে এসেছে নদী সরস্বতীর উল্লেখ, তার তীরে তীরে গড়ে ওঠা নানা তীর্থকথা এবং তীর্থকে কেন্দ্র করে নানা আখ্যান-উপাখ্যানের উপস্থাপনা। এখানে শুধু কয়েকটি বহুল প্রচারিত বৃত্তান্তের উল্লেখ করা যাক। সরস্বতী নদীর তীরে ‘স্থাণুতীর্থ’ সেই সময় এক অত্যন্ত জনপ্রিয় এবং প্রসিদ্ধ তীর্থক্ষেত্র ছিল। দেবাদিেদব কঠোর তপস্যার দ্বারা দেবী সরস্বতীকে পূজা করে এই তীর্থ স্থাপন করেছিলেন, সেই থেকে এই তীর্থের নাম ‘স্থাণুতীর্থ’। এই তীর্থের পূর্বকূলে ছিল মহর্ষি বশিষ্ঠের আশ্রম, আর পশ্চিমকূলে মহর্ষি বিশ্বামিত্রের আশ্রম। মাঝখানে স্রোতস্বিনী সরস্বতীর স্বচ্ছ সলিলের পুণ্য প্রবাহধারা। মহাভারতের শল্যপর্বে বিস্তৃত বিবরণ আছে সরস্বতী নদীর তীরে তীরে গড়ে ওঠা নানা তীর্থের নাম এবং তীর্থগুলিকে কেন্দ্র করে নানা উপাখ্যান। কুরুক্ষেত্রের ধর্মক্ষেত্রে যখন কৌরব এবং পাণ্ডবদের ঘোর ধর্মযুদ্ধ শুরু হয়েছিল, সেই সময় যদুকুলশ্রেষ্ঠ বলরাম যুযুধান দু-পক্ষের থেকে দূরত্ব বজায় রাখতে সপার্ষদ বেরিয়ে পড়েন সারস্বত তীর্থদর্শনে। বিভিন্ন তীর্থ ঘুরে নদীশ্রেষ্ঠ সরস্বতীর স্বচ্ছ সলিলে অবগাহন করে তার কূলে-উপকূলে বসবাসকারী অসংখ্য ব্রাহ্মণ, মুনি, ঋষি, তপস্বীকে অজস্র দান-ধ্যান করে তিনি পরম তৃপ্তি লাভ করেন। তিনি যেসব তীর্থ দর্শন করেন তাদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য—মহর্ষি বকের আশ্রম, যাযততীর্থ, অরুণাতীর্থ, তৈজসতীর্থ, অগ্নিতীর্থ, ব্রহ্মযোনিতীর্থ, কুবেরতীর্থ, বদরপাচনতীর্থ, ইন্দ্রতীর্থ, যমুনাতীর্থ, আদিত্যতীর্থ, সোমতীর্থ, সারস্বতমুনিতীর্থ ইত্যাদি। এখানে এত তীর্থক্ষেত্রের উল্লেখের উদ্দেশ্য...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in