অবন্তি রাজ্যের অন্তর্গত উজ্জয়িনী নগরের অধিবাসী উদ্ধব ছিল শিবের উপাসক।

অবন্তি রাজ্যের অন্তর্গত উজ্জয়িনী নগরের অধিবাসী উদ্ধব ছিল শিবের উপাসক। একসময় শিবের দর্শনলাভের জন্য তার প্রাণ ব্যাকুল হয়ে উঠল। বিভিন্ন নগরী ঘুরে সে এমন সাধকের সন্ধান করতে লাগল, যাঁর থেকে শিবদর্শনের উপায় সম্পর্কে অবগত হতে পারে। অবশেষে শিপ্রা নদীর তীরে এক সাধকের কাছে উদ্ধব তার প্রাণের আকুতি প্রকাশ করল। অনেক অনুনয়ের পর তিনি উদ্ধবের প্রতি দয়াপরবশ হয়ে শিবের একটি ধ্যানস্থ মূর্তি তার হাতে দিয়ে বললেন : “উদ্ধব, তুমি এই মূর্তি প্রত্যহ বিধিপূর্বক উপাসনা কর। তুমি নিশ্চয়ই দেবাদিদেবের দর্শন পাবে।” উদ্ধব আগ্রহের আতিশয্যে জিজ্ঞাসা করে : “প্রভু, কতদিন পর আমি তাঁর দর্শন পাব?” সাধক কিছুক্ষণ নীরব থেকে উত্তর করেন : “দুবছর নিরন্তর সাধনা কর, নিশ্চয়ই দর্শন পাবে।” আনন্দিত হৃদয়ে গৃহে প্রত্যাবর্তন করে উদ্ধব। শিবের মূর্তিটি স্থাপন করে সে নিজের সাধনকুটিরে। বিপুল উপচারে শুরু হয় তার উপাসনা—ধূপ-ধুনা-চন্দন, পুষ্পপত্রাদি ভরে থাকে ধ্যানস্থ শিবমূর্তি ঘিরে। প্রত্যহ শিবের ধ্যান-জপে মগ্ন থাকে সে; আর মনে মনে হিসাব কষে—দুবছর হতে আর কত দেরি! এইভাবে দিন এগিয়ে চলে, উদ্ধবের ধৈর্য আর ধরে না। আরাধ্য দেবতার দর্শন পাওয়ার আনন্দে উপচারের পরিমাণও ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পায়। এভাবে দুবছর অতিক্রান্ত হয়, কিন্তু শিবের দর্শন অধরাই থেকে যায়। অধৈর্য হয়ে পড়ে উদ্ধব। একমনে শিবের মূর্তিটির দিকে তাকিয়ে থাকে আর ভাবে—দুবছর উপাসনা শেষ হলে তো দর্শনলাভের কথা, কই এখনো তো কিছু দেখছি না! তবে কি প্রভুর কথা অসত্য? এই মূর্তি থেকে মহাদেব কি দর্শন দেবেন না? এইসব সংশয় নিয়েই একদিন উজ্জয়িনী নগরের হাটে উদ্ধব গিয়েছে পূজার্চনার সামগ্রী কিনতে। আগে হাটে পূজাসামগ্রী নিতে এসে কেবল তার আরাধ্য দেবতার কথাই মনে আসত, এখন তার চ্যুতি ঘটেছে। এমন সময় একটি পাথরে আঘাত লেগে উদ্ধবের পাদুকাটি গেল ছিঁড়ে। সে পড়েছে আতান্তরে। হঠাৎ নজরে এল—হাটের মাঝে যেখানে চারটি পথের মিলন হয়েছে, সেখানে এক বটবৃক্ষের নিচে একজন চর্মকার বসে আছে। উদ্ধব সন্তর্পণে তার কাছে যাওয়ার উদ্যোগ করতেই একটি সুবৃহৎ ষাঁড় ক্ষিপ্রবেগে পথের একদিক...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in