শ্রীমায়ের জীবন ও বাণী শাশ্বত ভারতের কর্ম, জ্ঞান ও প্রেমের সার্থক মহাকাব্য। অপার করুণায় ভরা তাঁহার জীবন আজও এই জগতে শান্তি এবং শক্তি বিতরণ করিয়া চলিয়াছে।

শ্রীমায়ের জীবন ও বাণী শাশ্বত ভারতের কর্ম, জ্ঞান ও প্রেমের সার্থক মহাকাব্য। অপার করুণায় ভরা তাঁহার জীবন আজও এই জগতে শান্তি এবং শক্তি বিতরণ করিয়া চলিয়াছে। তাঁহার অন্তরের অনির্বচনীয় মাধুর্য সার্থক করিয়া তুলিয়াছিল সেইসকল মানুষের জীবনকে, যাহারা নিত্য তাঁহার সংস্পর্শে আসিয়াছিল। শুধু মানুষ নহে, যে-গৃহকে অসামান্য কর্মকুশলতায় শ্রীমা করিয়া তুলিয়াছিলেন গার্হস্থাশ্রম, সেখানে ইতর জীবজন্তুই শুধু নহে, সামান্য ঝাঁটাটিরও স্বীকৃতি ছিল। সংসারে যাহাকে আমরা সামান্য বলিয়া উপেক্ষা করি, সেও যে উপেক্ষণীয় নহে—এই অসামান্য সম্মান দানে তিনি ব্যতিক্রমী। মায়ের অন্তরের মুখ্য রূপ হইল মাতৃভাব৷ কিন্তু একটু গভীরে যাইয়া বিচার বিশ্লেষণ করিলে দেখা যাইবে যে, তাঁহার অন্তরে এমন অনেক ভাব রহিয়াছে যাহার মাধুরী আস্বাদনীয় হইলেও ব্যাখ্যাতীত। তাঁহার দৈনন্দিন জীবনের ছোট ছোট ঘটনায় এইসব ঝিলিক কাটিয়া যায়। এই ভাবমাধুরীগুলি তাঁহার চরিত্রকে স্বতন্ত্র রূপ দিয়াছে। তাঁহার জননীসুলভ স্নেহ-কোমলতার সহিত পবিত্রতা, সেবা, কর্মকুশলতা, মমতা, ক্ষমা, অদোষদর্শিতা ইত্যাদি নানা গুণেরও পরিচয় পাওয়া যায়। শ্রীরামকৃষ্ণদেবই সর্বপ্রথম শ্রীমায়ের নিকট তাঁহার স্বরূপ এভাবে ব্যক্ত করিয়াছিলেন : “যে মা মন্দিরে আছেন, তিনিই এ শরীরের জন্ম দিয়েছেন ও এখন নহবতে বাস করছেন, আর তিনিই এখন আমার পদসেবা করছেন। সাক্ষাৎ আনন্দময়ী-রূপ বলে তোমায় সর্বদা সত্য সত্য দেখতে পাই।” তিনিই শক্তিরূপা সনাতনী শ্রীমাকে প্রকাশ করিয়াছেন। ফলত মায়ের অন্তরের ঐশ্বর্য বাহিরের অগণিত হৃদয়কে স্পর্শ করিয়াছে। শ্রীরামকৃষ্ণই প্রথম তাঁহার প্রিয় নরেনের নিকট সেই জগন্মাতার ‘পূর্ণবিগ্রহ’কে তুলিয়া ধরিয়াছিলেন। পরবর্তিকালে নরেন্দ্রনাথ নিজেকে এই ‘লীলাযন্ত্রীর’ হস্তের যন্ত্র বলিয়া অনুভব করিতেন। সেই মহাশক্তিকে বিবেকানন্দ যথার্থভাবে বুঝিতে পারিয়াছিলেন। শিষ্য হরিপদ মিত্রকে তিনি লিখিয়াছেন : “বাবাজী… শাক্ত মানে মদ-ভাঙ্‌ নয়, শাক্ত মানে যিনি ঈশ্বরকে সমস্ত জগতে বিরাজিত মহাশক্তি ব’লে জানেন এবং সমগ্র স্ত্রী-জাতিতে সেই মহাশক্তির বিকাশ দেখেন।” স্বামীজী প্রকৃতই শাক্ত, মায়ের সন্তান। শ্রীমাকে কেন্দ্র করিয়া নারীজাতির যে জাগরণ হইবে তাহা তিনি ঘোষণা করিয়াছিলেন। ঐ প্রসঙ্গে তিনি যোগানন্দজীকে গভীর আবেগভরে বলিয়াছিলেন : “আমাদের মা আধ্যাত্মিক শক্তির একটি বিশাল আধার, যদিও বাইরে গভীর সমুদ্রের মতো প্রশান্ত। তাঁর...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in