শ্রীরামকৃষ্ণের পার্ষদবৃন্দের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দের পরেই যঁার নাম উচ্চারিত হয়, তিনি স্বামী ব্রহ্মানন্দ। স্বামীজী ছিলেন অপরিসীম শক্তি ও
শ্রীরামকৃষ্ণের পার্ষদবৃন্দের মধ্যে স্বামী বিবেকানন্দের পরেই যাঁর নাম উচ্চারিত হয়, তিনি স্বামী ব্রহ্মানন্দ। স্বামীজী ছিলেন অপরিসীম শক্তি ও কর্মকুশলতার অধিকারী। অপরদিকে ব্রহ্মানন্দজী ছিলেন প্রায় এর বিপরীত স্বভাবের—শান্ত, সমাহিত এবং গভীর চিন্তাশীল। ব্রহ্মানন্দজী তাঁর গুরুভাইয়ের মতো বাগ্মী ছিলেন না, তিনি ছিলেন মিতভাষী। কিন্তু তাঁর সান্নিধ্যে থাকা এমনই এক অসাধারণ অভিজ্ঞতা, যা শত শত ধর্মগ্রন্থ পাঠের থেকেও অধিক মূল্যবান। ১৯২১ সালে রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের প্রেসিডেন্ট ব্রহ্মানন্দজী মাদ্রাজের স্টুডেন্টস হোম আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসর্গ করার জন্য আমন্ত্রিত হয়েছিলেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৯১৭ সালে তিনিই এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। এবারে স্বামী শিবানন্দ এবং মিশনের অন্য সন্ন্যাসীরাও তাঁর সঙ্গে আসেন। সেইসময় ব্রহ্মানন্দজী সম্পর্কে আমি খুব অল্পই জানতাম। বস্তুতপক্ষে রামকৃষ্ণ মিশন সম্বন্ধেও আমার খুব একটা ধারণা ছিল না, যদিও আমি স্টুডেন্টস হোমেই থাকতাম। তবে এটা জানতাম, শ্রীরামকৃষ্ণ এবং স্বামী বিবেকানন্দের মতো দুই মহান ব্যক্তিত্ব পবিত্র ভারতভূমিতে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। একথাও জানতাম, ১৮৯৩-এর শিকাগো ধর্মমহাসভায় স্বামী বিবেকানন্দের যোগদানের ফলে তাঁর নিজের এবং মাতৃভূমির সুনাম হয়েছিল। আমি মায়লাপুর রামকৃষ্ণ মঠে যাতায়াত করতাম বিবেকানন্দের কর্মযোগের ওপর রবিবারের সান্ধ্যকালীন ক্লাসে যোগদান করার জন্য। এই ক্লাস নিতেন অবনী মহারাজ—পরবর্তিকালে স্বামী প্রভবানন্দ। এছাড়াও মঠের বিভিন্ন পূজা-অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকে সবজি কাটা প্রভৃতি এবং দরিদ্র-নারায়ণের সেবায় অংশগ্রহণ করতাম। যখন শুনলাম, ব্রহ্মানন্দজী মঠে এসে উপস্থিত হয়েছেন, তখন তাঁকে দর্শন করার এক তীব্র আকাঙ্ক্ষা অনুভব করলাম। মঠে গিয়ে দেখলাম, তিনি একটি আরামকেদারায় শিবানন্দজীর পাশে বসে আছেন। সাষ্টাঙ্গে প্রণত হলাম তাঁর চরণতলে। তিনি মুখে কিছু না বললেও অনুভব করলাম, একটা শক্তি যেন আমাকে তাঁর প্রতি চুম্বকের মতো আকর্ষণ করছে! মনে হলো এক মহান ব্যক্তিত্বের সামনে আমি এক ক্ষুদ্র বালক মাত্র—যার কোনো কিছুই বলার নেই। কিছুক্ষণ তাঁর সামনে চুপচাপ বসে থেকে স্টুডেন্টস হোমে ফিরে এলাম, কিন্তু তাঁকে দর্শন করার আকুলতা আমার মধ্যে রয়েই গেল। আমি প্রতিদিনই নিয়মিতভাবে তাঁকে দর্শন করতে যেতাম, কোনো কোনো দিন একাধিক বার। তাঁর কাছে বসে থাকাটা একটা...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in