যুগে যুগে ভারতীয় নারীগণ সমাজের বিকাশ ও অগ্রগতিতে তাঁদের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। প্রাচীন যুগে অলোকসামান্যা সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী
যুগে যুগে ভারতীয় নারীগণ সমাজের বিকাশ ও অগ্রগতিতে তাঁদের স্বাক্ষর রেখে গেছেন। প্রাচীন যুগে অলোকসামান্যা সীতা, সাবিত্রী, দময়ন্তী থেকে ঐতিহাসিক যুগের পদ্মাবতী, দুর্গাবতী, সংযুক্তা এখনো আমাদের কাছে স্মরণীয়া। ভগবৎপ্রেমে উন্মাদিনী মীরাবাঈ এযুগেও তাঁর সংগীতের মাধ্যমে জীবিতা। বিদ্যা বা পাণ্ডিত্যের দিক থেকে মণ্ডন-পত্নী উভয় ভারতী ভগবান শঙ্করাচার্যের সঙ্গে শাস্ত্রাদি আলোচনা করেছেন। গণিত-বিজ্ঞানে ও জ্যোতিষশাস্ত্রে লীলাবতী, খনার নাম উল্লেখযোগ্য। ঋষি শৌনক তাঁর বৃহদ্দেবতা গ্রন্থে ঋগ্বেদ-এর সাতাশজন ব্রহ্মবাদিনীর নাম উল্লেখ করেছেন। এঁরা হলেন—ঘোষা, গোধা, বিশ্ববারা, অপালা, উপনিষদ, নিষদ, ব্রহ্মজায়া (জুহু), অগস্ত্যের ভগিনী, অদিতি, ইন্দ্রাণী, ইন্দ্রের মাতা, সরমা, রোমশা, উর্বশী, লোপামুদ্রা, নদী, যমী, শাশ্বতী, শ্রী, লাক্ষা, সার্পরাজ্ঞী, বাক, শ্রদ্ধা, মেধা, দক্ষিণা, রাত্রি এবং সূর্যা।১ বিশ্ববারা শুধু যে মন্ত্রদ্রষ্টা ছিলেন তা নয়, তিনি যজ্ঞে ঋত্বিকের কাজও করেছেন। ঋগ্বেদ-এ রানি ও স্ত্রী যোদ্ধৃগণের উল্লেখ আছে, যাঁরা পতি-সহ রণক্ষেত্রে যুদ্ধ করেছেন। এঁদের কিছু পরিচয় পাওয়া যায়। ঘোষা কক্ষিবান ঋষির কন্যা, জুহু বৃহস্পতির কন্যা, যমী বিবস্বানের কন্যা, অপালাঅত্রি-দুহিতা। ২ একটা সময় বহুল প্রচারিত বৌদ্ধ, জৈন ও অন্যান্য বহু ধর্মের প্রসার হয়েছিল। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল সর্বসাধারণের প্রচলিত জনপ্রিয় ব্রহ্মবাদ, বৈষ্ণবধর্ম এবং শৈবধর্ম। উক্ত ধর্মগুলি নারীদের বিশেষ কতকগুলি স্বাধীনতা ও অধিকারকে স্বীকৃতি দিেয়ছিল। কিন্তু পরবর্তী যুগে ঐ স্বাধীনতা ও অধিকার ধীরে ধীরে লুপ্ত হয়ে যায়। তৎপরবর্তী পুরাণগুলির রচয়িতাগণ জাতীয় চরিত্র গঠনে নারীদের ভূমিকার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতন থাকা সত্ত্বেও সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ উদ্দেশ্য ছিল পারিবারিক, সামাজিক ও নৈতিক জীবনে বৈদিক ধ্যান-ধারণা ও আদর্শকে জনসাধারণের মধ্যে বিস্তার ও প্রতিষ্ঠা করা। বৈদিক জীবনাদর্শকে ‘বর্ণাশ্রম ধর্ম’ শব্দটি দ্বারা বোঝানো হতো। সামাজিক জীবনে নারীকে মাতা ও পত্নী—এই দুই ভূমিকার বাইরে চিন্তাই করা যেত না। ঐসময়ে যে বীরাঙ্গনা নারী ছিলেন না তা নয়—রাজ্যশাসিকা, ধর্মীয় সংস্কারকর্ত্রী স্বল্পসংখ্যক নারী সমাজে ছিলেন; কিন্তু এঁরাও ছিলেন পিতা বা স্বামীর একান্ত অধীনা। ধর্মীয় ব্যাপারে নারীদের উল্লেখযোগ্য কোনো অধিকার দেওয়া হয়নি—শুধু গুরুত্ব দেওয়া হতো বৈবাহিক জীবনে বিশ্বস্ততা, সতীত্ব, স্বামিসেবায়। পরবর্তী যুগের পুরাণগুলিতে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
