স্রোতস্বিনীর প্রবাহপথে শিলাখণ্ড হঠাৎ পতিত হলে প্রবাহের ধারা খানিক বাধাপ্রাপ্ত হয়, পরক্ষণেই
স্রোতস্বিনীর প্রবাহপথে শিলাখণ্ড হঠাৎ পতিত হলে প্রবাহের ধারা খানিক বাধাপ্রাপ্ত হয়, পরক্ষণেই আবার শিলাখণ্ডটিকে কেন্দ্র করে তার দুই পাশ দিয়ে ধারাটি দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে প্রবাহিত হয়। ঠিক এমনভাবেই গতানুগতিক কাল-প্রবাহের মধ্যে ঈশ্বর অবতাররূপে অবতরণ করলে সেই ধারার গতানুগতিক প্রবাহপথ বাধাপ্রাপ্ত হয়। তারপর সেই অবতারকে কেন্দ্র করে কালের প্রবাহ নতুন পথদিশা লাভ করে। নিদ্রামগ্ন সমাজ এই মুক্তধারার প্রবল ধাক্কায় চেতনা ফিরে পায়, নিদ্রা ত্যাগ করে সে নতুনভাবে জেগে উঠতে শেখে। মানুষের আত্মিক জাগরণের সঙ্গে সঙ্গে শিল্প-সংস্কৃতি, জীবনচর্চা ও চর্যা, সাহিত্য-সংগীত ইত্যাদি বিভিন্ন ধারায় প্রাচীন অচলায়তনের রুদ্ধকপাট ভেদ করে নতুনের জয়গান শোনা যায়। আবার সেই অবতারের অপ্রকটের পরেও তাঁর কর্মতরঙ্গ বহুকাল পর্যন্ত কালের তটভূমিতে এসে ঘাই তোলে। ঠিক যেমন, কোনো বড় জাহাজ নদীর বুক দিয়ে চলে যাওয়ার অনেকক্ষণ পরেও তটভূমিতে ঢেউ এসে আছড়ে পড়ে। ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তে মণিপুর রাজ্য সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ২,৬০০ ফুট উচ্চতায় অবস্থিত পর্বতমালা-বেষ্টিত এক রূপসী উপত্যকা। বঙ্গভূমিতে শ্রীচৈতন্যের নেতৃত্বে ভক্তি-আন্দোলনের যে-ঢেউ উঠেছিল, তার তরঙ্গ ভারতের এই পূর্বী-কন্যার শ্যামলী প্রান্তরে এসে আছড়ে পড়েছিল। এই মায়ানগরী মণিপুরের অধিবাসীদের কিছু অংশ নাগা, কিছু অংশ কুকী সম্প্রদায়ভুক্ত আদিবাসী আর কিছু বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। এখানকার মাটি শিল্পকলাময়। শান্ত-সৌম্য মণিপুরী জনজাতি শৈশব থেকে এই পরিবেশেই বড় হয়ে ওঠে। এর প্রধান কারণ—নৃত্য তাদের পূজার্চনার অঙ্গ এবং রাজানুগ্রহে একসময় মণিপুরী নৃত্য এতটাই প্রসারলাভ করেছিল যে, তা কোথাও গিয়ে তাদের অস্তিত্বের নিশান হয়ে ওঠে। আরেকটি ব্যাপার হলো, অর্থনৈতিক দিক থেকে মণিপুর যথেষ্ট সচ্ছল রাজ্য ছিল। নৃত্যশিল্পীরা সমাজে অত্যন্ত উচ্চসম্মান লাভ করতেন। বিশিষ্ট শিল্পীরা রাজসভার কিছু গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পেতেন। পরবর্তিকালের নৃপতিরাও মণিপুরের নৃত্যকে রাজ্যের বিশেষ ঐতিহ্যরূপে সংরক্ষণ ও সাধারণ প্রজাদের তা চর্চা করতে উৎসাহ প্রদান করেছেন। মণিপুরের ঐতিহ্যময় বাদ্য পুং আলোকচিত্রী : প্রীতম বাগচী প্রাচীনকালে সনামহী (গৃহদেবতা), উমংগলাই (বনদেবতা), পাখাংবা (প্রথম দেবতা) প্রভৃতি লৌকিক দেবদেবীর পূজার চল মণিপুরে ছিল। তখন এখানকার প্রধান উৎসব ছিল লাই-হরাউবা। দেবতাকে জাগ্রত করা...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
