বারাণসীর মহিমাকীর্তনে অকৃপণ পুরাণসাহিত্য। দেবাদিদেবের দিব্য আসনকে কেন্দ্র করে সেখানে তিনটি
বারাণসীর মহিমাকীর্তনে অকৃপণ পুরাণসাহিত্য। দেবাদিদেবের দিব্য আসনকে কেন্দ্র করে সেখানে তিনটি পবিত্র ধারা প্রবাহিত হয়ে চলেছে—ভাগীরথী, ভক্তি ও জ্ঞান৷ নির্বিশেষে পাবনতা প্রদানরতা প্রবাহিতা ভাগীরথীর তীরে প্রকাশিত সুপ্রাচীন এই জনপদ সারস্বত জনের যেমন সিদ্ধ সাধনক্ষেত্র, তেমনই এই ভূমির ভক্তিপথে ছড়িয়ে রয়েছে রামানন্দ, কবীর, তুলসীদাসের চরণচিহ্ন। কাশীর অলিতে-গলিতে সনাতন শাস্ত্রের শাখাসমূহে কত যে পত্র-পুষ্প-ফল প্রস্ফুটিত হয়েছে, তার ইয়ত্তা নেই! সন্ত-মহাত্মা ও অবতারের চারণক্ষেত্র কাশীতে বেদান্তচর্চার অঙ্গনে বরণীয় ভর্গ-সহ যে সূর্যোদয় ঘটেছে, তার আলোকমালায় আজও সৃষ্টি সমুজ্জ্বল হয়ে আছে। সেই বহমান জ্ঞানগঙ্গার একবিন্দু বর্তমান নিবন্ধে আমরা স্মরণ করার চেষ্টা করছি। শ্রীহর্ষ—আনুমানিক ১১৫০ সালে শ্রীহর্ষ কান্যকুব্জে আবির্ভূত হন। পিতার নাম শ্রীহরি কবি এবং মাতা মামল্ল। সেই সময় কাশী কান্যকুব্জ রাজ্যের অন্তর্গত ছিল। ঐ রাজ্যের রাজা ছিলেন জয়চন্দ্র বা জয়ন্তচন্দ্র। শ্রীহর্ষ জয়চন্দ্রের আশ্রিত পণ্ডিত ছিলেন। শাস্ত্রীয় বিচারে জয়লাভ করে তিনি কাশীরাজের কাছ থেকে পাণ্ডিত্যের পুরস্কারস্বরূপ তাম্বুলযুগল এবং আসন লাভ করেন। এর উল্লেখ তিনি তাঁর রচিত খণ্ডনখণ্ডখাদ্য-এর সমাপ্তি শ্লোকে করেছেন।১ শ্রীহর্ষের খণ্ডনখণ্ডখাদ্যকে ‘অনির্বচনীয়তাবাদ-সর্বস্ব’ বলা হয়। কারণ, অনির্বচনীয়তাবাদ বা মায়াবাদের ওপরই অদ্বৈতদর্শনের ভিত্তি এবং মায়াবাদই নৈয়ায়িক, বৈশেষিক প্রভৃতি পূর্বপক্ষের মূলত খণ্ডনের কেন্দ্রস্থল। শ্রীহর্ষ সেই আক্রমণ প্রতিহত করে মায়াবাদের ভিত্তি সুদৃঢ় করেছেন। অদ্বৈতানন্দ—১১৯৩ সালে কাঞ্চী সারদামঠের অধ্যক্ষ চন্দ্রশেখরেন্দ্র সরস্বতী কাবেরীর তীরে বসবাসকারী প্রেমনাথ পার্বতীর পুত্র সীতাপতিকে সন্ন্যাসদীক্ষা দেন। নাম হয় ‘অদ্বৈতানন্দ’। ইনি কাশীর মঠাধীশ ছিলেন। অদ্বৈতানন্দ ‘ব্রহ্মবিদ্যাভরণ’ নামে সম্পূর্ণ শাঙ্করভাষ্যের ওপর টীকা রচনা করে এই চিন্তাধারার বিশেষ পুষ্টিসাধন করেন। সরস্বতী তীর্থ—ত্রয়োদশ শতাব্দীতে সরস্বতী তীর্থ কাশীতে বাস করতেন। তাঁর পূর্বাশ্রমের নাম ছিল নরহরি। পিতা মল্লিনাথ, মাতা নাগম্মা। শঙ্করাচার্য প্রণীত প্রপঞ্চসারের ওপর ‘বালচিত্তানুরঞ্জনী’ টীকা তাঁর মুখ্য গ্রন্থ। শ্রীধরস্বামী—চতুর্দশ শতাব্দীতে গুজরাট প্রদেশের অন্তর্গত বেলোডি গ্রামে এক মহারাষ্ট্রীয় ব্রাহ্মণ পরিবারে শ্রীধরের জন্ম। তাঁর গৃহদেবতা ছিলেন নৃসিংহ। বারাণসীতে তিনি পরমানন্দ সরস্বতীর কাছে সন্ন্যাস নেন। সেখানেই নানা শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। শ্রীমদ্ভগবদ্গীতার টীকা ‘সুবোধিনী’, শ্রীমদ্ভাগবতপুরাণ-এর টীকা ‘ভাবার্থদীপিকা’, বিষ্ণুপুরাণ-এর টীকা ‘আত্মপ্রকাশিকা’ তাঁর রচনা। তাঁর মতে—অবতাররূপী শ্রীকৃষ্ণ...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in