উজ্জয়িনী, মধ্যপ্রদেশের পশ্চিম সীমার কাছে অবস্থিত এক প্রাচীন ধর্মীয় শহর। ইন্দোর থেকে ৫৫ কিমি দূরে
“আপন হতে বাহির হয়ে বাইরে দাঁড়া,/ বুকের মাঝে বিশ্বলোকের পাবি সাড়া॥/ এই-যে বিপুল ঢেউ লেগেছে তোর মাঝেতে উঠুক নেচে,/ সকল পরান দিক-না নাড়া॥”১ আজ যখন লিখতে বসলাম দুই দশক আগের ফেলে আসা দিনগুলোর কথা, তখন মনের মধ্যে কবির এই তানই বারবার বেজে উঠছে। সময়টা ছিল ২২ এপ্রিল ২০০৪। সমরেশ বসু দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে ‘অমৃতকুম্ভের সন্ধানে’ মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে। সেই তালেই প্রবাহিত হলাম। উত্তর ২৪ পরগনার ঘর থেকে বেরিয়ে ঘাঁটি পাতলাম উজ্জয়িনীতে এক সন্ন্যাসী সংঘের তাঁবুতে। চোখের সামনে তখন সমরেশ বসুর কালজয়ী কাহিনি। শুধু মেলাতে চাইছি প্রতিটা সমীকরণ। উজ্জয়িনী, মধ্যপ্রদেশের পশ্চিম সীমার কাছে অবস্থিত এক প্রাচীন ধর্মীয় শহর। ইন্দোর থেকে ৫৫ কিমি দূরে অবস্থিত এই শহরের পাশ দিয়ে বয়ে চলেছে ক্ষিপ্রা বা শিপ্রা নদী। তাকে ঘিরেই যত আয়োজন। এই সময় নদী যেন অর্জন করে এক আধ্যাত্মিক শক্তি। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে উজ্জীবিত, প্রাণবন্ত সে। তাই পুণ্যকুম্ভের জলে গা ভাসানোর বাসনা পাহাড়ের টানের চেয়ে কোনো অংশে কম নয়, একেবারে অমোঘ টান। সাধু-সন্ন্যাসীদের সান্নিধ্য, ধর্মপ্রাণ মানুষের কোলাহল, মানুষের সম্পৃক্ততা মনকে মজিয়ে তোলে সেই অমৃতকুম্ভের রসাস্বাদনে। আজও অবসরে চোখে ভাসে মানুষের মিছিল, প্রশাসনের তৎপরতা, অস্থায়ী তাঁবুর সারি, সাধু-সন্তদের সাধনক্রিয়া, স্বেচ্ছাসেবকদের কাজকর্ম। একুশ শতকে দাঁড়িয়ে যখন পুণ্যার্থীর ঢল চোখে পড়ে তখন মনে প্রশ্ন জাগে না তার প্রাচীনত্ব বা সূচনাকাল নিয়ে। চৈত্রের পূর্ণিমা থেকে বৈশাখের পূর্ণিমা পর্যন্ত সময়কালে ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশ্বাস, শত মানুষের সীমাহীন কষ্ট যেন এক লহমায় শেষ হয়ে যায়। শুধু দেশি পুণ্যার্থী নয়, বিদেশি পর্যটকের সংখ্যাও এই সময় নেহাত কম নয়। তাদের আগ্রহ ও কৌতূহল দেখার মতো। ক্রমশ সূর্য যখন অস্তমিত হতে থাকে, সাঁঝের নিঝুম দীপ অন্ধকার বিশ্বচরাচরকে নিজের মহিমায় আলোকিত করে, দিনের কোলাহল স্তব্ধ হয় তখনি শুরু হয় জ্বলন্ত ধুনির সামনে নিমগ্নচিত্তে মোক্ষলাভের সাধনা। তাঁদের গায়ের ভস্ম স্মরণ করিয়ে দেয় নির্বাণের পথ। অথচ গোটা অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে থাকা বেশি পাওয়ারের চড়া লাইটে যেন...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in