ঈশ্বরের প্রতি প্রেমে কতখানি একাকার হওয়া যায় তা নিজ জীবনে দেখিয়েছেন শ্রীচৈতন্য। সেই অতি বিশুদ্ধ প্রেমে
“চৈতন্য ভক্তির অবতার; জীবকে ভক্তি শিখাতে এসেছিলেন।”—শ্রীরামকৃষ্ণ ঈশ্বরের প্রতি প্রেমে কতখানি একাকার হওয়া যায় তা নিজ জীবনে দেখিয়েছেন শ্রীচৈতন্য। সেই অতি বিশুদ্ধ প্রেমে কোনো চাওয়া-পাওয়া তো থাকেই না, এমনকী ষড়ৈশ্বর্যসম্পন্ন যে ভগবান, তিনি তঁার প্রতিটি ঐশ্বর্যেই সর্বতোভাবে উদাসীন থেকে এই নির্মল প্রেমে নিজেই নিজেকে উত্তরোত্তর ভাসিয়ে নিয়ে চলেন। শুধু ভালবাসার জন্যই ভালবাসা ভক্তির উদ্দেশ্য; সেখানে প্রেমময়ের সুখে নিজের সুখ। তাঁর চিন্তনসুধায় প্রেমিক নিজেকে পর্যন্ত বিস্মৃত হয়। সাধকের শরীর-মন জুড়ে কেবল বিরাজ করে পরম প্রেমময়ের মধুময় সত্তা। প্রিয়তমের লীলায় প্রত্যক্ষে বা পরোক্ষে সম্বন্ধিত যেকোনো বিষয়ই স্মরণপথে প্রিয়তমকে উদ্ভাসিত করে তোলে। চৈতন্যদেব তাই পুরীতে উদ্যান দেখতে পেলে তাঁর মানসপটে তখনি নিধুনিকুঞ্জের উদ্দীপন হতো। চটক পর্বতকে গিরিগোবর্ধন ভেবে আকুল হতেন। সমুদ্রের নীলিমায় যমুনার ছবি ভেসে উঠত, আর অমনি উন্মত্ত হয়ে ছুটে যেতেন অগাধ নীল জলের দিকে। সেখানে তিনি স্পষ্ট দেখতে পেতেন তাঁর প্রাণনাথ শ্রীকৃষ্ণকে বাঁশি বাজাতে। তখন বাহ্যসংজ্ঞা লুপ্ত হয়ে লুটিয়ে পড়তেন। মধুর ভাবের এই সাধনই চৈতন্যদেবের মতো আচার্যের জগৎকে প্রধান দান। তাই শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত-এ বলা হয়েছে— “বন্দে শ্রীকৃষ্ণচৈতন্যং কৃষ্ণভাবামৃতং হি যঃ।আস্বাদ্যাস্বাদয়ন্ ভক্তান্ প্রেমদীক্ষামশিক্ষয়ৎ॥”
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in