‘উদ্বোধন’-এর বর্তমান সংখ্যাগুলি নতুন আঙ্গিকে, নতুন তাৎপর্য নিয়ে আমাদের কাছে আসছে। মনে হচ্ছে, ‘উদ্বোধন’-এর যেন নবজন্ম হয়েছে! যেমন মাঘ ১৪২৮ সংখ্যার প্রচ্ছদপটটি একটি পানপাত্র নিয়ে আমাদের সামনে উপস্থিত হয়েছে। প্রথমে দেখেই উদ্দীপন জাগে মনে—ভগবান আমার সামনে অমৃতভাণ্ডটি যেন এগিয়ে দিচ্ছেন! প্রতিদিন আমরা বিষ-গরলে অর্ধমৃত হয়ে আছি। কোনো এক শুভক্ষণে ভগবান এগিয়ে দিয়েছেন অমৃতপূর্ণ পানপাত্রটি।
এই অমৃতের স্বাদ পাই ‘উদ্বোধন’-এর লেখক-লেখিকাদের লেখাতেও। পত্রিকার সম্পাদক মহারাজকে অসংখ্য ধন্যবাদ তাঁর লেখা নির্বাচনের পারদর্শিতার জন্য। প্রতিটি সংখ্যার ‘কথাপ্রসঙ্গে’ লেখাগুলি পাঠ করে ভাল লাগে। মাঘ সংখ্যার ‘কথাপ্রসঙ্গে’ ‘নীলকণ্ঠ’ লেখাটি এতই সুন্দর যে, কিছু বলার অপেক্ষা রাখে না। বর্তমান যুগে অসুরের পরাক্রমে আমরা মনে-প্রাণে বিধ্বস্ত। আমরা আশা করে আছি কে হবেন মহাদেবের মতো নীলকণ্ঠ—কবে আমাদের হাতে তুলে দেবেন তাঁর আশীর্বাদস্বরূপ অমৃতভাণ্ডটি। এই অমৃতভাণ্ডটি পেতে হলে আমাদের নিজেদের মধ্যে আধ্যাত্মিক শুভশক্তিকে সাধনার দ্বারা জাগ্রত করতে হবে।
এই সংখ্যার অনেক লেখার কথা বলা যায়, কিন্তু একটি বিশেষ লেখার কথা বলব—সেটি হচ্ছে ডায়েন মার্শালের লেখা ‘গ্রামার্সি পার্কে স্বামীজী, ময়না ও গানের আসর’। এই লেখাটি পড়তে পড়তে এক বিরল অভিজ্ঞতার সন্ধান পেলাম। মিস এমা সিমিলিয়া থার্সবির প্রিয় ময়নাটি এক অভিনব বিস্ময়ের সাক্ষী। সে ইংরেিজ, ফরাসি, জার্মান, মালয় ও চীনা—এই পঁাচটি ভাষায় কথা বলতে পারত! ঘর-গেরস্থালির শাসন ঐ ময়নাই করত। এই পাহাড়ি ময়নাটির কথা জেনে আমার মতো সব পাঠকই হয়তো অভিভূত না হয়ে পারেননি। স্বামীজীর সঙ্গেও তাঁর কথোপকথনের মধ্য দিয়ে একটা আত্মিক যোগ স্থাপিত হয়েছিল। সম্পাদক মহারাজের কাছে আমাদের আশা, ভবিষ্যতে তিনি এরকম বিরল তথ্যসমৃদ্ধ লেখা উপহার দেবেন।
ঊর্মিলা সরকার
কলকাতা