বঙ্গভূমিতে আবির্ভূত দুই অবতার আধ্যাত্মিক জগৎকে আলোিকত করে রেখেছেন, যুগ-প্রয়োজনে এঁদের আবির্ভাব
বঙ্গভূমিতে আবির্ভূত দুই অবতার আধ্যাত্মিক জগৎকে আলোিকত করে রেখেছেন, যুগ-প্রয়োজনে এঁদের আবির্ভাব যদিও সাড়ে তিনশো বছরের ব্যবধানে, তথাপি বহু ক্ষেত্রে এঁদের জীবনে আমরা সমন্বয়ও দেখতে পাই। আমাদের আলোচ্য বিষয় ‘পানিহাটীর মহোৎসব’। এক সময় পানিহাটী ছিল অবিভক্ত চব্বিশ পরগনা জেলার শিক্ষিত মানুষের বৃহৎ একটি গ্রাম। ১৯৪৭ সালের জুন মাসে এখানে হাইস্কুল, লাইব্রেরি ও মিউনিসিপ্যালিটি প্রতিষ্ঠিত ছিল। ১৯১১ সালে এই গ্রামের লোকসংখ্যা ছিল চার হাজার। ঐ সময় থেকে এখানকার সঙ্গে কলকাতার যোগাযোগ ছিল। মুসলমান রাজত্বকালে পানিহাটী একটি মহকুমায় পরিণত হয়। শিশিরকুমার ঘোষ তাঁর শ্রীঅমিয় নিমাই চরিত গ্রন্থে লিখেছেন—হোসেন খাঁ ‘সাহ’ উপাধি ধারণ করে গৌড়ের রাজা হলে এখানে একজন কাজি নিযুক্ত করেন। ঐ কাজি সৈন্যসামন্ত পরিবেষ্টিত হয়ে থাকতেন। পানিহাটীর পরিচিতি—এই স্থান গৌড়ীয় বৈষ্ণবদের পরম তীর্থ। শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত-এ লিখিত এই স্থানে শচীমাতার মন্দির, নিত্যানন্দের নর্তন, রাঘব-ভবন এবং শ্রীবাস-অঙ্গনে মহাপ্রভুর সদা আবির্ভাব। শ্রীবাস-অঙ্গন, শচীদেবীর মন্দির বহুকাল হলো বিলুপ্ত। শ্রীরামকৃষ্ণের সময়েও রাঘব-ভবনের অস্তিত্ব ছিল—রাঘব পণ্ডিতের জন্মস্থান পানিহাটীতে। শ্রীচৈতন্যদেব ও নিত্যানন্দ মহাপ্রভু এই স্থানকে অমৃততীর্থে পরিণত করেছেন। নিত্যানন্দ ১৫১৬ সালে পানিহাটিতে আগমন করেন। রাজা বল্লাল সেনের সময় ১১০২ সালে এটি জনবহুল ও প্রসিদ্ধ স্থান ছিল। এখানে ‘কর’ উপাধিধারী কায়স্থ পরিবার শিক্ষাদীক্ষায় উন্নত ছিলেন। শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত-এ উল্লেখিত মকরধ্বজ কর রাঘব পণ্ডিতের অনুরক্ত শিষ্য ও সেবক ছিলেন। পানিহাটীতে ‘বনদেবীর আস্তানা’ ছিল—বৃদ্ধারা প্রতি বছর বেশ ঘটা করে নির্দিষ্ট দিনে এখানে এসে বনদেবীর পূজা দিতেন। অনুমান করা হয়, এক সময় হিংস্র পশ্বাদির উপদ্রব ছিল। এই স্থান শ্বাপদসংকুল জঙ্গলে আকীর্ণ ছিল। বাংলার এই বহু প্রাচীন পুণ্য গ্রাম—যার পূর্বনাম ছিল ‘পুণ্যহট্ট’ বা ‘পণ্যহট্ট’—প্রসিদ্ধ বাণিজ্যকেন্দ্র হিসাবে পরিচিত ছিল। মহাপ্রভু শ্রীচৈতন্যদেব দুবার পানিহাটীতে পদার্পণ করেন। প্রথমবার ১৫১৫ সালে পুরীধাম থেকে আসার সময়, আর দ্বিতীয়বার পুরীধামে যাওয়ার সময়। প্রথম আগমনবার্তা শ্রীচৈতন্যচন্দ্রোদয় নাটকে বর্ণিত। দ্বিতীয়বারের কথা বৃন্দাবনদাস তাঁর শ্রীচৈতন্যভাগবত-এ লিখে রেখে গিয়েছেন। প্রথমবার পিছলদা থেকে নৌকাযোগে পানিহাটীতে এসে বটবৃক্ষঘাটে অবতরণ করেন। সেই ঘাট এখনো বিদ্যমান। বটবৃক্ষটি লোকমুখে নিত্যানন্দের লীলাস্থল...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in