দু-হাজার বছরের বেশি সময় ধরে রামায়ণ ভারতবর্ষের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। রামের মাধ্যমে

দু-হাজার বছরের বেশি সময় ধরে রামায়ণ ভারতবর্ষের ধর্মীয় বিশ্বাসের ওপর গভীর প্রভাব বিস্তার করেছে। রামের মাধ্যমে ভারতবাসী খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেছে আদর্শ ও সুদৃঢ় চরিত্রের একজন মানুষকে—যিনি একাধারে ধর্মের রক্ষক, অন্যদিকে তেমনি পত্নী-উদ্ধারে কর্তব্যপরায়ণ স্বামী। তাঁর চরিত্রের বিভিন্ন দিক ভারতীয় নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলকে প্রভাবিত করেছে। তাই যুগ যুগ ধরে আদর্শ পুরুষ হিসাবে পূজিত হয়ে আসছেন দশরথ-পুত্র রাম। মানুষ গুণগান করেছে—“রঘুপতি রাঘব রাজা রাম।/ পতিতপাবন সীতা রাম।।” প্রাচীন ভারতবর্ষে রামের জয়গান শুধুমাত্র গ্রন্থের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না, স্থানে স্থানে স্থাপিত হয়েছিল রামমন্দির। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার গোয়ালতোড় থানার শিলাবতী নদীর তীরে পাথরবেড়িয়া গ্রামে অবস্থিত রামমন্দিরটি এর প্রকৃষ্ট উদাহরণ। এই মন্দিরে কোনো মন্দির-লেখ না থাকায় এর প্রতিষ্ঠাতা বা প্রতিষ্ঠাদিবস সম্পর্কে তথ্য পাওয়া কঠিন। তবে মন্দিরের প্রসাদকক্ষ নির্মাণের সময় এর গায়ে যা লেখা হয়েছিল—এই মন্দির প্রায় ৫৫০ বছরের পুরানো এবং এর প্রতিষ্ঠাতা বাগবীজ গোস্বামী। মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল হিসাবে গবেষক তারাপদ সাঁতরা পুরাকীর্তি সমীক্ষা মেদিনীপুর গ্রন্থে লিখেছেন : “গড়বেতা—হুমগড় পিচের সড়কে (নিয়মিত বাস চলে) হুমগড়; সেখান থেকে উত্তর-পূর্বে কাঁচা রাস্তায় প্রায় ৫ কিলোমিটার দূরত্বে গড়বেতা থানার (বর্তমানে গোয়ালতোড় থানা) এলাকাধীন গ্রাম পাথরবেড়িয়া (জে. এল. নং ২৭৫)। এখানে দক্ষিণমুখী রামসীতার মাকড়া পাথরের আটচালা মন্দিরটি এক পুরাকীর্তি। জনশ্রুতি যে, দ্রাবিড় থেকে আগত জনৈক সাধক বাগবীজ গোস্বামীই নাকি এই মন্দিরটির প্রতিষ্ঠাতা। মন্দিরটিতে কোনো প্রতিষ্ঠালিপি না থাকলেও, স্থাপত্য বিচারে এটি সতের শতকের মাঝামাঝি সময়ে নির্মিত বলে মনে হয়।”১ গবেষক-লেখক অর্দ্ধেন্দুশেখর গোস্বামী তাঁর স্বরচিহ্ন পুস্তকে মন্দিরের প্রতিষ্ঠাকাল নিয়ে লিখেছেন : “বংশপরম্পরায় লিখিত হয়ে আসা… কুলপঞ্জি অনুসারে আমাদের এই দেশে বর্তমানে ষোড়শ প্রজন্ম চলছে। এই হিসেব অনুযায়ী মন্দিরের বয়স পাঁচশোর চেয়ে কিছু কম হওয়ার কথা।”২ প্রকৃতপক্ষে শ্রীচৈতন্যের প্রভাবে বৈষ্ণবধর্মের ব্যাপক প্রসার ঘটলে পঞ্চদশ শতকের মাঝামাঝি সময় থেকে বাংলায় যে নবপর্যায়ের মন্দিরনির্মাণের প্রবর্তন হয়, তার রেশ ছিল বিংশ শতাব্দীর তৃতীয় দশক পর্যন্ত। এই পর্যায়ে গ্রাম-গ্রামান্তরে যে-মন্দিরগুলি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার সবগুলিই রাজা বা ভূস্বামীদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in