কাশী নগরীর উদ্ভবের সময়কাল নির্ণয় এক-কথায় অসম্ভব, তা প্রায় সকল গ্রন্থই স্বীকার করেছে। ভারতচন্দ্রের কথায়—“না ছিল সৃষ্টির

“কি এ শোভা হয়েছে কাশীমাঝে।।”১ দেবাদিদেব শিবের শহর কাশী-বারাণসী। যেখানে স্বয়ং যমরাজের শাসনও চলে না। সেই শহরে স্বয়ং মহর্ষি ব্যাসদেবকেও শাস্তিভোগ করতে হয়েছিল শিবমহিমা অস্বীকার করার কারণে। বাস্তবিক, এ কাশী ‘সোনার কাশী’। এই অনুভব হয়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণের। কাশী নগরীর উদ্ভবের সময়কাল নির্ণয় এক-কথায় অসম্ভব, তা প্রায় সকল গ্রন্থই স্বীকার করেছে। ভারতচন্দ্রের কথায়—“না ছিল সৃষ্টির আদি যখন।/ কাশীপতি কাশী কৈলা তখন।।”২ বস্তুতপক্ষে কাশী এক বিস্ময়কর নগরী—যেখানে পূর্ববাহিনী গঙ্গা কেবলমাত্র এই নগরে এসে উত্তরবাহিনী হয়ে যেন আবার হিমালয়ে কৈলাসপতির জটায় ফিরে যেতে চান! জন্ম আর মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে দুকূল ছাপিয়ে শিবনাম-এর শ্রেষ্ঠত্বকে প্রতিপন্ন করে চলেছেন তিনি। এই অনির্বচনীয় সুন্দর শিবনগরী আজও আপামর ভারতবাসীর কাছে বিস্ময়কর তীর্থরূপে পরিগণিত। প্রতিবছর অগণিত মানুষ এই পুণ্যভূমির আঙিনায় ভিড় করে এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে যেন ছুটে চলেছে! যেকোনো পুণ্যক্ষেত্রেই তীর্থযাত্রীদের নিত্য ‘যাত্রা’ করা অবশ্যকর্তব্য—কাশীর ক্ষেত্রে এরকম নানান যাত্রা প্রচলিত আছে, যেমন—ছাপান্ন বিনায়ক যাত্রা, নবগৌরী যাত্রা, দ্বাদশ আদিত্য যাত্রা, একাদশ রুদ্র যাত্রা ইত্যাদি। তবে ‘পঞ্চতীর্থ যাত্রা’ সর্বাপেক্ষা প্রধান। পঞ্চতীর্থ বলতে—গঙ্গাতীরবর্তী অসিসঙ্গম ঘাট, দশাশ্বমেধ ঘাট, আদি কেশব ঘাট, পঞ্চগঙ্গা বা পঞ্চনন্দা ঘাট ও মণিকর্ণিকা ঘাট। সুরধুনী-তীরে কাশীর পঞ্চতীর্থ যেন দীপমালা হয়ে বিরাজ করে। আমাদের জীবনদীপও যেন এর স্পর্শে আরো উজ্জ্বল হয়ে ওঠে। প্রথম দীপ : অসিসঙ্গম—পঞ্চতীর্থ যাত্রা শুরু হয় এখান থেকে। গঙ্গা ও অসি নদীর সঙ্গমস্থলে বহু তীর্থযাত্রী স্নান করেন। এই ঘাটটি এখনো কাঁচাভাবেই রয়েছে। অষ্টাদশ-ঊনবিংশ শতাব্দীতে মারাঠি পৃষ্ঠপোষকতায় অন্য ঘাটগুলি পাকা করা হলেও কেবলমাত্র অসিঘাট আগেও যা ছিল এখনো তাই রয়েছে। এটি কাশীর অন্যতম জনবহুল ঘাট, যেখানে প্রতিদিন প্রচুর তীর্থযাত্রী ভোরবেলা থেকে স্নান করতে আসেন। অসিসঙ্গম ঘাটে স্থাপিত মন্দিরটি আকারে ছোট হলেও নান্দনিকতায় অনন্য। এই মন্দিরের গায়ে কাশীখণ্ড-এর নানান শ্লোক লেখা রয়েছে। এই অসিসঙ্গমের দেবতা হলেন শিব। প্রচলিত লোকবিশ্বাসে জানা যায়, এই শিবলিঙ্গ স্বয়ম্ভূ। এটি এখনো কদর্মাক্ত ঘাটের পাশে একটি অশ্বত্থ গাছের তলায় রয়েছেন। আশপাশে ছড়িয়ে রয়েছে আরো কিছু...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in