আলোচ্য গ্রন্থের ভূমিকায় (‘কিছু কথা’) লেখক জানিয়েছেন : “নদী তো সবার জন্য। নদীর বিজ্ঞানকে বোঝার অধিকার তো সাধারণ মানুষেরও আছে।”
আলোচ্য গ্রন্থের ভূমিকায় (‘কিছু কথা’) লেখক জানিয়েছেন : “নদী তো সবার জন্য। নদীর বিজ্ঞানকে বোঝার অধিকার তো সাধারণ মানুষেরও আছে।” এই বিজ্ঞানকে ‘কগ্নেটিভ সায়েন্স’ উল্লেখ করে তিনি বলেছেন যে, এর সম্যক অনুধাবনে প্রয়োজন সামাজিক নৃতত্ত্ব, ভূগোল, ইতিহাস, সাহিত্য, পুরাণ ও নদীকেন্দ্রিক সাহিত্যেরও বিশ্লেষণ। গ্রন্থটিতে নদী সংক্রান্ত বিষয়গুলির তথ্যসমৃদ্ধ ও বিশ্লেষণাত্মক সাবলীল বর্ণনা পাঠকের মনে ঔৎসুক্য জাগায়। পাঁচটি অধ্যায়ে বিন্যস্ত নদীজীবীর নোটবুক অসাধারণ এক গ্রন্থ, যেখানে সমস্যা ও সমাধানের পথ উভয়ই উপস্থাপিত। তিস্তা, আত্রেয়ী, ইছামতী, ভাগীরথী-হুগলি ইত্যাদি নদীর সাথে ছোট ছোট শাখানদী, যেমন—সাহু, বালাসন, কুলিক, কালিন্দ্রি ইত্যাদির বৈচিত্রের কথাও ফুটে উঠেছে লেখকের কলমে, যা মানুষের জীবন ও জীবিকার সঙ্গে যুক্ত। তথ্য ও যুক্তি দিয়ে তিনি দেখিয়েছেন নদী-বাঁধের পরিকল্পনা, বন্যা নিয়ন্ত্রণ, কৃষির পুনর্বিন্যাস প্রভৃতি বিষয়গুলির জন্য ভৌগোলিক অঞ্চলের অবস্থা অনুযায়ী প্রয়োজন পৃথক পৃথক কর্মসূচি। জল সংরক্ষণের জন্য উত্তরবঙ্গের দাং, জামপৈ-এর মতো ঐতিহ্যবাহী সেচের দেশজ ধারা থেকে পুকুর খনন ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে জল-সংস্কৃতি ও ধান-সংস্কৃতির বর্ণনায় লেখকের সুগভীর জ্ঞানের কথা উপলব্ধি করা যায়। তিনি লিখেছেন : “নদী অববাহিকা জুড়ে ছোটো ছোটো ‘চেক ড্যাম’-এর মাধ্যমে বন্যার জল ধরে রাখা যেতে পারে। সবুজের ব্যাপ্তি বাড়াতে হবে পলি নিয়ন্ত্রণের লক্ষ্যে। ভাবতে হবে যৌথ-নদীর ব্যবস্থাপনার কথাও। এ বিষয়ে সরকারের মনোভাব অবশ্যই বিজ্ঞানভিত্তিক হওয়া জরুরি। রাজনীতিভিত্তিক হলে ঘোর বিপদ।” সর্বোপরি প্রশংসা করতে হয় নদী-বিজ্ঞানী লেখকের লেখনভঙ্গির, যেখানে কাব্য ও সাহিত্যের অপূর্ব মিশ্রণ ঘটেছে। এমন একটি গ্রন্থ নিঃসন্দেহে গবেষক ও সাধারণ পাঠক সকলের কাছে সমাদৃত হবে। প্রচ্ছদ, মুদ্রণ, বাঁধাই—সব মিলিয়ে এই গ্রন্থ হাতে তুলে নিলে এক সুন্দরের অনুভূতি হবে। নদীজীবীর নোটবুকসুপ্রতিম কর্মকারধানসিড়িশুভ বন্দ্যোপাধ্যায়৬০ এফ কালীচরণ ঘোষ রোড, কল-৫০২৫০.০০। $15
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in