নবরত্নেশ্বরবচনে বলা হয়েছে—‘সাধকানাং হিতার্থায় অরূপা রূপধারিণী’—সাধকদের হিতের জন্য অরূপা রূপধারণ করেছেন। আবার দেব্যাগমবচনে
প্রতিমা ও পূজা নবরত্নেশ্বরবচনে বলা হয়েছে—‘সাধকানাং হিতার্থায় অরূপা রূপধারিণী’—সাধকদের হিতের জন্য অরূপা রূপধারণ করেছেন। আবার দেব্যাগমবচনে পাওয়া যায়—“চিতিরূপা মহামায়া পরং ব্রহ্ম-স্বরূপিণী।/ সেবকানুগ্রহার্থায় নানারূপং দধার সা।।”১—সেবকের প্রতি অনুগ্রহ করার জন্য চিৎস্বরূপা পরব্রহ্মস্বরূপিণী সেই মহামায়া নানা রূপ ধারণ করেছেন। এই রূপ বা প্রতীক অবলম্বনেই সাধক শাস্ত্রবিহিত নির্দেশ অনুসারে প্রবৃত্ত হন পূজায়। পূজার ক্রম পূজা করা হয়ে থাকে পঞ্চোপচারে বা দশোপচারে বা ষোড়শোপচারে। পঞ্চোপচারে পূজায় পাঁচটি দ্রব্য নিবেদন করা হয়ে থাকে দেবতার উদ্দেশে, সেগুলি হলো—গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ ও নৈবেদ্য। দশোপচারে পূজায় দেবতার উদ্দেশে দশটি দ্রব্য নিবেদন করা হয়—পাদ্য, অর্ঘ্য, আচমনীয়, স্নানীয়, গন্ধ, পুষ্প, ধূপ, দীপ, নৈবেদ্য ও পুনরাচমনীয়। তেমনি ষোড়শোপচারে পূজায় ষোলোটি দ্রব্য নিবেদিত হয় দেবতার উদ্দেশে। প্রত্যেক প্রকার পূজাতেই শাস্ত্রবিহিত ক্রমানুযায়ী পূজার অনুষ্ঠান সম্পন্ন করতে হয়। শুরু হয় প্রার্থনা, আচমন, সামান্যার্ঘ্য স্থাপন, দ্বারদেবতার পূজা ইত্যাদির মাধ্যমে। এইভাবে পূজার ক্রমানুযায়ী এগিয়ে গেলে আসে ধ্যান, মানসপূজা ইত্যাদি। পূজায় ধ্যান প্রতীক ও প্রতিমা পূজার ওপর ভিত্তি করেই বর্তমান আলোচনায় প্রবৃত্ত হওয়া যাক। এটিকে বলা হয়ে থাকে বহিঃপূজা। এই পূজার জন্য প্রতীক বা প্রতিমায় আরাধ্য দেবতার পূজা করতে হয়। প্রতিমায় দেবতার আবাহনের উদ্দেশ্যে দেবতার ধ্যান করা হয়ে থাকে। তাই সমস্ত পূজানুষ্ঠানের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ধ্যানের বিধান রয়েছে, যা পূজানুষ্ঠানের এক অপরিহার্য বিষয়। নির্বাণতন্ত্র-এ বলা হয়েছে—“ধ্যানেন লভতে সর্বং ধ্যানেন বিষ্ণুরূপকম্/ ধ্যানেন সিদ্ধিমাপ্নোতি বিনা ধ্যানৈর্ন সিধ্যতি।।”২—ধ্যানের দ্বারা সমস্ত লাভ হয়, ধ্যানের দ্বারা বিষ্ণু-সারূপ্য প্রাপ্তি হয়, ধ্যানের দ্বারা সিদ্ধিলাভ হয়, ধ্যান ব্যতীত সাধনায় সিদ্ধি নেই। এখানে বিশেষভাবে অবহিত হতে হবে যে, এই আলোচনায় অভীষ্ট দেবতাই হলেন ধ্যানের আলম্বন। সাধারণভাবে ‘ধ্যান’ শব্দের অর্থ ভাবা যেতে পারে—চিন্তা। এই ভাবটি পাওয়া যায় কৌণ্ডিণ্যের পাশুপতসূত্রের (৫।২৪) ভাষ্যে, যেখানে বলা হয়েছে—“ধ্যানং চিন্তনমিত্যর্থঃ।”৩ সুন্দরভাবে ব্যাখ্যা করে শিবপুরাণ-এ বলা হয়েছে—“ধ্যৈ চিন্তায়াং স্মৃতো ধাতুঃ শিবচিন্তা মুহুর্মুহুঃ।/ অব্যাক্ষিপ্তেন মনসা ধ্যানমিত্যাভিধীয়তে।।”৪—ধৈ ধাতু চিন্তার্থক। অবিক্ষিপ্ত মনে মুহুর্মুহু শিবচিন্তাকে বলে ধ্যান। অতএব যেকোনো রকম চিন্তাকেই ধ্যান বলা যাবে না। কুলার্ণবতন্ত্র-এ...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in