‘সুদর্শনের’ আসরে সারদা মাতার জীবনের অল্প-স্বল্প ঘটনা সাক্ষাৎ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে উপস্থাপিত করব। পরের মুখে অম্বল নাই বা চাখলাম। মায়ের ব্যক্তিগত স্মৃতি ব্যক্তিটির পক্ষে মধুরতম স্মৃতি। অম্ল নয়।
[নতুন ধারাবাহিক] ।।১।। ‘সুদর্শনের’ আসরে সারদা মাতার জীবনের অল্প-স্বল্প ঘটনা সাক্ষাৎ ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঝুলি থেকে উপস্থাপিত করব। পরের মুখে অম্বল নাই বা চাখলাম। মায়ের ব্যক্তিগত স্মৃতি ব্যক্তিটির পক্ষে মধুরতম স্মৃতি। অম্ল নয়। মার অনুকম্পায় ১৯০৬ সাল থেকে মাকে প্রথম নয় বছর মধ্যে মধ্যে দর্শন ও স্নেহাশিস লাভ। তাঁর ব্রহ্মময় জীবনের শেষ পাঁচ-ছয় বছর খুব ঘনিষ্ঠভাবে সন্নিকটে উদ্বোধনে দিবারাত্র যাপন করার ভাগ্য ঘটেছিল। কী সূত্রে এই অহো ভাগ্য, তার সংক্ষিপ্তসার। ছেলেবেলায় বাপ-মা কোনো কোনো ছেলের মরে। বড় ভাই-ভাজ কাউকে কাউকে পৈতৃক ভিটে থেকে ধাক্কা মেরে বের করেও না হয় দিল, কিন্তু—। এই ‘কিন্তু’টিই বিরল। ছিটকে গিেয় মায়ের অমৃতহ্রদে অবাধ গতি, মুক্তি পাওয়া—যে বিরাট সত্তাসমীপে স্বামী বিবেকানন্দ, স্বামী ব্রহ্মানন্দ, স্বামী প্রেমানন্দ, স্বামী সারদানন্দ প্রমুখ মহারথিবৃন্দ কৃপাভিখারি হয়ে দিবারাত্র বদ্ধাঞ্জলি দণ্ডায়মান। মাতামহী যোগীন-মার সূত্র ধরে মার আশ্রয়ে যাওয়া, মাকে পাওয়া। তাই বলতে হয়, দেবী সারদামণি আমাদের এই হিসাবে মাতৃধন। গভীর অর্থে তাই, আক্ষরিক অর্থেও তাই। গর্ভধারিণী মা, তাঁর মা, তাঁর মা, তাঁর মা—চারি মাতৃগণ রামকৃষ্ণ-পদধূলিতে ধন্যা। আমাদের দেহগত চার আমলের মায়ের ‘গণেরা’ একটিমাত্র রামকৃষ্ণ-ধারাভুক্তা। এ না হলে মাকে ঘরের মায়ের মতোন পাওয়া—দীর্ঘ দীর্ঘ দিন ধরে সম্ভব হতো না কখনোই। মেয়ে যোগীন সর্বোপরি মায়ের চিহ্নিতা সখী, তাঁর ‘জ্ঞানী জয়া’, তাঁর অন্তরঙ্গা সাধনসাথি, পরামর্শদাত্রী। এই নিবন্ধের গোড়ায় ১৯১৮ সালের স্মৃতিই কিছু ধরা যাক। ছত্রিশ বছর দেখতে দেখতে কাটল। সঠিক দিনলিপির সাহায্যে কথা কইব। কালানুক্রমের পাকা ভিত্তিতে। আমরা সব প্রথম বস্তুতান্ত্রিক ইতিহাস-রসিক। এর মধ্যে এই পদ্ধতিতে ভুলচুকের সম্ভাবনা কম। ইতিহাসের প্রতি গভীর বক্রোক্তি—ইতিহাস তো রফা করা উপন্যাস—সর্বজনবিদিত। History is fiction agreed upon. তথাপি সদোষ ইতিহাস-পথেই এগচ্ছি। ১৯১৭ সাল থেকে নিয়মিত রোজনামচা লিখে যাচ্ছি। তখন কলেজের বিদ্যাভ্যাসে প্রগাঢ় প্রণয়। অপরাবিদ্যা বলে মন থেকে খাটো-জ্ঞান হয়নি। ঐটি তখন মুখ্যই। ভক্তদের প্রসাদ বিতরণ করতে হতো। চা করে দিতে হতো। এঁটো সারি সারি পিরিচ-পেয়ালা সাফ করতে হতো। মার কাছে খেপে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in