সৌন্দর্যের সাগরস্বরূপা কান্তিময়ী মা অন্নপূর্ণা কুঙ্কুমবর্ণা, চন্দ্রাভার ন্যায় জ্যোতিস্তরঙ্গময়ী, স্রোতস্বিনীর ঊর্মিতুল্য চঞ্চলা! কুঙ্কুম
সৌন্দর্যের সাগরস্বরূপা কান্তিময়ী মা অন্নপূর্ণা কুঙ্কুমবর্ণা, চন্দ্রাভার ন্যায় জ্যোতিস্তরঙ্গময়ী, স্রোতস্বিনীর ঊর্মিতুল্য চঞ্চলা! কুঙ্কুম ও অগুরুর দ্বারা সুবাসিতা দেবীর নীলকান্তমণিতুল্য সুদীর্ঘ নীলকুন্তলরাশি! পরিধানে বহু আদিত্যাগ্নি সদৃশ হিরণ্ময় বস্ত্র। রত্নখচিত সজ্জায় সজ্জিতা মায়ের অধরে চন্দ্রকিরণের লাবণ্য! তাঁর দক্ষিণ হস্তে স্বর্ণ ও বিচিত্র রত্নে খচিত দর্বি, বাম হস্তে সুমিষ্ট চরুপূর্ণ পাত্র। এছাড়াও রয়েছে মাল্য, পুস্তক, পাশ ও অঙ্কুশ। দেবী অন্নপূর্ণার এ হেন রূপই যুগ যুগ ধরে ভক্তহৃদয়ে চির জাগরূক! সুপ্রাচীন গ্রন্থসমূহে আলাদা করে অন্নপূর্ণাপূজার উল্লেখ পাওয়া না গেলেও পরবর্তিকালের দক্ষিণামূর্তি সংহিতা, কৃষ্ণানন্দ আগমবাগীশ রচিত তন্ত্রসার, মার্কণ্ডেয়পুরাণ-এর কাশীখণ্ড, স্কন্দপুরাণ, দেবীভাগবত পুরাণ, কাশীপরিক্রমা, শারদাতিলকতন্ত্র, রুদ্রমালা, শিবরহস্য, অন্নপূর্ণামন্ত্রসভা, মহাত্রিপুরসিদ্ধান্ত, কালিদাসের কুমারসম্ভবম্, অন্নপূর্ণামালিনী-নক্ষত্রমালিকা, ভারতচন্দ্র রায়গুণাকর রচিত অন্নদামঙ্গল কাব্য প্রভৃতি গ্রন্থে দেবী অন্নপূর্ণা ও তাঁর পূজা সংক্রান্ত নানা কাহিনি ও তথ্য বিবৃত আছে। অন্নপূর্ণা উপনিষদ-এ দেবীকে জ্ঞানের উত্স হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। তন্ত্রসার গ্রন্থের মতে তিনি দ্বিভুজা ও তাঁর পাশে কুবের কৃতাঞ্জলি হয়ে দঁাড়িয়ে থাকেন। কাশীর সুবিখ্যাত অন্নপূর্ণামূর্তিটি আবার দক্ষিণামূর্তি সংহিতা অনুসারে চতুর্ভুজা। চৈত্র মাসের শুক্লাষ্টমী তিথিতে সর্বপ্রথম দেবীর পূজা হয়েছিল বলে আজও এই দিনটিতে মহাসমারোহে তাঁর পূজা হয়। সময়টি সবিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। শরৎ, হেমন্ত, শীত বা বসন্ত নয়—মায়ের আবাহন হয় প্রখর গ্রীষ্মের শুরুতে সমগ্র প্রকৃতি আর প্রাণিকুল যখন ক্ষুধা-তৃষ্ণায় কাতর হয়ে ওঠে। দেবীর আগমনে সবকিছু সঞ্জীবিত হয় নব প্রাণস্পন্দনে। অন্নপূর্ণার দুপাশে থাকেন ভূমি আর শ্রী দেবী। ভূমি অর্থাৎ পৃথিবী আর শ্রী অর্থাৎ লক্ষ্মী। কাশীতে অন্নপূর্ণাপূজার ইতিহাস মহাতীর্থ কাশীর সঙ্গে বিশ্বনাথ ও অন্নপূর্ণার চিরন্তন সম্পর্ক। প্রচলিত কাহিনি অনুসারে শিব ও পার্বতী কৈলাসে বেশ সুখেই ছিলেন। কিন্তু কবচী, কপর্দী, ভুজঙ্গভূষণ মহাদেবের সংসারে আর্থিক টানাপোড়েনে শুরু হলো দাম্পত্যকলহ! একদিন শিবের একটি কথায় নিদারুণ ক্রুদ্ধ হয়ে মা পার্বতী সখীদের সাথে পরামর্শ করে বিরূপাক্ষকে জব্দ করার অভিপ্রায়ে জগতের সব অন্ন হরণ করে কাশীতে অধিষ্ঠিতা হলেন। অন্নহীন ঘরে ঘরে গিয়ে কোনো ভিক্ষা না পেয়ে পথশ্রমে ক্লান্ত ও ক্ষুধার্ত প্রমথাধিপ মহাদেব তখন বিষ্ণুবল্লভা লক্ষ্মীর পরামর্শে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
