স্বামী অভেদানন্দজী মহারাজের কাছে আমি মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেছিলাম ১৯৩৫ সালের ৩ নভেম্বর সন্ধ্যাবেলায় বেদান্ত মঠের বর্তমান বাড়ির দোতলায় মহারাজের অফিসঘরে। হঠাৎ করেই সেদিন আমি মহারাজের পা ধরে আকুতি জানালাম।
[এই স্মৃতিকথাটি আমরা পেয়েছি প্রয়াত অধ্যাপক হরিদাস মুখোপাধ্যায়ের কন্যা অধ্যাপিকা ডঃ জয়শ্রী মুখোপাধ্যায়ের সৌজন্যে। তিনি লিখেছেন : “শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদ ও শ্রীমা সারদাদেবীর কৃপাধন্য স্বামী অভেদানন্দজীর মন্ত্রশিষ্য ছিলেন আমার পিতা অধ্যাপক হরিদাস মুখোপাধ্যায় (১৯২০—২০১৮)। বেদান্ত মঠে স্বামী অভেদানন্দজীর অফিসঘরে জানলার সন্নিকটে বাবার দীক্ষা হয়েছিল। বহুবার আমাদের সেই স্থান দেখিয়েছেন। তাঁর মুখে বহুবার শুনেছি সেই দিনের ঘটনা। এর পরেও তিনি দীর্ঘকাল নীরোগ দেহে বেঁচে ছিলেন। ইতিহাসের অধ্যাপনা-গবেষণার কাজে সক্রিয়ভাবে যুক্ত ছিলেন। জীবনের শেষদিন পর্যন্ত (১৭ এপ্রিল ২০১৮) তিনি ১৯৩৫ সালের ঐ বিশেষ দিনটিকে স্মরণ করতেন এবং গুরুবলের কথা আমাদের সবসময় বলতেন। জীবনে বহু ঝড়ঝঞ্ঝার সম্মুখীন হয়েছেন কিন্তু মনে-প্রাণে বিশ্বাস করতেন, গুরুর কৃপাতেই সব বিঘ্ন কেটে গিয়েছে। সরকারি চাকরি করে সরকারের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে মামলা করেও বাবা জয়ী হয়েছিলেন ও পদোন্নতি করেছিলেন। ৯৮ বছর বয়স অবধি মোটামুটি সুস্থ দেহে নিজ বাসগৃহে ছিলেন। শেষের দিনও নিজের কাজ কষ্ট করে হলেও করেছেন। সন্ধ্যা ৬টা ৪৫ মিনিটে তিনি সজ্ঞানে ঠাকুরের চরণে লীন হন। স্বামী অভেদানন্দজী বাবাকে যে-আশীর্বাণী লিখে দিয়েছিলেন, সেদিনও বাবা সেটিকে ভক্তিভরে প্রণাম করেছিলেন এবং মহারাজের পদস্পর্শে ধন্য আবীর (আমাদের বাড়িতে সংরক্ষিত) কপালে লাগিয়েছিলেন। শেষের কয়েক বছর বিশেষ করে ঠাকুর-মায়ের নানা আধ্যাত্মিক প্রসঙ্গ করতেন। এইসব স্মৃতিচারণা বাবা যখন করতেন তখন চোখদুটি অশ্রুসজল হয়ে উঠত। অনেক সময় আক্ষেপ করতেন—‘আর কয়েক বছর আগে যদি জন্মাতাম!’ অভেদানন্দ মহারাজের মন্ত্রশিষ্য আমার দাদু-ঠাকুরমার মুখেও এই আক্ষেপ বহুবার শুনেছি—আর কয়েক বছর আগে হলে শ্রীশ্রীমাকে প্রণাম করার হয়তো সুযোগ হতো। আমার দাদু-ঠাকুরমাকে যেসব চিঠি অভেদানন্দ মহারাজ লিখেছিলেন সেগুলি মহারাজের ১৫০তম জন্মজয়ন্তীতে উদ্বোধন কার্যালয় থেকে প্রকাশিত গ্রন্থে সন্নিবিষ্ট আছে। গ্রন্থটির নাম স্বামী অভেদানন্দ: জন্মসার্ধশতবর্ষের শ্রদ্ধাঞ্জলি।”] স্বামী অভেদানন্দজী মহারাজের কাছে আমি মন্ত্রদীক্ষা লাভ করেছিলাম ১৯৩৫ সালের ৩ নভেম্বর সন্ধ্যাবেলায় বেদান্ত মঠের বর্তমান বাড়ির দোতলায় মহারাজের অফিসঘরে। হঠাৎ করেই সেদিন আমি মহারাজের পা ধরে আকুতি জানালাম। তিনি কৃপা করে মন্ত্রদীক্ষা প্রদান করে শ্রীরামকৃষ্ণের চরণে আমাকে সমর্পণ করলেন। বিকালে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in