জয়রামবাটী গ্রাম বিশ্ববাসীর নিকট একটি চিহ্নিত তীর্থস্থান। এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণের সহধর্মিণী শ্রীমা সারদাদেবী। বর্তমান

জয়রামবাটী গ্রাম বিশ্ববাসীর নিকট একটি চিহ্নিত তীর্থস্থান। এখানেই জন্মগ্রহণ করেছিলেন পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণের সহধর্মিণী শ্রীমা সারদাদেবী। বর্তমান চেহারা দেখে উনিশ শতকের জয়রামবাটীকে স্মরণে আনা কষ্টকর। তখন এটি একটি গণ্ডগ্রাম। না ছিল ভাল রাস্তা, না দোকানপাট, হাটবাজার, বিদ্যালয় বা চিকিৎসা পরিষেবা। সমকালীন জয়রামবাটীর প্রত্যক্ষদর্শী স্বামী পরমেশ্বরানন্দের ভাষায় : “তখনকার দিনে জয়রামবাটী গ্রাম ‘তেঁতুলমুড়ি’ নামেও পরিচিত ছিল। গ্রামে মাত্র দু-তিনজন শিক্ষিত লোক ছিলেন, তাঁহারা বিদেশে থাকিতেন।… পথঘাট খুবই খারাপ। গ্রামের মাঝখান দিয়া যাতায়াতের পথ, সেই পথের মধ্যেই একটি নালা। বর্ষাকালে ঐ নালা জলে পরিপূর্ণ হইয়া যাইত, তাহাতে গ্রামের দক্ষিণ প্রান্তের ঘরবাড়ি সব ভাসিয়া যাইত। সেই বর্ষার জলে গ্রামের রাস্তা ও পুণ্যপুকুর সব একাকার হইয়া যাইত।… গ্রামের মধ্যে বঁাড়ুজ্যে-পরিবারই অনেকটা ভদ্রতা ও কৌলিন্য বজায় রাখিয়া চলিতেন। পাঠশালায় সামান্য অধ্যয়ন ব্যতীত ছেলেদের লেখাপড়া শিখিবার আর কোন সুযোগ ছিল না। দু-চারজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি চাকরি করিত, আর প্রায় সকলেই চাষবাস করিয়া জীবনযাত্রা নির্বাহ করিত। গ্রামের লোকদের মধ্যে দলাদলি ও পরস্পরের মধ্যে বিদ্বেষভাব ছিল।”১ এ হেন জয়রামবাটী গ্রামে শ্রীশ্রীমা তাঁর ৬৬ বছর ৭ মাস জীবদ্দশার দীর্ঘ সময়কাল অতিবাহিত করেছেন। ১৮৭২ থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে তিনি প্রায় ২৯ বার কামারপুকুর ও জয়রামবাটী থেকে দক্ষিণেশ্বর ও কলকাতা গমনাগমন করেছেন।২ জয়রামবাটী গ্রামের প্রায় প্রত্যেক পাড়ার ব্যক্তিদের সঙ্গে শ্রীশ্রীমায়ের সৌহার্দ-সম্পর্ক ছিল। অনেক কিছুর সুযোগ না থাকলেও তাঁর কাছে এই গ্রাম ছিল পরম প্রিয়। শেষবার এখান থেকে চলে যাওয়ার সময় ভূমি স্পর্শ করে প্রণাম করে বলেছিলেন : “জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরীয়সী।”৩ জয়রামবাটী মৌজায় জনবসতি অঞ্চল মোট পরিসর সাপেক্ষে কম হলেও সেখানে এগারোটি পাড়ার অস্তিত্ব ছিল উনিশ শতকে। পরিবার-সংখ্যা পর্যাপ্ত না হলেও অনেক পাড়ায় জনবসতি ছিল নিবিড়। পাড়াগুলি মূলত পদবিভিত্তিক। অনেক ক্ষেত্রে জাতিভিত্তিক নামকরণও আছে। জয়রামবাটী গ্রামে এগারোটি পাড়া হলো—মুখার্জিপাড়া, গোয়ালাপাড়া, সামুইপাড়া, বিশ্বাসপাড়া, ব্যানার্জিপাড়া, মণ্ডলপাড়া, কামারপাড়া, ঘোষপাড়া, নাপিতপাড়া, বাগদিপাড়া এবং বেনেপাড়া। এর মধ্যে কয়েকটি পাড়ার অবস্থান স্বামী গম্ভীরানন্দ শ্রীমা সারদা দেবী গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : “পুণ্যপুকুরের দক্ষিণ...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in