১৯১৭ সালের গ্রীষ্মে আমি প্রথম জয়রামবাটী যাই ইন্দ্রদয়ালবাবু, মোক্ষদাবাবু ও যতীনবাবুর সঙ্গে। তখন আমার
১৯১৭ সালের গ্রীষ্মে আমি প্রথম জয়রামবাটী যাই ইন্দ্রদয়ালবাবু, মোক্ষদাবাবু ও যতীনবাবুর সঙ্গে। তখন আমার বয়স ১৭ বছর। আমি সেই সময় সিলেটের গভর্নমেন্ট হাইস্কুলের ছাত্র। আমার জয়রামবাটী যাওয়ার উদ্দেশ্য ছিল শ্রীশ্রীমায়ের দর্শন এবং তাঁর কাছ থেকে আশীর্বাদ ও আগামী দিনের আধ্যাত্মিক পথের নির্দেশ লাভ করা। ইন্দ্রদয়ালবাবু (পরবর্তিকালে স্বামী প্রেমেশানন্দ) এবং মোক্ষদাবাবু সিলেটেরই দুটি উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষক ছিলেন। তাঁরা ইতিপূর্বেই শ্রীশ্রীমায়ের কাছে দীক্ষালাভ করেছিলেন। যতীনবাবু ও আমি ছিলাম ইন্দ্রদয়ালবাবুর নেতৃত্বে পরিচালিত রামকৃষ্ণ মণ্ডলীর সদস্য। নতুন উচ্চাকাঙ্ক্ষী হিসাবে আমরা উদ্গ্রীবভাবে শ্রীশ্রীমাকে দর্শন করার ও তাঁর কাছ থেকে আধ্যাত্মিক শিক্ষালাভের জন্য প্রতীক্ষা করছিলাম। কলকাতা হয়ে জয়রামবাটী যাওয়ার পথে আমরা বাগবাজারে ‘মায়ের বাড়ী’ দর্শন করতে যাই। সেখানে শ্রীরামকৃষ্ণের প্রত্যক্ষ শিষ্য স্বামী সারদানন্দজীর কাছ থেকেও আধ্যাত্মিক জীবনের জন্য উপদেশ লাভ করি। আমরা দক্ষিণেশ্বরেও গিয়েছিলাম বিখ্যাত মন্দিরগুলি, শ্রীশ্রীঠাকুরের বাসকক্ষ ও তাঁর অধ্যাত্মসাধনার স্মৃতিবিজড়িত পবিত্র স্থানগুলি দর্শন করতে। এর পরে আমরা রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশনের মুখ্য কার্যালয় বেলুড় মঠেও যাই। সেখানে আমাদের শ্রীরামকৃষ্ণের আরো দুজন সাক্ষাৎ শিষ্য স্বামী শিবানন্দজী ও স্বামী তুরীয়ানন্দজীর পদতলে বসার সৌভাগ্য লাভ হয়েছিল। আমরা বেলুড় মঠ থেকে চাঁপাডাঙা হয়ে জয়রামবাটী যাই। পথে পড়েছিল শ্রীরামকৃষ্ণের জন্মস্থান কামারপুকুর গ্রাম। এখানে শ্রীরামকৃষ্ণের বাল্যলীলার স্মৃতিবিজড়িত বহু পবিত্র স্থান রয়েছে। কামারপুকুর থেকে জয়রামবাটীর দূরত্ব মাত্র চার কিলোমিটারের মতো। মায়ের দুই সেবক স্বামী জ্ঞানানন্দ ও ব্রহ্মচারী গোপেশ (পরবর্তিকালে স্বামী সারদেশানন্দ) ছিলেন সিলেটের মানুষ এবং ইন্দ্রদয়ালবাবুর সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে পরিচিত। ফলে সিলেটের রামকৃষ্ণ মণ্ডলীর সদস্যরা নিয়মিতভাবে শ্রীশ্রীমা ও জয়রামবাটী সম্পর্কে জানতে পারতেন। আমরা জয়রামবাটীতে এক সপ্তাহেরও বেশি ছিলাম। স্বামী জ্ঞানানন্দও সেই সময় জয়রামবাটীতে ছিলেন। প্রত্যহ শ্রীশ্রীমায়ের চরণস্পর্শ করে প্রণাম ও তাঁর আশীর্বাদ লাভ আমাদের কাছে অত্যন্ত প্রেরণাদায়ক ছিল। মা অত্যন্ত সহানুভূতির সঙ্গে আমার ও যতীনবাবুর দীক্ষালাভের প্রার্থনা শুনেছিলেন। যতদূর মনে পড়ে, একই দিনে আমাদের দীক্ষা হয়েছিল। দীক্ষালাভের পর মনে হলো, আমি জীবনে চলার পথে এক নতুন আধ্যাত্মিক দিঙ্নির্দেশ লাভ করলাম—যেটি আমি একান্তভাবে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in