শাঙ্করভাষ্য—যদা পুনর্বোধক্রিয়াকর্তেতি বোধক্রিয়া-লক্ষণেন তৎকর্তারং বিজানাতীতি বোধলক্ষণেন বিদিতং প্রতিবোধবিদিতমিতি ব্যাখ্যায়তে।

[পূর্বানুবৃত্তি : পৌষ ১৪২৯ সংখ্যার পর] ।।১৯।। আত্মা বোধক্রিয়ার কর্তা—এই মত খণ্ডন শাঙ্করভাষ্য—যদা পুনর্বোধক্রিয়াকর্তেতি বোধক্রিয়া-লক্ষণেন তৎকর্তারং বিজানাতীতি বোধলক্ষণেন বিদিতং প্রতিবোধবিদিতমিতি ব্যাখ্যায়তে। যথা যো বৃক্ষশাখাশ্চা-লয়তি, স বায়ুরিতি তদ্বৎ। তদা বোধক্রিয়াশক্তিমানাত্মা দ্রব্যম্‌, ন বোধস্বরূপ এব। বোধস্তু জায়তে বিনশ্যতি চ। যদা বোধো জায়তে, তদা বোধক্রিয়য়া সবিশেষঃ। যদা বোধো নশ্যতি, তদা নষ্টবোধো দ্রব্যমাত্রং নির্বিশেষঃ। তত্রৈবং সতি, বিক্রিয়াত্মকঃ সাবয়বোঽনিত্যোঽশুদ্ধ ইত্যাদয়ো দোষা ন পরিহর্তুং শক্যন্তে। ব্যাখ্যা—অনেকে আবার এই ‘প্রতিবোধবিদিতম্‌’ শব্দের অন্য ব্যাখ্যা করে থাকে। সেই বিষয়েই এখানে তর্কের প্রসঙ্গ আসছে। ‘যদা পুনঃ বোধক্রিয়াকর্তা ইতি’—[যাদের মতে জ্ঞান একটি ক্রিয়া, তাদের দ্বারা ‘প্রতিবোধ-বিদিতম্‌’ পদের অর্থ] যখন এরূপ ব্যাখ্যা করা হয় যে, আত্মা হলেন বোধক্রিয়ার কর্তা; তখন ‘বোধক্রিয়ালক্ষণেন’—বোধরূপ বা জ্ঞানরূপ ক্রিয়ার লক্ষণের দ্বারা ‘তৎকর্তারং বিজানাতি ইতি’—সেই বোধক্রিয়ার কর্তাকে জানা যায়। ‘বোধলক্ষণেন বিদিতং প্রতিবোধবিদিতম্‌ ইতি ব্যাখ্যায়তে’—সেক্ষেত্রে বোধরূপ বা জ্ঞানরূপ ক্রিয়ার লক্ষণ দ্বারা বিদিত আত্মাকেই প্রতিবোধবিদিত বলা হয়। অর্থাৎ ‘প্রতিবোধবিদিতম্‌’-এর অর্থ হচ্ছে—প্রত্যেক বোধরূপ ক্রিয়ার দ্বারা সেই বোধক্রিয়ার কর্তারূপে যিনি বিদিত হন, তিনিই আত্মা। ‘যথা যঃ বৃক্ষশাখাঃ চালয়তি, সঃ বায়ুঃ ইতি তদ্বৎ’—যেমন, যে বৃক্ষশাখা সঞ্চালিত করছে সে বায়ু; সেইরকম যিনি বোধক্রিয়া করছেন তিনি আত্মা। অর্থাৎ বৃক্ষশাখার স্পন্দন বা চলন-রূপ ক্রিয়ার দ্বারা সেই ক্রিয়ার কর্তারূপে যেমন বায়ুকে জানা যায়, সেইরূপ প্রত্যেক বোধরূপ ক্রিয়ার দ্বারা বোধক্রিয়ার কর্তারূপে আত্মাকে জানতে পারা যায়। [অর্থাৎ শাখাকম্পনকারিত্ব যেমন বায়ুর লক্ষণ, জ্ঞানক্রিয়াকর্তৃত্ব সেইরূপ আত্মার লক্ষণ। এই মতে আত্মা জ্ঞানস্বরূপ নন, জ্ঞানক্রিয়ার কর্তা।] কিন্তু এইপ্রকার সিদ্ধান্ত করা হলে ‘তদা বোধক্রিয়াশক্তিমান্‌ আত্মা দ্রব্যম্‌’—তখন বোধক্রিয়ারূপ যে-শক্তি, সেই শক্তিবিশিষ্ট আত্মা ‘দ্রব্য’ বলে সিদ্ধ হয়ে যায়। দ্রব্যকে আশ্রয় করে গুণ আর ক্রিয়া থাকে। দ্রব্যকে আশ্রয় না করে তারা থাকতে পারবে না। সেইজন্য এখানে বোধক্রিয়া আত্মাকে (দ্রব্য) আশ্রয় করে রইল। যদি আত্মা দ্রব্য হন, তাহলে বোধক্রিয়া আর আত্মা ভিন্ন হবে। গুণ আর গুণীর তফাত হবে। আশ্রয়-আশ্রয়ী ভিন্ন হলে আশ্রয়-আশ্রয়ী সম্পর্ক হয়। সেক্ষেত্রে আত্মা বোধক্রিয়ার কর্তা হলেন, ‘ন বোধস্বরূপ এব’—সাক্ষাৎ বোধস্বরূপ বলে সিদ্ধ হলেন না। বোধক্রিয়ার কর্তা...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in