চতুর্দিকে অমানিশার নিবিড় অন্ধকার। ঘন জঙ্গল এবং ঘন অন্ধকার মিলেমিশে একাকার। মাঝে মাঝেই শ্মশানের নিস্তব্ধতা ভেদ
চতুর্দিকে অমানিশার নিবিড় অন্ধকার। ঘন জঙ্গল এবং ঘন অন্ধকার মিলেমিশে একাকার। মাঝে মাঝেই শ্মশানের নিস্তব্ধতা ভেদ করে শৃগালের ডাক শোনা যাচ্ছে। একপাশে চিতার অগ্নি একটি শবদেহকে লেলিহান শিখা বিস্তার করে ধীরে ধীরে গ্রাস করে ফেলছে। নিকটে আত্মীয়দের ডুকরে ওঠা কান্না। শ্মশানমধ্যে ইতস্তত চিতাভস্ম, নরকঙ্কাল, অস্থিনিচয় ছড়িয়ে। ধীরে ধীরে ফিকে হতে শুরু করেছে অন্ধকার। নিশা অবসানে পাখির কূজন শোনা যাচ্ছে। রাতের ভয়াবহতা আর নেই। আবার বিচিত্র প্রচেষ্টা, বিচিত্র উৎসাহ ও আশা-আকাঙ্ক্ষা দেখা দিচ্ছে। ভুলে যাওয়ার একান্ত চেষ্টা, আবার মিশে যেতে চাওয়া রঙের খেলায়, সুখস্বপ্নে ভরা বর্তমান ও ভবিষ্যতে। কালোকে ঠেলে দিতে চাওয়া চোখের আড়ালে আর কালীকে সযত্নে সীমায়িত করে রাখতে চাওয়া মন্দিরের চৌকােঠর মধ্যে কিংবা ব্যতিক্রমী উন্মাদ সাধকের ইতিহাসের মধ্যে। কিন্তু তা হয় কি? সাধারণ মানুষ দৈনন্দিন জীবনে কি সেই মৃত্যুঞ্জয়ী, সর্বশোকভয়জয়ী আনন্দের আস্বাদ পেতে পারে? বহু বিশিষ্টজন তাঁদের জীবন দিয়ে এই প্রশ্নের ইতিবাচক উত্তর দিয়ে গিয়েছেন। সেই কালীভাবনা এবং কালীর উপাসনা ভয়কে জয় করার দুর্নিবার আকর্ষণে পথ দেখিয়ে চলেছে ভয়ার্ত মানবসমাজকে। জীবনমাঝে শ্মশানসাধনার সূত্রপাত : কলেজে পড়াকালীন সুরেন্দ্রনাথ দাশগুপ্ত একবার কয়েকজন যুবক বন্ধুকে নিয়ে বেলুড় মঠে গিয়েছিল স্বামী বিবেকানন্দের সাথে দেখা করতে। স্বামীজী তাদের জিজ্ঞাসা করেন—নানাপ্রকার বিদ্যাচর্চা করে কোনটা জীবনের সর্বশ্রেষ্ঠ সত্য বলে তারা মনে করে? তাদের উত্তরবিমুখ দেখে স্বামীজী নিজেই বলতে লাগলেন : “দেখ শোন, we shall all die—আমরা সকলেই মরব। প্রতিদিন এই কথা মনে রাখিস, তবেই প্রাণ জেগে উঠবে। তবেই নীচাশয়তা দূর হয়ে যাবে, কার্যে সক্ষম হবি, শরীর-মন সবল হবে। আর তোদের সংস্পর্শে যারা আসবে, তারা সকলেই তোদের কাছ থেকে কিছু পাবে।”১ সুরেন্দ্রনাথ স্বামীজীকে জিজ্ঞাসা করে—এই মৃত্যুচিন্তা কি নৈরাশ্য নিেয় আসবে না? স্বামীজী বললেন, প্রথমে এলেও ক্রমশ তার ফলে মানুষ রক্তমাংসের নশ্বরতা চিন্তা করে সিংহবিক্রমে জেগে উঠবে। অবশিষ্ট জীবন সেই পরিপূর্ণ উদ্যমে সৎকাজে ব্যয় করবে। স্বামীজী তাঁর শিষ্য শরচ্চন্দ্র চক্রবর্তীকে বলেছিলেন : “ওরে, মৃত্যু যখন অনিবার্য তখন ইট-পাটকেলের মতো মরার চেয়ে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in