‘যোগ’ শব্দের অর্থ হলো সেই উপায় বা পদ্ধতি, যার দ্বারা আমরা ঈশ্বরকে জানতে পারি। সনাতন

‘যোগ’ শব্দের অর্থ হলো সেই উপায় বা পদ্ধতি, যার দ্বারা আমরা ঈশ্বরকে জানতে পারি। সনাতন বৈদিক ধর্মে ভগবানকে জানার জন্য বহু পথ বা উপায় নির্দেশ করা হয়েছে। প্রতিটি পথকেই এক-একটি যোগ বলা হয়। কর্মযোগ এই পথগুলির মধ্যে একটি। এটি এমন এক পথ, যার দ্বারা শাস্ত্র এবং মহাপুরুষগণের শেখানো পদ্ধতিতে, আমাদের প্রতিদিনের করণীয় কাজের মাধ্যমেই ঈশ্বরকে লাভ করতে পারি। “জীবনের উদ্দেশ্য ঈশ্বরলাভ”—এটি ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণের নিজের মুখের কথা। যিনি এই জীব ও জগৎ সৃষ্টি করেছেন, তিনিই এই জগতের রহস্য সবথেকে ভাল জানেন। তিনিই ঠিক ঠিক জানেন, জীবনের উদ্দেশ্য কী। সে-কারণে তাঁর দেখিয়ে দেওয়া এই লক্ষ্যে পৌঁছানোই আমাদের জীবনের উদ্দেশ্য হওয়া উচিত। কর্মযোগের পথে এই পরম উদ্দেশ্যে এযুগের মানুষ কীভাবে এগতে পারে তা আমরা বুঝতে চেষ্টা করব। পূজাবুদ্ধিতে কর্ম ‘যৎ করোমি জগন্মাতস্তদেব তব পূজনম্’১ অর্থাৎ হে জগন্মাতা, আমি যে-কাজই করি তা তোমারই আরাধনা—এটিই একজন কর্মযোগীর অন্তরের আকাঙ্ক্ষা। কর্মের শক্তি অতি প্রবল। শুভ বা অশুভ যে-কর্মই করি তার ফল আমাদের ভোগ করতেই হয়। কর্মফল কেউ এড়িয়ে যেতে পারে না। স্বামীজী ‘সন্ন্যাসীর গীতি’তে বলেছেন : “শুভ কর্মে—শুভ, মন্দে—মন্দ ফল,/ এ নিয়ম রোধে নাহি কারো বল।”২ কিন্তু এই প্রবল শক্তিমান কর্মকে যদি সঠিকভাবে সম্পাদন করতে পারি, তবে আমরা কর্মের বন্ধন থেকে মুক্ত হতে পারব। সকাল থেকে রাত্রি পর্যন্ত আমরা যত কাজ করি, সেই সকল কাজ যদি ভগবানের পূজাবুদ্ধিতে করতে পারি, তাহলে যে-কর্ম আমাদের বন্ধনের কারণ হতো, তা হয়ে উঠবে মুক্তির সোপান। শ্রীকৃষ্ণ গীতায় অর্জুনকে বলেছেন—যদি যজ্ঞের জন্য অর্থাৎ ভগবানের পূজার জন্য কর্ম করা হয়, তাহলে সেই কর্ম আর বন্ধনের কারণ হয় না। কিন্তু যদি তা ভগবানের জন্য না হয়ে সামান্য জাগতিক কারণে করা হয়, তবে তা বন্ধনের কারণ হয়। আগুনের মধ্যে একটি সুগন্ধি ফুল ফেলে দিলে ফুল তার নিজের রূপ-গুণ হারিয়ে ভস্মে পরিণত হয়। একইভাবে দুর্গন্ধযুক্ত বস্তু আগুনের মধ্যে ফেলে দিলে সেটিও নিজের রূপ-গুণ, দুর্গন্ধ হারিয়ে ভস্মে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in