ইংরেজি নাম ‘আর্কটিক টার্ন’, বাংলায় তরজমা করলে—মেরুদেশের গাঙচিল। এক বিশেষ ধরনের পরিযায়ী পাখি। সাধারণ গাঙচিলের
দূরে কোথা উড়ে যায় ইংরেজি নাম ‘আর্কটিক টার্ন’, বাংলায় তরজমা করলে—মেরুদেশের গাঙচিল। এক বিশেষ ধরনের পরিযায়ী পাখি। সাধারণ গাঙচিলের মতোই এদের মাঝারি গড়ন। স্লেট পাথরের মতো গায়ের রং, কঁাচির দুটি ফলার মতো লেজ। বসন্তের উষ্ণ স্পর্শে যখন দিগন্তজোড়া বরফের চাদর গলে মিশে যায় উত্তর মহাসাগরের গাঢ় নীল জলে, তখন সেখানে ওরা ভিড় জমায়। নিজেদের সঙ্গী বা সঙ্গিনীটিকে নিয়ে জড়ো হয় কানাডা, সাইবেরিয়া ও গ্রিনল্যান্ডের উত্তর উপকূলে। হাতে সময় মোটে মাস তিনেক। তার মধ্যেই বাসা বঁাধে, ডিম পাড়ে। নিবিড় সাহচর্যে শাবককে একটু একটু করে বড় করে তোলে। তারপর শীত আসার আগেই পাড়ি জমায় আকাশে। তিনমাস ধরে ক্রমাগত উড়ে—আধখানা পৃথিবী অতিক্রম করে—ওরা পৌঁছে যায় সেই দক্ষিণ মহাসাগরে আন্টার্টিকার কোলে, ওয়েডেল সাগরের উপকূলে। দক্ষিণ মেরুতে তখন গরমকাল। অবাক পাখি এই মেরু গাঙচিল। শীতের হাত থেকে রেহাই পেতে ওরা একই বছরে দু-দুটি গ্রীষ্মকাল খুঁজে নেয়—পৃথিবীর দুই বিপরীত মেরুতে। এই সুখটুকুর বিনিমিয়ে ওদের বছরের ছয়মাস কেটে যায় আকাশেই। পথ তো নেহাত কম নয়, যাতায়াত মিলিয়ে কম করেও কুড়ি-কুড়ি চল্লিশ—প্রতিবছর চল্লিশ হাজার কিলোমিটার। একটি মেরু গাঙচিলের গড়পড়তা আয়ু বছর তিরিশ। অতএব, সারাজীবনে সে পাড়ি দেয় কমপক্ষে বারো লক্ষ কিলোমিটার। সহজ হিসাবে যা তিনবার চাঁদে যাওয়ার সামিল! আসলে পরিযায়ী পাখি মানেই ঝাঁকবাঁধা বিস্ময়। কেউ মেরু থেকে মেরুতে উড়ে যায় তো কেউ হেলায় অতিক্রম করে হিমালয়। সাধারণ মানুষ বা পক্ষীপ্রেমীদের মধ্যে তো বটেই, পরিযায়ী পাখিদের নিয়ে বিজ্ঞানী সমাজেও জিজ্ঞাসার অন্ত নেই। মেরু গাঙচিলের কথাই ধরা যাক। এদের অতিদূর যাত্রাপথের প্রায় সবটুকুই গিয়েছে প্রশান্ত অথবা আটলান্টিক মহাসাগরের ওপর দিয়ে। সেই দিশাহীন জলরাশির বুকে ওদের পথ বলে দেয় কে? পথ হারিয়ে তো কোনোদিন ওরা ভিড় করে না হাওয়াই দ্বীপে, কখনো তো উড়ে আসে না আন্দামানে। ওড়িশার চিল্কা হ্রদে অথবা সাঁতরাগাছির ঝিলে শীতকালে যে পরিযায়ী হঁাসেরা এসে সঁাতার কাটে, তাদের অনেকেরই বাড়ি তিব্বত কিংবা মঙ্গোলিয়ায়। আসা-যাওয়ার পথে প্রতিবছর ওদের পার হতে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in