চাই সেই উদ্যম, সেই স্বাধীনতাপ্রিয়তা, সেই আত্মনির্ভর, সেই অটল ধৈর্য্য, সেই কার্য্যকারিতা, সেই একতাবন্ধন,

স্বামী বিবেকানন্দ চাই সেই উদ্যম, সেই স্বাধীনতাপ্রিয়তা, সেই আত্মনির্ভর, সেই অটল ধৈর্য্য, সেই কার্য্যকারিতা, সেই একতাবন্ধন, সেই উন্নতিতৃষ্ণা; চাই,—সর্ব্বদা পশ্চাদ্দৃষ্টি কিঞ্চিৎ স্থগিত করিয়া অনন্ত সম্মুখসম্প্রসারিত দৃষ্টি, আর চাই—আপাদমস্তক শিরায় শিরায় সঞ্চারকারী রজোগুণ। এই দুই শক্তির [রজোগুণ ও সত্ত্বগুণ] সম্মিলনের ও মিশ্রণের যথাসাধ্য সহায়তা করা “উদ্বোধনের” জীবনোদ্দেশ্য। এই জন্য ঘরের সম্পত্তি সর্ব্বদা সম্মুখে রাখিতে হইবে; যাহাতে—আসাধারণ—সকলে তাঁহাদের পিতৃধন সর্ব্বদা জানিতে ও দেখিতে পারে, তাহার প্রযত্ন করিতে হইবে ও সঙ্গে সঙ্গে নির্ভীক হইয়া সর্ব্বদ্বার উন্মুক্ত করিতে হইবে। আসুক চারিদিক্‌ হইতে রশ্মিধারা, আসুক তীব্র পাশ্চাত্য কিরণ। “বহুজনহিতায় বহুজনসুখায়” নিঃস্বার্থভাবে ভক্তিপূর্ণ হৃদয়ে এই সকল প্রশ্নের মীমাংসার জন্য উদ্বোধন সহৃদয় প্রেমিক বুধমণ্ডলীকে আহ্বান করিতেছে এবং দ্বেষবুদ্ধিবিরহিত ও ব্যক্তিগত বা সমাজগত বা সম্প্রদায়গত কুবাক্যপ্রয়োেগ বিমুখ হইয়া সকল সম্প্রদায়ের সেবার জন্যই আপনার শরীর অর্পণ করিতেছে। [উদ্বোধন-এর প্রস্তাবনা] ভাষাকে করতে হবে—যেমন সাফ্‌ ইস্পাত, মুচড়ে মুচড়ে যা ইচ্ছে কর—আবার যে-কে-সেই, এক চোটে পাথর কেটে দেয়, দাঁত পড়ে না। আমাদের ভাষা—সংস্কৃত গদাই-লস্করি চাল—ঐ এক-চাল নকল করে অস্বাভাবিক হয়ে যাচ্ছে। ভাষা হচ্ছে উন্নতির প্রধান উপায়—ল‌ক্ষণ। বাঙ্গালা দেশের স্থানে স্থানে রকমারি ভাষা, কোন্‌টি গ্রহণ করব? প্রাকৃতিক নিয়মে যেটি বলবান্‌ হচ্ছে এবং ছড়িয়ে পড়ছে, সেইটিই নিতে হবে। [উদ্বোধন-সম্পাদককে লিখিত স্বামীজীর পত্রাংশ] বাঙলা ভাষাটাকে নূতন ছাঁচে গড়তে চেষ্টা করব। এখনকার বাঙলা-লেখকেরা লিখতে গেলেই বেশি verb (ক্রিয়াপদ) use (ব্যবহার) করে; তাতে ভাষায় জোর হয় না। বিশেষণ দিয়ে verb (ক্রিয়াপদ)-এর ভাব প্রকাশ করতে পারলে ভাষায় বেশি জোর হয়—এখন থেকে ঐরূপে লিখতে চেষ্টা কর দিকি। ‘উদ্বোধনে’ ঐরূপ ভাষায় প্রবন্ধ লিখতে চেষ্টা করবি। আহার চালচলন ভাব-ভাষাতে তেজস্বিতা আনতে হবে, সব দিকে প্রাণের বিস্তার করতে হবে—সব ধমনীতে রক্তপ্রবাহ প্রেরণ করতে হবে, যাতে সকল বিষয়েই একটা প্রাণস্পন্দন অনুভূত হয়। তবেই এই ঘোর জীবনসংগ্রামে দেশের লোক survive করতে (বাঁচতে) পারবে। নতুবা অদূরে মৃত্যুর ছায়াতে অচিরে এ দেশ ও জাতিটা মিশে যাবে। ঠাকুরের ভাব তো সব্বাইকে দিতে হবেই; অধিকন্তু বাঙলা ভাষায় নূতন...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in