ডঃ নীহাররঞ্জন রায় ইতিহাস রচনার পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছেন : “ইতিহাস রচনায় একটি পদ্ধতি হচ্ছে, প্রায়-কুয়াসাচ্ছন্ন, অস্পষ্ট অতীত থেকে সময়ের
ডঃ নীহাররঞ্জন রায় ইতিহাস রচনার পদ্ধতি সম্পর্কে বলেছেন : “ইতিহাস রচনায় একটি পদ্ধতি হচ্ছে, প্রায়-কুয়াসাচ্ছন্ন, অস্পষ্ট অতীত থেকে সময়ের সূত্র বেয়ে বেয়ে ধীরে ধীরে বর্তমানের দিকে এগিয়ে আসা, প্রায়-সাক্ষ্যের পদচিহ্ন অনুসরণ করে করে।” আসলে চলমান ইতিহাসের বিভিন্ন সূত্র অবলম্বনে ধীরে ধীরে অতীতের দিকে এগিয়ে যাওয়া এবং অতীতের সূত্রগুলির সঙ্গে বর্তমানের যোগাযোগ আবিষ্কার ও প্রতিষ্ঠা করার মাধ্যমেই ইতিহাস রচিত হয়। এর জন্য প্রয়োজন অনুসন্ধান আর উপলব্ধির। রবীন্দ্রনাথের ভাষায় : “যেখানেই হউক না কেন, মানব-সাধারণের মধ্যে যা কিছু ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া চলিতেছে, তাহা ভাল করিয়া জানারই একটা সার্থকতা আছে।” এই সার্থকতায় পুঁথিগত জ্ঞানের চেয়ে অধিক আবশ্যক মানুষের উপস্থিতি, মানুষের আবেগ-উচ্ছ্বাস আর উৎকর্ষকে অনুসন্ধান করা—যে-মানুষ কালে কালে তার পরিপার্শ্বে কিছু না কিছু নির্মাণ করে যায়। অনাগতকালের পটে লিখে দিয়ে যায় দিকচিহ্নের পদাবলি, যা বহুকাল পরেও চুপিসারে আমাদের সঙ্গে কথা বলে। সেই সমস্ত কীর্তি মহাকালের গহ্বরে হারিয়ে যায় ইতিহাসের সরণি বেয়ে, তবুও কিছু চিহ্ন রয়ে যায় গ্রন্থ আর পত্রিকার পাতায়। এবারের শারদ-অর্ঘ্যে আমরা তেমনই একটি মানব-কীর্তিকে তুলে ধরতে চাইছি—যা শতবর্ষ পেরিয়ে অনাগতকালের বিনষ্টির পদযাত্রায় সামিল হয়ে গেছে। এই কীর্তিটি হলো মৌলাশোলের হামারবাড়ি। জঙ্গলমহল দক্ষিণ বাঁকুড়ার একটি প্রাচীন জনপদ রাইপুর ব্লকের বারিকুল থানার অন্তর্গত মেলেড়া অঞ্চলের মধ্যে পড়ে মৌলাশোল গ্রাম। অতীতের বহু স্মৃতি নিয়ে আজও সেখানে দাঁড়িয়ে রয়েছে এই বাড়িটি। ১৩২১ বঙ্গাব্দের ১০ মাঘ বাড়িটির প্রতিষ্ঠাকাল বলে উল্লিখিত, যা মূলত ব্যবহৃত হতো কৃষকের উৎপাদিত ফসল রাখতে। দুই কোঠার বেশি উঁচু এই বাড়ি পুরো কাঠের তৈরি। বিশাল বিশাল শাল কাঠের গুঁড়ি দিয়ে বানানো। সাধারণ মানুষ এটিকে বলে থাকে ‘হামারবাড়ি’—আসলে এক সুবিশাল শস্যাগার। ১৩২১ বঙ্গাব্দের ১০ মাঘ এই বাড়ির প্রতিষ্ঠাকাল হলে ধরে নেওয়া যায়, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের আগে থেকেই এর নির্মাণের প্রস্তুতি চলেছে। প্রতিষ্ঠাকালের নির্দেশটি দেখা যায় বাড়ির গায়ে লাগানো নানান কাঠের ফলকে। ভগ্নপ্রায় বাড়িটির অবশিষ্ট ফলকগুলিতে রয়েছে মূলত ভগবানের নাম বা প্রার্থনা, যার মধ্যে বিশেষভাবে চোখে পড়ে—‘শ্রীশ্রী রাধা কৃষ্ণ পাদপদ্ম ভরসা...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in