রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের দ্বাদশ অধ্যক্ষ স্বামী ভূতেশানন্দজী ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-ভাবে বিভোর এক আনন্দময় পুরুষ। তাঁর মহৎ সঙ্গ সর্বদাই ছিল শি‌ক্ষণীয় ও প্রেরণাদায়ী। তারই কিছু স্মৃতি তুলে ধরছি।

রামকৃষ্ণ মঠ ও রামকৃষ্ণ মিশনের দ্বাদশ অধ্যক্ষ স্বামী ভূতেশানন্দজী ছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ-ভাবে বিভোর এক আনন্দময় পুরুষ। তাঁর মহৎ সঙ্গ সর্বদাই ছিল শি‌ক্ষণীয় ও প্রেরণাদায়ী। তারই কিছু স্মৃতি তুলে ধরছি। ভূতেশানন্দজী তাঁর মঠজীবনের প্রথমদিকে বেলুড় মঠে ছিলেন, ফলে ঠাকুরের সা‌ক্ষাৎ শিষ্যদের সঙ্গে তাঁর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক হয়ে গিয়েছিল। তাঁরাও সাধারণ জীবনযাপন করতেন, সাধারণভাবেই থাকতেন। কখনো কখনো তাঁদের মধ্যে মজার মজার ঘটনা ঘটত। তেমনই একটি মজার ঘটনা পূজনীয় মহারাজের কাছে শুনেছি—যদিও ঘটনাটি প্রকাশিত হয়েছে একটু অন্যভাবে। মহারাজ আমাদের বলেছিলেন : “একবার স্বামী অখণ্ডানন্দজী ও স্বামী বিজ্ঞানানন্দজীর মধ্যে কম্পিটিশন হচ্ছে—কার কতগুলি কলম আছে? দুজনেই নিজের নিজের কলম নিয়ে গুনতে বসেছেন। শেষে দেখা গেল—অখণ্ডানন্দজীর থেকে বিজ্ঞান মহারাজের কলম বেশি। অখণ্ডানন্দজী বিজ্ঞান মহারাজকে বললেন—‘তোমার কাছে হেরে গেলাম।’ উত্তরে বিজ্ঞান মহারাজ বললেন—‘আপনি তো হারেননি, আপনি তো কলম অন্যকে দিয়ে দেন।’ অর্থাৎ বিজ্ঞান মহারাজ কাউকে দেন না।” ঢাকা রামকৃষ্ণ মঠের প্রাচীন চিত্র একবার স্বামী অখণ্ডানন্দজী সারগাছি থেকে মঠে এসেছেন। সাধুরা সবাই তাঁকে প্রণাম করেছেন। অখণ্ডানন্দজী সকালে টি-পট থেকে কয়েক কাপ চা খেতেন। ভূতেশানন্দজী তাঁর টেবিলের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন। কাপ খালি হলে তিনি নিজেই টি-পট থেকে মহারাজকে চা ঢেলে দেন। তা দেখে অখণ্ডানন্দজী তাঁকে জিজ্ঞেস করেন : “মতলবটা কী?” উত্তরে তিনি বলেন : “নিঃস্বার্থ সেবা।” ঠাকুরের পার্ষদদের সঙ্গে তাঁর কত নিকট সম্পর্ক ছিল—এতেই বোঝা যায়। ভূতেশানন্দজীর দ্বিতীয়বার তপস্যায় যাওয়ার প্রার্থনা স্বামী অখণ্ডানন্দজী মহারাজকে জানানো হলে তিনি বলেন : “আমি রিলিফের জন্য লোক পাচ্ছি না, আর তিনি তপস্যায় যাবেন!” মহারাজ শুনে তাঁর কাছে এসে বলেন : “বান্দা হাজির। আপনি নির্দেশ করলে রিলিফেই যাব।” অখণ্ডানন্দজী খানিক‌ক্ষণ চুপ থেকে বললেন : “না, তুমি তপস্যাতেই যাও। রিলিফের কাজ হয়ে যাবে।” সেবার মহারাজ একবছরের জন্য উত্তরকাশীতে তপস্যায় যান। তিনি সেসময় ল‌ক্ষেশ্বর শিবমন্দিরে সারারাত জপধ্যান করে কাটাতেন। সকালে কাছেই কুঠিয়ায় ফিরে আসতেন। ঐ সময় অঞ্চলটি বন-জঙ্গলে পূর্ণ। বাঘ মাঝে মাঝে আসত। একদিন রাতে মহারাজ শিবমন্দিরে গিয়েছেন, সারারাত জপধ্যানে কাটিয়ে সকালে কুঠিয়ায় ফিরে আসবেন।...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in