ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর দিব্যলীলায় জীবের উদ্ধারের জন্য মাতৃমহিমা প্রকাশ করেছেন, সেই মহিমা অভিনব। মায়ের
ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর দিব্যলীলায় জীবের উদ্ধারের জন্য মাতৃমহিমা প্রকাশ করেছেন, সেই মহিমা অভিনব। মায়ের চরণই যে সৃষ্টি-স্থিতি-লয়ের ঠিকানা সেটা তিনি অনন্যলীলায় প্রকটিত করেছেন। চেতনায় সন্তান ভাবের স্থায়ী স্থিতি যে আমাদের আনন্দরাজ্যে আলোর রাজ্যে নিয়ে যায়, রাখে ও একীভূত করে—এই সত্য ঠাকুর সকলের জন্য উন্মোচন করে দিয়েছেন। মন্দিরের মা ও নহবতের মায়ের অদ্বৈত স্বরূপটিও সৃষ্টির নাগালে এনেছেন পরম করুণায়। জীবের চেতনায় মা যদি অধিষ্ঠিতা হন, তাহলে তার মনোভূমিতে শান্ত সমাহিত ভূমি আপনি এসে ধরা দেয়। মনেতেই বদ্ধ মনেতেই মুক্ত, মানুষকে মনের ওপারে পৌঁছে দেওয়ার জন্যই যে তাঁর এবার আসা। তাই শুধু লাটু মহারাজকে উপলক্ষ করে মাতৃসাধনার রহস্য উন্মোচন করেননি, ফলহারিণী কালীপূজার রাত্রে নিজে মাতৃপূজার এক অনন্য-লীলা সংঘটিত করেছেন। বে-নজির সেই ক্ষণে তাঁর কণ্ঠে উচ্চারিত হয়েছিল—“হে বালে, হে সর্বশক্তির অধীশ্বরী মাতঃ ত্রিপুরাসুন্দরী, সিদ্ধিদ্বার উন্মুক্ত কর, ইহার (শ্রীশ্রীমার) শরীরমনকে পবিত্র করিয়া ইহাতে আবির্ভূতা হইয়া সর্বকল্যাণ সাধন কর!”১ এই ত্রিপুরসুন্দরী হলেন সরস্বতী। ঠাকুর তাই স্পষ্ট করেছেন—“ও (শ্রীমা) সারদা-সরস্বতী—জ্ঞান দিতে এসেছে।” এর বাইরে এখানে আরেকটি রহস্য আছে—ঠাকুর সমস্ত সাধনার ধারায় শক্তিসঞ্চার করেছিলেন যত মত তত পথের পথিক সেজে। ভৈরবী ব্রহ্মজ্ঞানী সিদ্ধকৌল, তিনি দিব্যভাবে প্রতিষ্ঠিত-রূপে ঠাকুর-দর্শন করেছিলেন, আর অবতারী শ্রীশ্রীঠাকুরের প্রকাশ ছিল আরো বিস্তৃত। অখণ্ডের ঘরে তঁার সন্তানরাই বিরাজ করেছেন! আরেকদিকে ঠাকুর মাকে পূজার সূত্রে সামনে আনলেন শ্রীকুলের সাধন-সম্পদ। জীবের জীবনে গুরুর অনিবার্য আশ্রয়ের মর্যাদা কতখানি তা শেখানোর জন্য সাধনার বিভিন্ন ধারায় বিভিন্ন জনকে আচার্যের ভূমিকায় অবতীর্ণ করিয়েছেন। তোতাপুরী ছিলেন আচার্য শঙ্কর-পরম্পরার সন্ন্যাসী। আচার্য শঙ্করকে উভয়ভারতী তঁার মঠে শ্রীচক্র স্থাপন করতে বলেন। প্রতিশ্রুতি দেন—ঐ যন্ত্রে বিরাজ করে তিনি ব্রহ্মবিদ্যা রক্ষা করবেন। আজও তাই শৃঙ্গেরী মঠে শ্রীচক্র বিরাজ করছেন। শঙ্করধারার সব মঠে ত্রিপুরসুন্দরী মায়ের নিত্য পূজা হয়। এছাড়া পুরী সম্প্রদায়ের পীঠাধিষ্ঠাত্রী হলেন ত্রিপুরসুন্দরী। তিনি রাজরাজেশ্বরী। শ্রীবিদ্যা। শাস্ত্র বলেন—ত্রিপুর হলো জাগ্রৎ, স্বপ্ন ও সুষুপ্তি। ওঙ্কারের তিনটি পাদ—অ, উ, ম। এই তিনটি ভূমিতে মাতৃশক্তি ক্রিয়াশীলা। এই ত্রিপুর শক্তির কৃপায়...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in