“আমার শরীর পূর্ব্ববৎ। জানেন ত, মধ্যে২ আমার ঘাড়ে ভূত চাপে। সেই ভূত আমাকে এত খাটায়। দেখুন না, এখন রাত্রি প্রায়

“আমার শরীর পূর্ব্ববৎ। জানেন ত, মধ্যে২ আমার ঘাড়ে ভূত চাপে। সেই ভূত আমাকে এত খাটায়। দেখুন না, এখন রাত্রি প্রায় ১২টা, এখনও আর খান ১২ (শত্রুর মুখে ছাই দিয়ে) চিঠি লিখতে হবে। এখানে এখন যোগশিক্ষা দিবার জন্য এসেছি। এই আশ্রম নিবিড় জঙ্গলের মধ্যে এক উপত্যকায়। এই উপত্যকার নাম San Antonio Valley. অতি মনোরম স্থান। এখান হইতে নিকটবর্ত্তী সহর ৫০ মাইল দূরে। চতুর্দ্দিকে কোনও গ্রাম বা বসতি নাই। এখানে মধ্যে২ সমস্ত দিনরাত্রি অনাহারে ২৪ ঘণ্টা ধরিয়া ছাত্রেরা নিজের২ গুহায় যোগ অভ্যাস করে। আজ ৩টী ছাত্রে ঐ রূপ করিতেছে। এই রূপ প্রায়ই কেহ না কেহ প্রত্যহ যোগ অভ্যাস করে।… ইতিশুভাকাঙ্ক্ষীত্রিগুণাতীত” ভগবান শ্রীরামকৃষ্ণদেবের অন্যতম সন্ন্যাসী পার্ষদ স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দজী (সারদা মহারাজ বা সারদাপ্রসন্ন মহারাজ) চিঠিটি লিখছেন ১৯০৩-এর ২৫ নভেম্বর আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়ার অন্তর্গত শান্তি আশ্রম থেকে। পত্রটির প্রাপক কলকাতার বড়বাজারের বাসিন্দা পূর্ণচন্দ্র শেঠ, যিনি স্বামী বিবেকানন্দ এবং শ্রীরামকৃষ্ণদেবের অন্য পার্ষদদের অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ ছিলেন। পত্রাংশটিতে ধরা পড়ে আচার্যরূপী স্বামী ত্রিগুণাতীতের একটি মাধুর্যমণ্ডিত মহিমময় রূপ। প্রসঙ্গত উল্লেখ করা যায়, কালানুক্রমিকভাবে স্বামী ত্রিগুণাতীতের সংক্ষিপ্ত জীবনীপঞ্জি হলো এইরকম : জন্ম—১৮৬৫, শ্রীরামকৃষ্ণ-সমীপে আগমন—১৮৮৪-র ২৭ ডিসেম্বর, তিব্বতের লাদাখ, কৈলাস ও মানস সরোবর দর্শন—১৮৯৫, অক্লান্ত পরিশ্রম এবং সম্পাদনায় উদ্বোধন পত্রিকার আত্মপ্রকাশ—১৮৯৯, আমেরিকার অভিমুখে যাত্রা—১৯০২-এর নভেম্বর, সান ফ্রান্সিস্কোতে পাশ্চাত্যের প্রথম হিন্দু টেম্পলের দ্বারোদ্ঘাটন এবং উৎসর্গীকরণ—১৯০৬ এবং মাত্র ৫০ বছর বয়সে মহাসমাধি-যোগে শ্রীগুরুর পাদপদ্মে মিলন—১৯১৫-র ১০ জানুয়ারি। শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদগণের মধ্যে একমাত্র তাঁরই মহাসমাধি হয়েছিল পাশ্চাত্যদেশে। শুধু তাই নয়, তাঁর পবিত্র পূতাস্থিও শ্রীভগবানের পূর্ণলীলার পুষ্টিসাধনকল্পে আমেরিকার শান্তি আশ্রমে একটি পর্বতের চূড়ায় সমাহিত করা হয়। স্বামী ত্রিগুণাতীতানন্দজীর মতো অবতার-পরিকরগণ সম্পর্কে ভক্তভৈরব গিরিশচন্দ্র বলতেন : “শ্রীরামকৃষ্ণ-পার্ষদগণ কেহই কৈবল্যমুক্তির আকাঙ্ক্ষা করেন না। আকাঙ্ক্ষা করিলেও তাঁহাদের নির্বাণমুক্তি হয় না। কারণ ভগবান যখন পুনরায় দেহধারণ করিয়া অবতীর্ণ হন, সঙ্গে সঙ্গে যুগাবতার-পার্ষদগণকেও আবার দেহধারণ করিয়া আসিতে হয়।… [এই পার্ষদদের নরশরীর ধারণরূপ সামান্য বাসনা] কেবল ভগবানের পুণ্যলীলার পুষ্টিসাধন জন্য।”১ ১৮৮৫-র ১৪ জুলাই বলরাম ভবনে শ্রীশ্রীঠাকুর...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in