এভাবে সকল শ্রুতিই ব্রহ্ম-বিজ্ঞানের নির্দেশক হলেও মন যদি একাগ্র এবং বাসনাশূন্য না হয় তো

[পূর্বানুবৃত্তি : বৈশাখ সংখ্যার পর]।।৫।। এভাবে সকল শ্রুতিই ব্রহ্ম-বিজ্ঞানের নির্দেশক হলেও মন যদি একাগ্র এবং বাসনাশূন্য না হয় তো প্রকৃত ব্রহ্মজ্ঞান অর্থাৎ, প্রতি জীবে ব্রহ্মসাক্ষাৎকার হয় না—এই অভিপ্রায়ে এখন বলা হচ্ছে— ঘৃতমিব পয়সি নিগূঢ়ং ভূতে ভূতে বসতি বিজ্ঞানম্‌।সততং মন্থয়িতব্যং*মনসা মন্থানভূতেন।।২০ অন্বয়—পয়সি (দুধে) নিগূঢ়ং ঘৃতমিব (নবনীতখণ্ডসমূহ যেমন অদৃশ্যভাবে [অবস্থান করে একইভাবে]) বিজ্ঞানম্‌ (বিজ্ঞানস্বরূপ [পরমাত্মা]) ভূতে ভূতে বসতি (প্রতি [পরিদৃশ্যমান] জীবদেহে [অদৃশ্যভাবে] বাস করেন); [সুতরাং মন্থনদণ্ডের দ্বারা দুধকে আলোড়িত করলে যেমন অদৃশ্যভাবে অবস্থিত মাখনখণ্ড দুধের উপরিভাগে ভেসে ওঠে, একইভাবে] মন্থানভূতেন (মন্থনদণ্ডস্বরূপ) মনসা (মনের দ্বারা [অর্থাৎ, বিশুদ্ধ এবং একাগ্রমনে ভগবৎ চিন্তন ও সাধনের দ্বারা]) সততং (সবসময়, নিরন্তর) মন্থয়িতব্যম্‌ ([দুধকে অর্থাৎ অন্তঃকরণকে মন্থন করে যেতে হবে, যাতে মাখন উঠতে থাকে] শ্রীভগবানের [নাম, রূপ, লীলা তথা তত্ত্ব] চিন্তনে মগ্ন হয়ে থাকতে হবে। মগ্ন হয়ে থাকা কর্তব্য। অনুবাদ ও বিবৃতি—দুধের মধ্যে মাখন যেমন অদৃশ্যভাবে অবস্থান করে এবং দুধ মন্থন করলে মাখনের পিণ্ড দুধের উপরিতলে ভেসে ওঠে—একইভাবে বিজ্ঞানস্বরূপ পরমাত্মা প্রতি জীবশরীরে অদৃশ্যভাবে অবস্থান করেন এবং মন্থনদণ্ডস্বরূপ মনের দ্বারা অন্তঃকরণকে মন্থন করলে অর্থাৎ, বিশুদ্ধ ও একাগ্র মনে শ্রীভগবানের (নাম, রূপ, লীলা ও তত্ত্ব) চিন্তন করতে পারলে প্রতি জীবশরীরে অদৃশ্যভাবে অবস্থিত পরমাত্মার সাক্ষাৎকার লাভ করা সম্ভব এবং এটিই মানবজীবনের চরম উদ্দেশ্য। এই মন্ত্রে দুটি প্রধান বক্তব্য মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে—১) দুধ বা দইকে মন্থন করে মাখন তোলার সময় যেমন একাগ্রতা দরকার, ঈশ্বরলাভের সাধনেও সেইরকম পবিত্রতা, একাগ্রতা ও ব্যাকুলতা দরকার; এবং ২) যিনি অন্তরে সা‌ক্ষিরূপে বিরাজ করছেন, তঁাকেই জীবে জীবে দর্শন করার প্রয়াস দরকার। প্রথম বক্তব্যটি সম্পর্কে কঠোপনিষদ-এ একটি অতুলনীয় মন্ত্র আছে— “অরণ্যোর্নিহিতো জাতবেদা গর্ভ ইব সুভৃতো গর্ভিণীভিঃ।দিবে দিব ঈড্যো জাগৃবদ্ভি-র্হবিষ্মদ্ভির্মনুষ্যেভিরগ্নিঃ।।”৪১ অর্থাৎ গর্ভিণী মা যেমন সতর্কভাবে পরম মমতায় গর্ভস্থ সন্তানকে শুদ্ধ অন্ন-পানাদির দ্বারা লালন করেন, উত্তরারণি এবং অধরারণির মধ্যস্থিত অগ্নিকে (অর্থাৎ, ঐ দুই কাষ্ঠখণ্ডের ঘর্ষণে উৎপন্ন যজ্ঞের অগ্নিকে) যাজ্ঞিকগণ যেমন প্রত্যহ সতর্কভাবে জেগে থেকে, নিত্য নিয়মিত সমিধ-আজ্যাদি আহুতি দিয়ে প্রদীপ্ত রাখেন—একইভাবে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in