জাগ্রৎ ([যে-অবস্থায় মানুষ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে বিষয়ের জ্ঞানলাভ করে সেই] জাগরণ অবস্থায়) স্বপ্ন ([যখন ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়ের
[পূর্বানুবৃত্তি : মাঘ সংখ্যার পর]।।৩।। আত্মা জাগ্রৎ, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থার অতীত, আবার তিন অবস্থারই সাক্ষিস্বরূপ— এক এবাত্মা মন্তব্যো জাগ্রৎস্বপ্নসুষুপ্তিষু।স্থানত্রয়ব্যতীতস্য পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে।।১১।। অন্বয়—জাগ্রৎ ([যে-অবস্থায় মানুষ ইন্দ্রিয়ের সাহায্যে বিষয়ের জ্ঞানলাভ করে সেই] জাগরণ অবস্থায়) স্বপ্ন ([যখন ইন্দ্রিয়ের সঙ্গে বিষয়ের সংযোগ থাকে না কিন্তু মনের অবচেতন স্তরে সেই পূর্বসংযোগের স্মৃতি থেকে উদ্ভূত বাসনার দ্বারা বিষয়-উপভোগ হয় সেই] স্বপ্নাবস্থায় [এবং]) সুষুপ্তিষু ([সর্ববিধ জ্ঞানের নিবৃত্তি ঘটে যেখানে সেই] সুষুপ্তি অবস্থায়) আত্মা ([বুদ্ধির সাক্ষী সেই] স্বপ্রকাশ প্রত্যগাত্মাকে) একঃ এব (এক বলে [অর্থাৎ জাগ্রৎ-স্বপ্ন-সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থাতেই অবিকারী বলে]) মন্তব্যঃ (জানবে); স্থানত্রয়ব্যতীতস্য (যিনি জাগ্রৎ, স্বপ্ন, সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থাকে অতিক্রম করেছেন [অর্থাৎ তুরীয় অবস্থা প্রাপ্ত হয়েছেন]) [তাঁর আর] পুনর্জন্ম ন বিদ্যতে (পুনর্জন্ম হয় না [অর্থাৎ তাঁকে আর পুনরায় দেহধারণ করতে হয় না])। অনুবাদ ও বিবৃতি—বুদ্ধির সাক্ষী সেই স্বপ্রকাশ প্রত্যগাত্মাকে (বা তুরীয়কে) জাগ্রৎ, স্বপ্ন এবং সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থাতেই এক এবং অবিকারী বলে জানবে; অর্থাৎ, ঐ তিন অবস্থার সাক্ষিরূপে জানবে। যিনি জাগ্রৎ, স্বপ্ন, সুষুপ্তি—এই তিন অবস্থাকে অতিক্রম করেছেন অর্থাৎ ঐ অবস্থাত্রয়ের সাক্ষী তুরীয় অবস্থাকে প্রাপ্ত হয়েছেন, তাঁর আর পুনর্জন্ম হয় না। কাশীপুর-নিবাসী অদ্বৈতবেদান্তবাদী ভক্ত মহিমাচরণ চক্রবর্তী খুব জ্ঞানবিচার করতেন। দক্ষিণেশ্বরে শ্রীরামকৃষ্ণ মহিমাচরণকে জাগ্রৎ, স্বপ্ন, সুষুপ্তি, তুরীয় ইত্যাদি সম্পর্কে অনুভূতির সারকথাটি এইভাবে বলেছিলেন : “বেদান্ত বিচারে, সংসার মায়াময়,—স্বপ্নের মতো, সব মিথ্যা। যিনি পরমাত্মা, তিনি সাক্ষিস্বরূপ—জাগ্রত, স্বপ্ন, সুষুপ্তি তিন অবস্থারই সাক্ষিস্বরূপ। এসব তোমার ভাবের কথা। স্বপ্নও যত সত্য, জাগরণও সেইরূপ সত্য। একটা গল্প বলি শোন। তোমার ভাবের— “এক দেশে একটি চাষা থাকে। ভারী জ্ঞানী। চাষবাস করে—পরিবার আছে, একটি ছেলে অনেকদিন পরে হয়েছে; নাম হারু। ছেলেটার উপর বাপ-মা দুজনেরই ভালবাসা; কেননা, সবে ধন নীলমণি। চাষাটি ধার্মিক, গাঁয়ের সব লোকেই ভালবাসে। একদিন মাঠে কাজ করছে, এমন সময় একজন এসে খপর দিলে, হারুর কলেরা হয়েছে। চাষাটি বাড়ি গিয়ে অনেক চিকিৎসা করালে কিন্তু ছেলেটি মারা গেল। বাড়ির সকলে শোকে কাতর হল কিন্তু চাষাটির যেন কিছুই হয়...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in