আমরা অমৃতের সন্তান, আমরা অমৃতের অধিকারী। মর্তবাসীর উদ্দেশে স্বামীজী বলেছিলেন : “তোমরা ঈশ্বরের
‘শৃণ্বন্তু বিশ্বে অমৃতস্য পুত্রা।’ আমরা অমৃতের সন্তান, আমরা অমৃতের অধিকারী। মর্তবাসীর উদ্দেশে স্বামীজী বলেছিলেন : “তোমরা ঈশ্বরের সন্তান, অমৃতের অধিকারী—পবিত্র ও পূর্ণ। মর্ত্যভূমির দেবতা তোমরা!” শ্রীরামকৃষ্ণের দেহত্যাগের পর তাঁর ত্যাগী সন্তানরা যখন বরানগর মঠে তাপসজীবন যাপন করছেন, সেসময় স্বামীজী নিত্য ব্রাহ্মমুহূর্তে একটি গান গেয়ে গুরুভ্রাতাদের জাগাতেন—“জাগো জাগো সবে অমৃতের অধিকারী।” পুরাকালের কথা, সমুদ্রমন্থনের পর ধন্বন্তরি যখন অমৃতকুম্ভ নিয়ে সমুদ্র থেকে উঠে এলেন, তখন স্বর্গ ও পাতালের অধিবাসীদের মধ্যে অমৃতের অধিকার নিয়ে বেঁধে গেল তীব্র বিবাদ। মর্তলোকের কথা কেউ ভাবল না। তা বলে মর্তলোক অমৃত থেকে বঞ্চিত হলো না। কিংবদন্তি, ইন্দ্রপুত্র জয়ন্ত যখন সমুদ্রমন্থনে প্রাপ্ত অমৃতকলস নিয়ে পালাচ্ছিল এবং বারো দিন (মর্তলোকের হিসাবে বারো বছর) ধরে অসুররা জয়ন্তের পিছু ধাওয়া করেছিল, তখন অমৃতকলস থেকে অমৃতের কয়েক বিন্দু পড়েছিল মর্তলোকের চারটি স্থানে—প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী এবং নাসিক। কালে কালে এইসব স্থান হয়ে ওঠে অমৃতক্ষেত্র, মহাতীর্থ। এভাবেই মর্তভূমির দেবতা মানুষের জন্যও অমৃত বরাদ্দ রইল। প্রতি বারো বছর অন্তর যখন ফিরে আসে সেই মাহেন্দ্রযোগ, তখন মর্তভূমির রক্ত-মাংসের দেবতারা উপস্থিত হয় পূর্ণকুম্ভের তীরে, অমৃতের অগাধ বারিতে ডুব দিয়ে অন্তরের সুপ্ত দেবত্বের বিকাশযজ্ঞে। বৃহদারণ্যকোপনিষদে (১।৩।২৮) আছে—‘মৃত্যোর্মাঽমৃতং গময়’। অর্থাৎ ‘মৃত্যু হইতে আমাকে অমৃতে লইয়া যান।’ ‘পুনরপি জননং পুনরপি মরণং’ আর নয়। খসিয়ে ফেলতে হবে যত মিছে অনিত্য বন্ধন। গুটিপোকা থেকে প্রজাপতি হয়ে উড়ে যেতে হবে অনন্ত অম্বরে। এই তাগিদ ধর্মপ্রাণ মানুষ বারবার তার অন্তরে অনুভব করেছে। নইলে কীসের টানে দূর-দূরান্ত থেকে শত প্রতিকূলতা উপেক্ষা করে পূর্ণকুম্ভে ডুব দিতে ছুটে যাওয়া? সন্ন্যাসী, গৃহী, বানপ্রস্থী সকলেই চলেছে পূর্ণকুম্ভে পুণ্যস্নানে মুক্তির আকাঙ্ক্ষায়। এই বিশ্বাস, এই শ্রদ্ধা, এই সংকল্প যুগ যুগ ধরে বাঁচিয়ে রেখেছে ভারতের সর্ববৃহৎ মিলনপ্রাঙ্গণ কুম্ভমেলাকে। এমনকী এই মেলা চারটি মুখ্য স্থানকে অতিক্রম করে বিস্তৃত হয়েছে আসমুদ্রহিমাচলে। যারা কুম্ভের কাছে পৌঁছাতে পারেনি, কুম্ভই যেন তাদের কাছে পৌঁছে গেছে অকাতরে অমৃত বিতরণ করতে। অনুসন্ধানে জানা যাচ্ছে—প্রয়াগ, হরিদ্বার, উজ্জয়িনী ও নাসিক ছাড়াও ভারতের...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in