মন্দিরের সব দ্বার রুদ্ধ হয়ে আছে! কেউ নেই মন্দিরের আর ততো কাছে, সকাল সন্ধ্যায় আর দীপ নাহি জ্বলে, শঙ্খধ্বনি জাগে না তো শুধু পলে পলে, অন্ধকার মন্দিরের প্রাঙ্গণটি জুড়ে কিছু কিছু ঘুণপোকা মরে শুধু ঘুরে। কত মানুষেরা জানি আসত এখানে, বাতাস মাতিয়ে যেত প্রার্থনার গানে! সেই ভাঙা মন্দিরের দ্বার খুলে দাও, হারানো সে গানখানি কণ্ঠে তুলে নাও! কত মানুষের কত আবেগের ধ্বনি গানে গানে ভরে যেত বাতাস তখনি! সেই সব প্রাণময় মুহূর্তেরা আজ দূরে চলে গেল নাকি? ভাঙা কারুকাজ কেঁদে কেঁদে ঘুরে ফেরে অন্ধকার সাঁঝে, হৃদয়ের মধ্যে এক প্রদীপটি আছে; তাকে জ্বালো, করো আলো প্রার্থনার গীতি, অন্ধকার দূর হোক্, কেটে যাক […]
রামকৃষ্ণ বসে আছেনদক্ষিণেশ্বরেসন্ধ্যারাতের একটি পাখিঢুকল তাঁর ঘরেবসল পাখি হাঁটুর ওপরঠোঁট ঘষল পা-য়বলল : ‘জানো, এখন কারামেঘ বেড়াতে যায়?’ঠাকুর বলেন : ‘কারা?’ পাখিজানায় : ‘দেব-দেবীরামেঘে এখন দেখতে বেরোয়ছৌ আর গম্ভীরা।’রামকৃষ্ণ বলেন : ‘তুই তোসাঁঝ পেরিয়ে এলিতোকেই দেব মায়ের গাছেরগন্ধরাজ, বেলিসদ্য ওরা ফুটল, যদিপারিস ঠোঁটে ধরেএদের কাউকে উড়িয়ে নে তুইআকাশ উজাড় করেশান্ত গাছের শান্ত ফুলশান্ত ফুটে থাকে—একজন যাক, দেখে আসুকআকাশ-দেবতাকে’উড়ল পাখি, রামকৃষ্ণওচোখ বুঝে তাকানদেখেন একটি ফুল থেকে হয়চাঁদ ঘিরে বাগানবাগানে ফুল তোলা মাত্রদেবদেবীরা ঝরেজ্যোৎস্না, প্রবল জ্যোৎস্না হয়েদক্ষিণেশ্বরে…
ঐ যে বেনিয়াটোলার ট্রাম-লাইনের ধারে
বট আর অশ্বত্থের ঝুরি নেমে আসা বাড়িটাকে দেখছ,
ওখানেই বিপিন থাকত, ওর বাপ-কাকা, ঠাকুরদা,
দুই বোন, আইবুড়ো পিসি, ওর মামাতো ভাই নরেশ,
বছর কয়েক সেও ছিল, বোধহয় নরেশ তখন ডাক্তারি পড়ছে
একে একে সকলেই বাড়িটাকে ছেড়ে গেল ।