দীপ থেকে দীপ জ্বালানো প্রসঙ্গে একটি প্রাচীন কাহিনি আছে। এক ব্রহ্মজ্ঞ গুরু শিষ্যকে বললেন : এই নাও দেশলাই, প্রদীপ জ্বাল। শিষ্য দেশলাইয়ের কাঠি ঘষে আগুন জ্বেলেও সলতেতে লাগিয়ে প্রদীপ জ্বালতে পারল না। অসহায় শিষ্যকে গুরু বললেন : কারণ খুঁজে বের কর, কেন দীপ জ্বলল না। শিষ্য দেখল, প্রদীপে তেলের পরিবর্তে জল রয়েছে। গুরু বললেন : জল ফেলে তেল দাও এবং আবার দীপ জ্বাল। এবারও শিষ্য অকৃতকার্য হলো। গুরু আবারও বললেন : কারণ বের কর। শিষ্য দেখল, প্রদীপের সলতেটা জলভরতি, ঐজন্য দীপ জ্বলছে না। গুরু বললেন : সলতেটা নিংড়ে সব জল বের করে তেলে ডুবিয়ে আবার চেষ্টা কর। এবার শিষ্য গুরুর নির্দেশমতো কাজ করে কৃতকার্য হলো—দীপে আলো […]

দীপ থেকে দীপ জ্বালানো প্রসঙ্গে একটি প্রাচীন কাহিনি আছে। এক ব্রহ্মজ্ঞ গুরু শিষ্যকে বললেন : এই নাও দেশলাই, প্রদীপ জ্বাল। শিষ্য দেশলাইয়ের কাঠি ঘষে আগুন জ্বেলেও সলতেতে লাগিয়ে প্রদীপ জ্বালতে পারল না। অসহায় শিষ্যকে গুরু বললেন : কারণ খুঁজে বের কর, কেন দীপ জ্বলল না। শিষ্য দেখল, প্রদীপে তেলের পরিবর্তে জল রয়েছে। গুরু বললেন : জল ফেলে তেল দাও এবং আবার দীপ জ্বাল। এবারও শিষ্য অকৃতকার্য হলো। গুরু আবারও বললেন : কারণ বের কর। শিষ্য দেখল, প্রদীপের সলতেটা জলভরতি, ঐজন্য দীপ জ্বলছে না। গুরু বললেন : সলতেটা নিংড়ে সব জল বের করে তেলে ডুবিয়ে আবার চেষ্টা কর। এবার শিষ্য গুরুর নির্দেশমতো কাজ করে কৃতকার্য হলো—দীপে আলো জ্বলল। এইভাবে গুরু শিষ্যের হৃদয়ে জ্ঞানদীপ জ্বালিয়ে দেন। তারপর শিষ্য কালে গুরু হয়ে তাঁর শিষ্যের হৃদয়ে উপদেশ ও মন্ত্র দিয়ে জ্ঞানের আলো জ্বালান। এভাবে চলতে থাকে গুরুপরম্পরা। গুরুগীতায় ‘গুরু’ শব্দের ব্যাখ্যা করা হয়েছে—‘গু’ শব্দের অর্থ অন্ধকার এবং ‘রু’ শব্দের অর্থ নিরোধ। যিনি অন্ধকার বা অজ্ঞানকে নিরুদ্ধ বা বিনাশ করেন, তিনিই গুরু। এই জগতে সমস্ত জ্ঞানালোকের উৎস ব্রহ্ম। উপনিষদ বলেন : ‘তস্য ভাষা সর্বমিদং বিভাতি’১—তাঁর অর্থাৎ ব্রহ্মের দীপ্তিতে এই সমুদয় জীবজগৎ বিবিধরূপে প্রকাশ পায়। ঐজন্য শ্রীরামকৃষ্ণ বারবার বলেছেন— সচ্চিদানন্দই একমাত্র গুরু। ব্রহ্ম স্বয়ম্ভু অর্থাৎ নিত্য। তিনি বেদ বা জ্ঞানরাশিরূপে অবস্থান করেন। সুতরাং বেদের উৎপত্তি নেই। এই বেদবিদ্যা বা ব্রহ্মবিদ্যা কীভাবে গুরুপরম্পরাক্রমে আসে তা বৃহদারণ্যকোপনিষদ-এর ‘ঋষিবংশ’-এ দেখানো হয়েছে। আচার্যপরম্পরা হিরণ্যগর্ভের পরে আর নেই। পরব্রহ্মের সাথে অভিন্ন বেদ তাঁর কৃপায় হিরণ্যগর্ভ বা ব্রহ্মার মনে স্বতই প্রকটিত হয়েছিল। ছান্দোগ্যোপনিষদ-এর শেষ অধ্যায়ে বিদ্যা সম্প্রদায়ের উল্লেখ আছে। হিরণ্যগর্ভ এই আত্মজ্ঞান প্রজাপতি কশ্যপকে উপদেশ করেছিলেন। তারপর প্রজাপতি মনুকে এবং মনুু স্বীয় সন্তানগণকে (অর্থাৎ মানবদের) বলেছিলেন। রামকৃষ্ণ সংঘের গুরুপরম্পরা খুঁজতে গিয়ে আমরা দেখি, ব্রহ্মা এই ব্রহ্মবিদ্যা বশিষ্ঠকে উপদেশ দেন। তারপর বশিষ্ঠ থেকে শক্তি—পরাশর—ব্যাস—শুক—গৌড়পাদ—গোবিন্দপাদ—শঙ্করাচার্য পরম্পরাক্রমে এই বিদ্যা লাভ করেন। শঙ্করাচার্য এই বৈদিক ধর্মকে পরম্পরাক্রমে র‌ক্ষা করার জন্য চারটি মঠ—উত্তরে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in