আলস্য হলো তমোগুণের কার্য এবং ‘শ্রমং’ বা চিত্তবিক্ষেপক অতিশ্রম বা ‘over activity’

শ্রীমৎ বিদ্যারণ্য স্বামী [পূর্বানুবৃত্তি : অগ্রহায়ণ সংখ্যার পর]।।৩।। ষষ্ঠ শ্লোক : আলস্য, তন্দ্রা, স্বজাতীয়-বিজাতীয়-স্বগত ভেদরূপ ভ্রান্তি, ক্রোধ, আক্রোশ, ভয় প্রভৃতি ত্যাগের উপায়— আলস্য ত্বরয়া শ্রমং শমধিয়া তন্দ্রিং সমুত্থানতো-ভেদভ্রান্তিমভেদদর্শনবলান্মিথ্যাত্বতঃ সত্যতাম্।মর্মোক্তিং নিজমর্মকর্মকথয়া ক্রোধং স্বসাম্যেক্ষণাৎআক্রোশং কুশলোক্তিতস্ত্যজ মনশ্ছিন্ধ্যপ্রমাদাদ্‌-ভয়ম্।৬ অন্বয়—মনঃ (হে আমার মন!) ত্বরয়া (দ্রুততার [দ্রুত কর্মসম্পাদনের] মধ্য দিয়ে) আলস্য (অলসতার ভাব [ত্যাগ কর]), শমধিয়া (মননিরোধরূপ বৃত্তি অবলম্বন বা ধ্যানের মধ্য দিয়ে) শ্রমং (চিত্তবিক্ষেপক কর্মের পরিশ্রম বা ক্লান্তিকে অর্থাৎ কায়িক বা মানসিকভাবে অতিশ্রমের মনোভাবকে [জয় কর]), সমুত্থানতঃ ([সদা] সতর্ক থেকে) তন্দ্রিং (তন্দ্রাকে [জয় কর]), অভেদ-দর্শন-বলাৎ (অভেদ-আত্মজ্ঞান [অর্থাৎ জীবাত্মা পরমাত্মাই—এই জ্ঞান] অবলম্বনে) ভেদভ্রান্তিং (ভেদদর্শনরূপ ভ্রান্তি [পরিত্যাগ করবে]), মিথ্যাত্বতঃ (জগৎ বস্তুত মিথ্যাই—এই [স্থির] বুদ্ধি অবলম্বনে) সত্যতাং ([দৃশ্যমান জগতের] সত্যতাকে [অস্বীকার করবে]), নিজ-মর্ম-কর্ম-কথয়া (নিজ দোষ বা অশুভ কর্ম বা সংস্কার বা দুর্বলতার আলোচনা বা স্মরণের মধ্য দিয়ে) মর্মোক্তিং (অপরের দোষত্রুটি ও দুর্বলতা সম্পর্কিত আলোচনার অভ্যাসকে [পরিত্যাগ করবে]), স্ব-সাম্য-ঈক্ষণাৎ (সর্বত্র এক [শান্তম্ শিবম্ অদ্বৈতম্] আত্মারই অস্তিত্ব দর্শনের মধ্য দিয়ে) ক্রোধং (ক্রোধকে [জয় করবে]), কুশল-উক্তিতঃ (মধুর ও হিতকারী বাক্য কথনের মধ্য দিয়ে) আক্রোশং ([অপরের প্রতি] আক্রোশের ভাবকে) ত্যজ (পরিত্যাগ করবে)। ভয়ম্ (শত্রুভয়, লোকলজ্জার ভয়, মৃত্যুভয় তথা সর্বপ্রকার ভয়কে) অপ্রমাদাৎ ([শাস্ত্র এবং গুরু-নির্দেশিত সাধন বিষয়ে] অপ্রমত্ত [প্রমাদশূন্য] হয়ে) ছিন্দি (ছেদ করবে বা দূর করবে)। অনুবাদ ও তাৎপর্য-বিবৃতি—হে মন! (চিন্তা এবং কর্মসম্পাদনের ক্ষেত্রে) দ্রুততা অবলম্বনের মধ্য দিয়ে আলস্য ত্যাগ করবে, মননিরোধরূপ বৃত্তি অবলম্বনে ধ্যানের মাধ্যমে চিত্তবিক্ষেপক কর্মের ক্লান্তি বা পরিশ্রমকে দূর করবে, সাবধানতার সঙ্গে সদা সচেতন থেকে তন্দ্রাকে জয় করবে। আত্মজ্ঞানে বলীয়ান হয়ে সর্বপ্রকার ভেদ-দর্শনরূপ ভ্রান্তি পরিত্যাগ করবে, জগৎ বস্তুত মিথ্যাই—এই স্থিরবুদ্ধি অবলম্বনে আপাত সুখকর দৃশ্যমান জগতের সত্যতাকে অস্বীকার করবে। নিজ দোষ বা অশুভ দুর্বলতার কথা স্মরণ করে অপরের দোষত্রুটি ও দুর্বলতা নিয়ে আলোচনা ও চিন্তা-ভাবনার অভ্যাসকে নিঃশেষে পরিত্যাগ করবে, সর্বত্র একই আত্মা (বা ঈশ্বরকে) দর্শন করে ক্রোধকে জয় করবে (অর্থাৎ সবই ঈশ্বর হওয়ায় কেউই ক্রোধের পাত্র নয়), মধুর ও হিতকারী বাক্যের মধ্য দিয়ে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in