জয়রামবাটী শ্রীরামকৃষ্ণের শ্বশুরালয়, শ্রীমায়ের জন্মভূমি। জয়রামবাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের

জয়রামবাটী শ্রীরামকৃষ্ণের শ্বশুরালয়, শ্রীমায়ের জন্মভূমি। জয়রামবাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের বহুবার পদার্পণ ঘটেছে। স্বামী গম্ভীরানন্দ শ্রীমা সারদা দেবী গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন : “ঠাকুর জয়রামবাটীতেও বহুবার গিয়াছিলেন। কামারপুকুরে গেলেই তাঁহাকে শিহড়ে লইয়া যাওয়া হইত। ঐ সময় পথে জয়রামবাটীতে কোন কোন বারে তিনি আট-দশ দিনও থাকিয়া যাইতেন।”১ অথচ শ্রীরামকৃষ্ণের ও শ্রীমায়ের জীবনীগ্রন্থে কোথাও শ্রীরামকৃষ্ণের জয়রামবাটীতে অবস্থান বিষয়ে বিস্তৃত বিবরণ নেই। ঐ গ্রামের জনজীবনে তাঁর প্রভাব থাকা সংগত। এই নিবন্ধ সেই অস্পষ্ট ইতিহাসকে উপস্থাপনের প্রয়াস। শ্রীরামকৃষ্ণের জয়রামবাটীতে পদার্পণের প্রথম দুবারের সময়কাল জানা থাকলেও পরবর্তিকালে কামারপুকুরে আরো সাতবার (১৮৬৭, ১৮৭০, ১৮৭৬-এ দুবার২, ১৮৭৭, ১৮৭৮ এবং ১৮৮০ সালে) অবস্থানের কোন কোন সময়ে তিনি জয়রামবাটীতে এসেছিলেন নিশ্চিতভাবে তা জানার উপায় নেই। সেই কারণে প্রথম দুবার অবস্থানকােলর সংশ্লিষ্ট ঘটনাগুলিই কেবল উপস্থাপন করা সম্ভব। জয়রামবাটীতে শ্রীরামকৃষ্ণের প্রথম পদার্পণ ১৮৫৯ সালে (১২৬৬ বঙ্গাব্দে) শ্রীমা সারদাদেবীর সঙ্গে বিবাহ উপল‌ক্ষে। স্বামী গম্ভীরানন্দের মতে, এই বিবাহ হয়েছিল ১২৬৬ বঙ্গাব্দের বৈশাখের শেষভাগে। নিয়মমাফিক বরযাত্রী-সহ শ্রীরামকৃষ্ণ উপস্থিত হয়েছিলেন। বিবাহকালে তাঁকে বেষ্টন করে যে প্রজ্বলিত সাতাশকাঠি নিয়ে মহিলারা প্রদ‌ক্ষিণ করছিলেন, অসাবধানতাবশত তাঁর হাতে বেষ্টিত সূত্রটিতে আগুনের ফুলকি এসে লাগে। পুঁথিকার বিষয়টিকে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই বিবেচনা করেছেন— “জ্বালিয়া সাতাশ কাঠি বিবাহের কালে।ঘুরে যবে বরে ঘেরে রমণীসকলে।।জ্বালা কাঠি লাগিয়া কি হৈল শুন কথা।পুড়ে গেল শ্রীপ্রভুর মাঙ্গলিক সুতা।।হরিদ্রা-মাখান সুতা ছিল বাঁধা হাতে।…চিরশক্তি আপনার করিয়া গ্রহণ।ছলে পুড়াইয়া দিলা অবিদ্যা বন্ধন।।”৩ বিবাহ অনুষ্ঠান শেষ হলে বরযাত্রী ও আমন্ত্রিতদের পরিতোষ সহকারে ভোজন করানো হয়েছিল বলে জানিয়েছেন পুঁথিকার। তিনি আরো জানিয়েছেন, বাসরঘরে রমণীগণ নবজামাতাকে নিয়ে নানা রঙ্গরসে মত্ত হয়েছিলেন। শ্রীরামকৃষ্ণ তাঁর আরাধ্যা মাকে স্মরণমাত্র তাঁর দেহে ভাবাবেশ হয়; তিনি এমন সুমধুর কণ্ঠে ভক্তিগীতি গাইতে থাকেন যে, যারা ভোজন করছিল তারাও উৎকর্ণ হয়ে সংগীত শোনেন। বিবাহবাসরে চপলমতি তরুণীরা নির্বাক এবং হতভম্ব হয়ে যায়। পুঁথিকারের ভাষায়— “নানাবিধ রমণীর নানারঙ্গ হেরে।রঙ্গময়ী মার লীলা জাগিল অন্তরে।।মা মা বলি হৈলা প্রভু ভাবাবেশান্বিত।কোকিল জিনিয়া কণ্ঠে ধরিলেন গীত।।…পাতে হাত মুখে ভাত খেতে যারা ছিল।পুতুলের...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in