মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিলাম—কাল হইতে ভোরে উঠিব, এত সংখ্যক জপ করিব, এতক্ষণ
মনে মনে প্রতিজ্ঞা করিলাম—কাল হইতে ভোরে উঠিব, এত সংখ্যক জপ করিব, এতক্ষণ পাঠ করিব, শরীরচর্চা করিব। শুরুও করিলাম। কিন্তু কিছুদিন যাইতে না যাইতেই মন বারংবার বলিতে লাগিল—এইসবের কী প্রয়োজন? পরে উঠিয়াও তো কাজ সারিয়া লওয়া যায়, শরীররক্ষায় নিদ্রার যে বড় প্রয়োজন। ব্যস! মনের এসকল যুক্তির সম্মুখে স্থির থাকিতে পারিলাম না। শুরু হইল আবার পূর্ববৎ জীবনযাপন! এমন অনেক ভাল অভ্যাস, আমরা জানি, যাহা আখেরে আমাদের জীবনে সুদূরপ্রসারী শুভ ফল লইয়া আসে, শুরু করিয়াও তাহা আমরা বন্ধ করিয়া দিই; কারণ—আমরা সর্বদাই সহজ রাস্তা খুঁজিয়া থাকি। স্বল্পশ্রমে যাহাতে কাজ হাসিল হয়, সাফল্য আসে—এমন পথই আমরা পছন্দ করি। মনোবিজ্ঞানে ‘কগনিটিভ মাইজার থিয়োরি’ আমাদের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রবণতার কথা বলিয়াছে। এই তত্ত্ব অনুসারে মানব-মন অপেক্ষাকৃত সহজ ও অল্পশ্রমসাধ্য উপায়ে চিন্তা করিতে আগ্রহী হয়। মানুষ তাহার জ্ঞান ও বুদ্ধিমত্তাকে বেশি ব্যবহার করিতে চাহে না, কঠোর প্রচেষ্টার বিষয়ে সে কৃপণ। ইহাতে লাভ কিছুই হয় না। নিজেকে বিকশিত করিবার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু তাহার নিকটে রহিলেও, শুধুমাত্র পরিশ্রম করিবার অনীহায় সে দীর্ঘমেয়াদি সাফল্যলাভ করিতে ব্যর্থ হয়। সাফল্যময় জীবনলাভ করিতে হইলে, ভাল অভ্যাস তৈরি করিতে হইলে কঠিন জীবনচর্যাকে বাছিয়া লইতেই হইবে। বরণ করিতে হইবে প্রাথমিক কষ্টকে। শ্রীশ্রীমায়ের জীবন হইতে এবিষয়ে আমরা শিক্ষা লইতে পারি। বিভিন্ন প্রসঙ্গে বলা তাঁহার চারখানি উপদেশের কথা স্মরণ করি। ক) ভক্তেরা পত্রে প্রায় লিখিয়া থাকে—তাহাদের মন স্থির হয় না। মা শুনিয়া বেশ উত্তেজিত হইয়া কহিলেন : “রোজ পনর-বিশ হাজার করে জপ করতে পারে, তাহলে হয়। আমি দেখেছি, কৃষ্ণলাল, বাস্তবিক হয়। আগে করুক; না হয়, তখন বলবে।” রোজ পনেরো-বিশ হাজার জপ করিলে মন স্থির হইবে—মায়ের এই আশ্বাসবাক্যের প্রতি সহজেই আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ হইবে। কিন্তু আরো একটি বিষয় লক্ষ্য করিবার মতো—‘আমি দেখেছি’। অর্থাৎ যে-অভ্যাসটিকে আমাদের কঠিন মনে হইতেছে, মা তাহা নিজে করিয়াছেন। তিনি মনে করেন—আমাদের পক্ষেও ইহা সম্ভব। খ) মা বলিতেছেন : “মন্দ কাজে মন সর্বদা যায়। ভাল কাজ করতে চাইলে...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
