জীবনের পথে চলতে চলতে যখন মানুষ অনুকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়, তখন
জীবনের পথে চলতে চলতে যখন মানুষ অনুকূল পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যায়, তখন তার মনে হয় সে মুক্ত. সে তার ইচ্ছামতো নিজের জীবনযাপন করতে পারে। কিন্তু যখন পরিস্থিতি প্রতিকূল হয়, যখন হাজার চেষ্টা সত্ত্বেও জীবনকে নিজের ইচ্ছামতো যাপন করা যায় না, সেই ভীষণ কষ্টকর পরিস্থিতিতে মনে হয়—আমি অসহায়! আমি মুক্ত নই! আমি বদ্ধ! আমি চাইলেই জীবন আমার ইচ্ছামতো চলে না। তখন মন ব্যাকুল হয়ে ওঠে এই পরাধীন অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে। শরীর ও মনের যে-সংমিশ্রণকে ‘আমি’ বলে অনুভব হয়, সেই কি আমি? আমি কি সত্যি বদ্ধ? অসহায়? নাকি মুক্তির, স্বাধীনতার অস্তিত্ব আছে?—এই প্রশ্নের উত্তর মানুষ চিরকাল খুঁজেছে জীবনের কঠোর, অসহায় মুহূর্তগুলিতে। এই প্রশ্নের উত্তর তাঁরাই দিতে সক্ষম, যাঁরা জীবনের রহস্য জেনেছেন। প্রতি যুগে এমন মহাপুরুষগণের আবির্ভাব হয়েছে যাঁরা শুধুমাত্র বুদ্ধি দিয়ে নয়, কঠিন সাধনার মধ্য দিয়ে সত্যকে প্রত্যক্ষ করেছেন এবং জগতের সামনে সেই উপলব্ধ সত্যকে মেলে ধরেছেন। এমনই এক আলোকস্তম্ভ হয়ে আবির্ভূত হয়েছিলেন শ্রীরামকৃষ্ণ—যাঁর কাছে জীবনজিজ্ঞাসা নিয়ে হাজির হয়েছে অগণিত মানুষ আর সেই অদ্ভুত পুরুষ তাঁর অননুকরণীয় কথাগুলি দিয়ে সেই জিজ্ঞাসু মানুষগুলির কাছে অতি সরলভাবে প্রকাশ করেছেন সেইসব আধ্যাত্মিক সত্য, যেগুলি অনুভব করা অতি কঠিন সাধন-সাপেক্ষ। কথামৃত-এর বর্ণনায় আমরা দেখতে পাই, ২৭ অক্টোবর ১৮৮২ ব্রাহ্মভক্তদের সাথে কথাপ্রসঙ্গে ঠাকুর বলছেন : “মন নিয়ে কথা। মনেতেই বদ্ধ, মনেতেই মুক্ত।”১ ঠাকুর এই কথার মধ্য দিয়ে এক অতি গভীর সত্য প্রকাশ করলেন। বন্ধন-মুক্তির সকল রহস্য সূত্রাকারে এই ছোট্ট কথার মধ্য দিয়ে প্রকাশ পেল—মানুষের বন্ধন ও মুক্তির কারণ হলো রহস্যময় মন। ঠাকুরের ঐ মহাবাক্যটিই আমাদের অনুধ্যানের বিষয়। মনের কিরূপ অবস্থা মুক্তির কারণ, কিরূপ অবস্থা বন্ধনের কারণ—সেটিই মনন করার প্রয়াস করা হয়েছে রামকৃষ্ণ-বিবেকানন্দ সাহিত্য এবং প্রাচীন শাস্ত্রের দৃষ্টিতে। মন ও দৃঢ় অঙ্গীকার কথামৃত-এর পাতায় বেশ কয়েকবার দেখতে পাই, ঠাকুর বন্ধন-মুক্তির কথা বলতে গিয়ে মনকেই এর কারণ বলে নির্দেশ করেছেন। নিজের সম্পর্কে যেমনটা ভাবব বা বিশ্বাস করব, আমরা তেমনই...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
