বেদান্ত সোসাইটি অব সেন্ট লুইস কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (মিনিস্টার) স্বামী সৎপ্রকাশানন্দ খুব পণ্ডিত
বেদান্ত সোসাইটি অব সেন্ট লুইস কেন্দ্রের অধ্যক্ষ (মিনিস্টার) স্বামী সৎপ্রকাশানন্দ খুব পণ্ডিত সাধু ছিলেন। শ্রীমা এবং স্বামীজী, রাজা মহারাজ প্রমুখ ঠাকুরের শিষ্যদের সঙ্গ করেছেন। তিনি চার/পাঁচ বছর শয্যাশায়ী ছিলেন। সেই অবস্থাতেও তিনি সকাল-সন্ধ্যায় গুরু স্বামী ব্রহ্মানন্দজীর প্রদত্ত জপমালা নিয়ে জপ করতেন। সন্ধ্যায় বিছানায় বসে টেপরেকর্ডে ঠাকুরের আরাত্রিক ভজন হাততালি দিয়ে শুনতেন। আমি দেখা করতে গেলে সংক্ষেপে কথা শেষ করে বলতেন : “Chetanananda, I shall not detain you, আমি এখন জপ করব।” বালিশের নিচে তাঁর জপমালার কৌটা থাকত। কথায় বলে, মালাকে উপবাসী রাখতে নেই। তাই নিত্য-নিয়মিত জপ করে যেতেন। বৃদ্ধবয়সে ব্যাধি আসে, কিন্তু এজন্য তাঁর কোনো আপশোস-হাহুতাশ ছিল না। দেহান্তের কয়েক সপ্তাহ আগে আমাকে ডেকে বলেন : “চেতনানন্দ, জীবন্মুক্তের কীভাবে মৃত্যু হয়—বেদান্তাদি শাস্ত্রের সেই প্যাসেজগুলি আমাকে শোনাতে পার?” উপনিষদ, গীতা, বিবেকচূড়ামণি, ব্রহ্মসূত্র প্রভৃতি গ্রন্থে জ্ঞানীর দেহত্যাগের বর্ণনাগুলি তিনি খাটে বসে একমনে শুনতেন। কোনো কোনো শাস্ত্রজ্ঞ সাধু আবার শেষজীবনে গ্রন্থ ছেড়ে অনুভূতির রাজ্যে বাস করতেন। বিবেকচূড়ামণির দুটি শ্লোক স্বামী ধীরেশানন্দ প্রায়ই বলতেন : “লোকানুবর্তনং ত্যক্ত্বা ত্যক্ত্বা দেহানুবর্তনম্।/ শাস্ত্রানুবর্তনং ত্যক্ত্বা স্বাধ্যাসাপনয়ং কুরু।।”১—নামযশের বাসনা, দেহ-সুখের বাসনা, পণ্ডিত হওয়ার বাসনা ত্যাগ করে অনাত্মাতে আত্মবুদ্ধিরূপ অধ্যাস দূর কর। অপর শ্লোকটিও গুরুত্বপূর্ণ। শাস্ত্র সাধুকে স্মরণ করিয়ে দিচ্ছেন—“প্রারব্ধং পুষ্যতি বপুরিতি নিশ্চিত্য নিশ্চলঃ।/ ধৈর্যমালম্ব্য যত্নেন স্বাধ্যাসাপনয়ং কুরু।।”২ অর্থাৎ, প্রারব্ধ কর্মই শরীরকে রক্ষা করে—এটি নিশ্চয় করে দেহচিন্তা ছেড়ে ধৈর্য ধরে যত্নের সঙ্গে অধ্যাস দূর কর। ১৯৯৭ সালে কনখলে স্বামী ধীরেশানন্দ বলেছিলেন : “এখন শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ-পুঁথি পড়ছি আর স্মরণ-মনন নিয়ে আছি। শাস্ত্রাদি আর ভাল লাগে না।” এই প্রসঙ্গে একটি ঘটনার উল্লেখ করা যাক। স্বামী যতীশ্বরানন্দ বলেছিলেন : “কাশীতে কেউ এসে হরি মহারাজকে বললেন যে, স্বামীজী সাধুদের জন্য যে-কর্মধারা প্রবর্তন করেছেন, শাস্ত্রে তার সমর্থন নেই—একথা মঠের পণ্ডিতমশাই বলেছেন। হরি মহারাজ (তর্জনী উঠিয়ে) বললেন, ‘মঠের পণ্ডিতমশাইকে বলবে যে, যেদিন থেকে স্বামীজী ও-কথা বলেছেন সেদিন থেকে নতুন শাস্ত্র তৈরি হয়েছে।’”৩ স্বামী ওঁকারানন্দ জীবনপ্রান্তে অনুভূতির রাজ্যে বাস করতেন। জনৈক ভক্তকে তিনি...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
