যাবতীয় সুখই ক্ষণিক এবং শেষপর্যন্ত দুঃখেই তাদের পরিসমাপ্তি—একথাটি বেশ
[পূর্বানুবৃত্তি : কার্তিক সংখ্যার পর]।।২।। তৃতীয় শ্লোক : ইন্দ্রিয়ানুরাগ, কটুভাষা, দুঃসঙ্গ, বৃথালাপ, গর্ব ও পরনিন্দাপ্রবণতা ত্যাগের উপায়— জিহ্বোপস্থসুখভ্রমং ত্যজ মনঃ পর্যন্তদুঃখেক্ষণাৎপারুষ্যং মৃদুভাষণাত্ত্যজ বৃথালাপশ্রমং মৌনতঃ।দুস্সঙ্গং ত্যজ সাধুসঙ্গমবলাৎ গর্বং তু ভঙ্গেক্ষণাৎনিন্দাদুঃখমনিন্দ্যদেবমুনির্ভিনিন্দাকথাসংস্কৃতে*।৩ [] অন্বয়—মনঃ (হে [আমার] মন) পর্যন্ত-দুঃখেক্ষণাৎ (সব [সুখই] ক্ষণিকের জন্য এবং শেষপর্যন্ত অর্থাৎ পরিণামে [অত্যন্ত] দুঃখদায়ক—এভাবে দেখে [বা বিচার করে]) জিহ্বা-উপস্থ-সুখ-ভ্রমং (জিহ্বা ও উপস্থ-জাত সুখরূপ ভ্রান্তি) ত্যজ (নিঃশেষে ত্যাগ কর); পারুষ্যং (কটুভাষণকে) মৃদু-ভাষণাৎ (মৃদু মধুরালাপের দ্বারা [বর্জন কর]); বৃথা-আলাপ-শ্রমং (অর্থহীন বৃথাবাক্যব্যয়জনিত শ্রান্তিকে) মৌনতঃ ([বাচিক ও মানসিক উভয় প্রকার] মৌনতার দ্বারা পরিত্যাগ কর]); দুঃসঙ্গং (দুষ্টপুরুষের সঙ্গজনিত কুসংস্কার) সাধু-সঙ্গম-বলাৎ (সাধুসঙ্গের পুণ্যের দ্বারা [পরিহার কর]); গর্বং (বিদ্যা, রূপ ও ধনাদির দম্ভকে বিদ্যা-রূপ ধনাদির মানদণ্ডেই পরাজয়ের সম্ভাবনার কথা চিন্তার দ্বারা [পরিত্যাগ কর]); নিন্দা-দুঃখং ([নিজের] নিন্দাশ্রবণজনিত দুঃখকে) অনিন্দ্য-দেব-মুনিভিঃ (অনিন্দ্যচরিত্র দেবতা-মুনিদের [পর্যন্ত]) নিন্দা-কথা-সংস্কৃতেঃ ([অহেতুক] নিন্দা করা হয়—এই কথা স্মরণ করে [নিজ নিন্দাকথা শ্রবণজনিত দুঃখ পরিত্যাগ করবে])। অনুবাদ ও তাৎপর্য-বিবৃতি—হে আমার মন! যাবতীয় সুখই ক্ষণিক এবং শেষপর্যন্ত দুঃখেই তাদের পরিসমাপ্তি—একথাটি বেশ ভালভাবে বিচার করে বুঝে, জিহ্বা ও উপস্থ-জাত সুখরূপ ভ্রান্তি বা আসক্তিকে নিঃশেষে পরিত্যাগ করতে হবে। কর্কশ বাক্যপ্রয়োগের প্রবণতাকে সুমিষ্ট বচনের অভ্যাস দ্বারা, বৃথাবাক্যব্যয়জনিত শ্রান্তিকে বাচিক ও মানসিক মৌনতার দ্বারা, দুষ্টলোকের সঙ্গজনিত কুসংস্কারকে সাধুসঙ্গের ফলে অর্জিত পুণ্যের দ্বারা, বিদ্যা রূপ বা বিত্তের গর্বকে প্রতিপক্ষের কাছে বিদ্যা, রূপ ও বিত্তের মানদণ্ডেই পিছিয়ে পড়ার সম্ভাবনার কথা চিন্তার দ্বারা এবং নিন্দাশ্রবণজনিত দুঃখকে অনিন্দ্যচরিত্র দেবতা-মুনি-ঋষিদের পর্যন্ত অকারণে নিন্দা করা হয়—একথা স্মরণের দ্বারা পরিত্যাগ করবে। জিহ্বা ও উপস্থ সংযম প্রসঙ্গে স্বামী তুরীয়ানন্দজী লিখেছিলেন : “রামচন্দ্র যখন দাক্ষিণাত্য ভ্রমণ কচ্ছিলেন, এক সময় চাতুর্মাস্য কাটাবার জন্য এক পর্বতে স্থান নেন। সেখানে এক শিবালয় মাত্র ছিল। রাম সেই শিবের অনুমতির জন্য লক্ষ্মণকে তাঁর কাছে পাঠান। লক্ষ্মণ শিবালয়ে গিয়ে রামের আবেদন জানালেন। শিব কিছু না বলে অন্য মূর্তি ধারণ করলেন। মূর্তিটি নৃত্য-মূর্তি—নিজ লিঙ্গ মুখে দিয়ে নৃত্য করছেন! লক্ষ্মণ রামচন্দ্রকে নিবেদন করায় তিনি আনন্দ প্রকাশ করলেন। লক্ষ্মণ জিজ্ঞাসা করলেন, প্রভু, কিছু...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
