সালটা সম্ভবত ১৯৭৯, ২৬ মার্চ। আমাদের যাওয়ার দিন অরুণাচলে। আমি ও আমার বন্ধু

প্রস্তাবনা সালটা সম্ভবত ১৯৭৯, ২৬ মার্চ। আমাদের যাওয়ার দিন অরুণাচলে। আমি ও আমার বন্ধু সমীর মহারাজ। পরে ওঁর নাম হয় স্বামী দিব্যরূপানন্দ। খুব ভদ্র, সজ্জন, সংগীতে পারদর্শী একজন সাধু; ও ছিল কেশব সেনের বংশের ছেলে। কথাশিল্পী আশাপূর্ণা দেবী ছিলেন সম্পর্কে তাঁর দিদিমা। জনতা এক্সপ্রেসে টিকিট হয়েছে। তৃতীয় শ্রেণিতে—কাঠের স্লিপার দিয়ে তৈরি আসন। ২.৩৫ মিনিটে হাওড়া ছেড়ে যাবে নিউ বঙ্গাইগঁাও—অসম ও পশ্চিমবঙ্গের সীমারেখা বলা যেতে পারে। মধ্যাহ্ন-প্রসাদ গ্রহণ করে রওনা দেব। আহার করছি—এমন সময় মঠ অফিসের কর্মী গঙ্গা খাবার পঙ্গতে এসে আমাকে বললেন : “ভাইস প্রেসিডেন্ট মহারাজ আপনার জন্য অপেক্ষা করছেন। আপনার সাথে দেখা করে তবেই তিনি আহার গ্রহণ করবেন। আপনি খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে মহারাজের কাছে যাবেন।” ভাইস প্রেসিডেন্ট মানে আমার পরমারাধ্য গুরুদেব স্বামী নির্বাণানন্দ। গিয়ে মহারাজকে ভূমিষ্ঠ প্রণাম করতেই তিনি বললেন : “No human being has posted you. Thakur has posted you!” অবাক হয়ে গেলাম! যঁার তিথি-নক্ষত্র মনে থাকে না, তিনি কেমন করে আলঙে আমার পোস্টিং হয়েছে মনে রাখলেন! তিনি আমাকে খুব আশীর্বাদ করলেন। সেগুলো অত্যন্ত ব্যক্তিগত, তাই এখানে উল্লেখ করে নিজেকে বিব্রত করতে চাই না। আমাকে দু-হাত ভরে দিলেন নিজের ব্যবহৃত উলের গরম জামা, সোয়েটার, শাল ইত্যাদি। তাঁর এই ভালবাসায় চোখ থেকে জল বেরিয়ে এসেছিল। উনি বললেন : “তুমি কাঁদছ কেন?” বললাম : “মহারাজ! আমি বহুদূর চলে যাচ্ছি। আপনার বয়স হয়েছে, শরীর ভাল নয়—জানি না আর দেখা হবে কি না।” মহারাজ বললেন : “If Thakur wills, we must!” ব্রহ্মজ্ঞ পুরুষ, মহাপুরুষের কথা ব্যর্থ হওয়ার নয়। মহারাজ যেদিন মহাসমাধিতে প্রবেশ করলেন, সেদিনই আমি এলাম মহারাজের কাছে। দেখা হলো। তিনি আশীর্বাদ করলেন হাত তুলে। প্রভুর ইচ্ছায় দর্শন হলো। মহাসমাধিতে শায়িত খাটটি বহন করারও সৌভাগ্য হয়েছিল মহারাজেরই আশীর্বাদে। দুইভূমিকা এবার বিষয়ের মূল স্রোতে ফিরে আসি। আমাদের ট্রেন যখন নিউ বঙ্গাইগাঁও স্টেশনে পৌঁছেছে, তার আগেই অরুণাচল এক্সপ্রেস চলে গেছে। আবার আগামিকাল দুপুরে ট্রেন। অরুণাচলে যাওয়ার একটিই...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in