আমার বাল্যকাল নবদ্বীপ, শান্তিপুর, কাশী, বৃন্দাবন, গয়া, বৈদ্যনাথ, অযোধ্যা প্রভৃতি
আমার বাল্যকাল নবদ্বীপ, শান্তিপুর, কাশী, বৃন্দাবন, গয়া, বৈদ্যনাথ, অযোধ্যা প্রভৃতি তীর্থে অতিবাহিত হয়েছে; তার মধ্যে বৃন্দাবনেই বেশি। ১৯০৯ সালে আমার জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা যতীন্দ্রকুমার গুপ্তের শিলঙের বাড়িতে থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষা দিই। ১৯১৩ সালে গয়া হয়ে কাশীতে মহেশচন্দ্র ভট্টাচার্যের বাড়িতে এক আত্মীয়ার কাছে যাই। একদিন গঙ্গাস্নান করে উঠে দেখি, একজন গৈরিক বসনপরিহিত সন্ন্যাসী আমার দিকে একদৃষ্টে তাকিয়ে আছেন। উনি আমার বাল্যবন্ধু ও সহপাঠী দেবেন্দ্র গুপ্ত। তিনি সরকারি চাকরি ছেড়ে শ্রীশ্রীমার নিকট দীক্ষাগ্রহণ করেছেন এবং সন্ন্যাসী হয়ে কাশী অদ্বৈতাশ্রমে রয়েছেন। আমাকে বললেন : “এবার আমাদের আশ্রমে সমারোহে দুর্গাপূজা হচ্ছে, রাখাল মহারাজ ও লাটু মহারাজ সেখানে আছেন। সেখানে গেলে খুব আনন্দ হবে।” তখন তাঁর সঙ্গে অদ্বৈতাশ্রমে গিয়ে শ্রীশ্রীদুর্গার বিরাট প্রতিমা দর্শন ও প্রণাম করে রাখাল মহারাজকে দর্শন করতে যাই। তিনি অর্ধশায়িত অবস্থায় ছিলেন। আমরা গিয়ে প্রণাম করলে তিনি উঠে বসলেন এবং আমার পরিচয় জেনে খুব আদর করে বসালেন। “ভাঁড়ারে কে আছ?” বলে তিনি একজন ব্রহ্মচারীকে ডেকে আমায় খাবার এনে দিতে বললেন। পূজার কদিন ওখানে প্রসাদ পেতে ও থাকতেও বললেন। বেলা এগারোটার সময় আমাকে বললেন : “দেখ, মার ভোগ হতে ও প্রসাদ পেতে বেলা একটা-দেড়টা হয়ে যাবে। এতে তোমার কষ্ট হতে পারে। তুমি সেবাশ্রমে যা রান্না হয়েছে তা কিছু খেয়ে নাও।” আমি বললাম : “না মহারাজ, আমার কষ্ট হবে না, একসঙ্গে প্রসাদ পাব।” সেবছর আমেরিকা থেকে স্বামীজীর দুজন সাহেব ভক্ত এসেছিলেন, তাঁদের ভাবভক্তি দেখে আমি আশ্চর্য হই। দুপুরে প্রসাদ পাওয়ার সময় রাখাল মহারাজ, লাটু মহারাজ সকলে আমাকে খেতে বসার জন্য ডাকতে লাগলেন কিন্তু তখনি যেতে পারলাম না। কারণ, জীবনে কখনো সন্ন্যাসী, ভট্টাচার্য বা সাহেবের সঙ্গে খাইনি। আমার অবস্থা বুঝে লাটু মহারাজ তাড়াতাড়ি উঠে এসে আমাকে ধরে একজন সাহেব ও ভট্টাচার্যের মাঝখানে বসিয়ে দিলেন। কাশীতে যে-কয়দিন ছিলাম, রাখাল মহারাজ আমাকে কত স্নেহ-আদর করেছেন তা বলে শেষ করা যায় না। তাঁর পুণ্য স্পর্শ ও আদরই আমাকে শ্রীশ্রীঠাকুরের বিষয় জানতে ও...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹120/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
