আমাদের সময়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সংস্কৃত বাধ্যতামূলক ছিল। পণ্ডিত মহাশয়ের

সাধুজীবনের প্রারম্ভে আমাকে একজন প্রাজ্ঞ সাধু বলেছিলেন : “ওহে, ‘জ্ঞাতুমিচ্ছা’ ও ‘জ্ঞাপয়িতুমিচ্ছা’ শব্দ-দুটির মানে জান? প্রথমটি হলো জানার ইচ্ছা আর দ্বিতীয়টি জানানোর ইচ্ছা। শাস্ত্রের শব্দার্থ ও মর্মার্থ জানার চেষ্টা কর।” আমাদের সময়ে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত সংস্কৃত বাধ্যতামূলক ছিল। পণ্ডিত মহাশয়ের শাস্তির ভয়ে ছাত্রদের সন্ধি, সমাস, শব্দরূপ, ধাতুরূপ, কৃৎপ্রত্যয়, তদ্ধিতপ্রত্যয় মুখস্থ করতে হতো। ১৯৫৮ সালে কলকাতার অদ্বৈত আশ্রমে যোগদান করার পর রবিবার বাদে প্রতিদিন সকালে আধ ঘণ্টা স্বামী গম্ভীরানন্দ শাস্ত্র পড়াতেন। তিনি আমাদের গীতা, ছান্দোগ্যোপনিষদ, ব্রহ্মসূত্র শাঙ্করভাষ্য সমেত পড়িয়েছিলেন। ১৯৬৪ সালে তিনি সহকারী সম্পাদক হয়ে বেলুড় মঠে চলে যান। ১৯৬৪ থেকে ১৯৬৬ সাল বেলুড় মঠে ট্রেনিং সেন্টারে থাকাকালীন স্বামী বোধাত্মানন্দ (ভব মহারাজ) ও ব্রহ্মচারী মেধাচৈতন্যের (পণ্ডিত মহারাজ) কাছে শাস্ত্র পড়ার সুযোগ হয়। এঁদের মতো শাস্ত্রজ্ঞ শি‌ক্ষক বিরল। মেধাচৈতন্যজী ছিলেন নবতীর্থ ও ন্যায়মহাচার্য। তিনি আমাদের ঈশ, কেন, কঠ ও মুণ্ডক উপনিষদ ও গীতা পড়ান। বোধাত্মানন্দজী আমাদের বেদান্তসার ও সাংখ্যকারিকা পড়ান। এছাড়া তিনি তাঁর ঘরে আমাকে ও স্বামী জ্যোতীরূপানন্দকে পৃথগ্‌ভাবে মাণ্ডুক্যোপনিষদ কারিকা-সহ ও বিবেকচূড়ামণি পড়ান। রাতে খাওয়ার পর আমরা দুজনে মেধাচৈতন্যজীর কাছে ন্যায়প্রবেশ ও মীমাংসা পরিভাষা পাঠ করি। বোধাত্মানন্দজীর নির্দেশে আমি উপরি-উক্ত উপনিষদগুলির শাঙ্করভাষ্য, আনন্দগিরির টীকা ও শঙ্করানন্দের দীপিকা-সহ পড়ি। লাইব্রেরি থেকে বই এনে মোটা খাতায় পতঞ্জলির যোগসূত্র, সাংখ্যকারিকা, বেদান্তসার প্রভৃতি শাস্ত্রগ্রন্থের প্রতিলিপি করি। মনে পড়ে, শাস্ত্রের ক্লাসে মেধাচৈতন্যজী ব্রহ্মলোক ব্যাখ্যাকালে বলেছিলেন : “বোধাত্মানন্দজী অবশ্যই ব্রহ্মলোকে যাবেন।” আমি বোধাত্মানন্দজীকে পরে বললাম : “মহারাজ, পণ্ডিত মহারাজ বলেছেন যে, আপনি ব্রহ্মলোকে যাবেন।” মহারাজ শুনে বললেন : “পণ্ডিত এই কথা বলেছে! বেশ, এবার তুমি গিয়ে তাকে জিজ্ঞাসা করো সে কোন লোকে যাবে?” এমনই মজার ছিল সেই দিনগুলো। শাস্ত্রের ক্লাসে শুধু শুষ্ক আলোচনা হতো না, নানারকম সরস গল্পও হতো। একদিন আমি পণ্ডিত মহারাজকে বললাম : “মহারাজ, হিন্দুরা ল‌ক্ষ্মীপূজা করে হলো গরিব, আর আমেরিকানরা ল‌ক্ষ্মীপূজা না করে হলো ধনী! এর যুক্তি কী?” তিনি বললেন : “‘উদ্যোগিনং পুরুষসিংহমুপৈতি ল‌ক্ষ্মীর্দৈবেন দেয়মিতি কাপুরুষা বদন্তি।’১ মা...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹120/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in