শ্রীমার ইচ্ছানুসারে একদিন বিশেষ বেশ দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর সঙ্গে গিয়ে এই দর্শনের
[পূর্বানুবৃত্তি : আষাঢ় সংখ্যার পর]।।২।। শ্রীমার ইচ্ছানুসারে একদিন বিশেষ বেশ দর্শনের ব্যবস্থা করা হয়। তাঁর সঙ্গে গিয়ে এই দর্শনের অনুভূতির এক মর্মস্পর্শী বিবরণ দুর্গাপুরী দেবী দিয়েছেন : “মাতাঠাকুরাণীর সহিত সকলে মহাপ্রভুর সন্ধ্যারতি, চন্দনলাগি এবং বড়শৃঙ্গার বেশ দর্শন করিতে চলিলেন। গভীর নিশীথে বড়শৃঙ্গার বেশ হয়। মন্দিরসংলগ্ন বিস্তীর্ণ চত্বরে মাতাকে কেন্দ্র করিয়া সকলে উপবিষ্ট হইলেন। ঊর্ধ্বে তারকাখচিত নীলাকাশ, চতুর্দিকে নিস্তব্ধতা, তাহার মধ্যে উন্নতশির মন্দির যেন ধ্যানগম্ভীর হইয়া বসিয়া আছে। সেই শান্ত পরিবেশের মধ্যে মা সকলকে নিজ নিজ ইষ্টনাম স্মরণ করিতে নির্দেশ দিলেন। “কিয়ৎকাল পরে পাণ্ডা গোবিন্দ শৃঙ্গারী [শিঙ্গারি] আসিয়া সংবাদ দিলেন,—এইবার মন্দিরদ্বার উন্মুক্ত হইবে। সকলে গিয়া মণিকোঠায় প্রবেশ করিলেন। আনন্দচিত্তে সকলে প্রভুর চন্দনলাগি দর্শন করিলেন। অতঃপর বেশকারিগণ নিপুণ হস্তে বিচিত্র বেশভূষায় সজ্জিত করিলেন দেবতাত্রয়কে। অপূর্ব সে বড়শৃঙ্গার বেশ! জনবিরল কোলাহলশূন্য মন্দির, আপনা হইতেই চিত্ত স্থির হইয়া আসে। ভক্তিবিগলিত-হৃদয় বলে, ‘জগন্নাথঃ স্বামী নয়নপথগামী ভবতু মে।’ মনে হয়, সেই প্রার্থনা শ্রুতিগোচর হয় জগন্নাথস্বামীর—বিশাল কৃপাল বাহুদ্বয় প্রসারিত করিয়া তিনি আহ্বান জানান সকলকে, মানুষের চিত্তকে বহির্জগৎ হইতে নিজের দিকে আকর্ষণ করেন। “কতক্ষণ এইভাবে অতিবাহিত হয় তাহা কাহারও মনে থাকে না, ততক্ষণে তিনখানি পালঙ্ক আনীত হইয়াছে, সজ্জিত হইল দেবতার শয্যা। সুরভিত গন্ধে মন্দির আমোদিত। এইবার তাঁহারা বিশ্রাম গ্রহণ করিবেন। মাতাঠাকুরাণী তখনও তদ্গত হইয়া প্রভুকে দর্শন করিতেছেন। তাঁহাকে স্মরণ করাইয়া দিতে হয় ফিরিবার কথা!… “রাত্রিশেষে মঙ্গলারতির সময় পুনরায় মন্দিরে আসিয়া সকলে মিলিত হইলেন। বৈতালিকগণ উচ্চৈঃস্বরে শ্রুতিমধুর বিবিধ স্তুতিগানে প্রভুর নিদ্রাভঙ্গে উদ্যোগী হইলেন,—ভো দেব মণিমা (প্রভু)! ত্রৈলোক্যেশ্বর মণিমা, অখিলকোটি-ব্রহ্মাণ্ডনাথ মণিমা! নিশা অপগত হইয়াছে, দিনমণির উদয় হইয়াছে। শ্রীরত্নপালঙ্ক পরিত্যাগপূর্বক রত্নবেদীতে বিরাজ করিবার জন্য আপনি অবহিত হউন। আপনার নিদ্রাভঙ্গ করিতেছি, তজ্জন্য অপরাধ মার্জ্জনা করিবেন মণিমা! “এইভাবে প্রার্থনার পর মন্দিরদ্বার উন্মুক্ত হয়। মন্দিরের মধ্যে প্রবেশ করিয়া এইবার উৎকল ভক্তগণ করতালিযোগে বলেন, ‘দেখিলি পদ্মমুখ, খণ্ডিল সকল দুখ; মোতে নিস্তার, নিস্তার, নিস্তার।’… “ভক্তের ব্যাকুল আহ্বানে প্রভুর নিদ্রাভঙ্গ হইয়াছে, এইবার মঙ্গলারতি আরম্ভ হইবে; কিন্তু তাঁহার বিশাল নয়নদ্বয়...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
