শ্রী‌ক্ষেত্র পুরীধাম জগন্নাথদেবের লীলা‌ক্ষেত্র। ‘শ্রী’ হলেন মহাল‌‌ক্ষ্মী—যিনি নারায়ণের সহধর্মিণী।

শ্রী‌ক্ষেত্র পুরীধাম জগন্নাথদেবের লীলা‌ক্ষেত্র। ‘শ্রী’ হলেন মহাল‌‌ক্ষ্মী—যিনি নারায়ণের সহধর্মিণী। পুরীর জগন্নাথ-মন্দিরকে ‘শ্রীমন্দির’ও বলা হয় এবং পৌরাণিক মতে মা ল‌ক্ষ্মী স্বয়ং নারায়ণের ভোগ প্রস্তুত করেন। জগন্নাথ ও নারায়ণ অভিন্ন। পুরীতে জগন্নাথদেবের যাঁরা ভোগ প্রস্তুত করেন, তাঁদের তো বিশেষ হতেই হবে। বলা হয়, পুরীর জগন্নাথ-মন্দিরের পাচকগণ মা ল‌ক্ষ্মীর কৃপায় সদা শুদ্ধ।১ তাঁদের প্রস্তুত করা নৈবেদ্য কখনো অপবিত্র হয় না। জগন্নাথদেবের প্রসাদ মা বিমলাকে উৎসর্গ করলে তবেই তা ‘মহাপ্রসাদ’ আখ্যাপ্রাপ্ত হয়। বিশ্বাস করা হয়, মা বিমলা মন্দির-প্রাঙ্গণ র‌ক্ষা করেন। তিনি মন্দিরের অধিষ্ঠাত্রী দেবী। তাঁর মন্দির একটি শক্তিপীঠ বলেও অভিহিত। শ্রীচৈতন্যদেব ও মহাপ্রসাদ : জগন্নাথদেবের মহাপ্রসাদের মাহাত্ম্য সম্বন্ধে আলোচনা করতে গেলে শ্রীচৈতন্য মহাপ্রভুর উপলব্ধির কথা স্মরণ করতে হয়, যার একটি মনোগ্রাহী বিবরণ আমরা শ্রীশ্রীচৈতন্যচরিতামৃত গ্রন্থের ‘অন্ত্যলীলা’য় পাই।২ একদিন তিনি জগন্নাথ-দর্শনে গিয়েছেন। মন্দির-প্রাঙ্গণে গরুড়স্তম্ভের পিছন থেকে দর্শন করতে গিয়ে তিনি দেখলেন, জগন্নাথ মুরলীধারী শ্রীকৃষ্ণ হয়ে গিয়েছেন! এমন সময় প্রাতের ‘গোপালবল্লভ ভোগ’ নিবেদন করা হলো। শঙ্খ-ঘণ্টা বাজিয়ে আরতির পর জগন্নাথের সেবকগণ চৈতন্যদেবকে মালা পরিয়ে প্রসাদ দিলেন। এমনই সেই প্রসাদের মাহাত্ম্য যে, আস্বাদনের আগে সুবাসেই মন মাতিয়ে দেয়। মহাপ্রভু সেই প্রসাদ গ্রহণ করে পুলকিত, নয়নে অশ্রুধারা। তিনি উপলব্ধি করলেন, এমন স্বাদ শ্রীকৃষ্ণের অধরামৃতের স্পর্শেই সম্ভব। শ্রীকৃষ্ণের ভুক্তাবশেষকে ‘ফেলা’ আখ্যা দেওয়া হয়। তার কণামাত্রও উপলব্ধ হওয়া ভাগ্যের কথা। মহাপ্রভু এরপর ‘উপলভোগ’ দর্শন করে শ্রীমন্দির থেকে ফিরে গেলেন। ভোগসমূহ গর্ভগৃহে শ্রীবিগ্রহের বেদির সম্মুখে নিবেদন করা হয়। শুধু ‘উপলভোগ’ গরুড়স্তম্ভের পিছনে পাথরের পট্টন, যাকে ‘উপল’ বলে, তার ওপর স্থাপন করে জনসাধারণের সম‌ক্ষে নিবেদন করা হয়। চৈতন্যদেব শ্রীমন্দির থেকে ফিরে গেলেও তাঁর অন্তরে শ্রীকৃষ্ণের অধরামৃতের স্মরণ সদা জাগ্রত ছিল। সেই অলৌকিক স্বাদ সম্বন্ধে তিনি বলেছিলেন—মহাপ্রসাদের উপকরণ ই‌ক্ষুজাতীয় পদার্থ, কর্পূর, মরিচ, এলাচ, লবঙ্গ, ঘৃত, কাবাবচিনি, দারুচিনি ইত্যাদি প্রাকৃত দ্রব্যই হয়। এসবের স্বাদ সবারই পরিচিত। কিন্তু এই দ্রব্যসকল যে স্বাদে, গন্ধে ঐশ্বরিক মাহাত্ম্যে পূর্ণ হয়ে ওঠে, তা সম্ভব হয় শ্রীকৃষ্ণের অধরসুধার স্পর্শে। ভোগের...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in