তিনি অনাথের নাথ, দীনবন্ধু, জগতের নাথ, শ্রীজগন্নাথ; শ্রীচৈতন্যদেবের প্রাণের
তিনি অনাথের নাথ, দীনবন্ধু, জগতের নাথ, শ্রীজগন্নাথ; শ্রীচৈতন্যদেবের প্রাণের দেবতা, আপামর ভারতবাসীর প্রভু ও ওড়িশাবাসীর ‘মণিমা’। তিনি শ্রীকৃষ্ণ, শ্রীহরি। তিনিই মহাদেব, পুরীধামের অধিষ্ঠাত্রী বিমলা দেবীর ভৈরব। আবার তিনিই স্বয়ং পরমব্রহ্মস্বরূপিণী আদ্যাশক্তি, মহাকালী। যুগ যুগ ধরে ভক্তরা তাঁর দিব্যদর্শনের আশায় ছুটে আসেন পুরীর মন্দিরে। মহাপ্রভু জগন্নাথ যেন মানবের মতোই লীলা করেন এই নীলাচলে। তিনি পুরুষোত্তম; রাজাধিরাজ, দেবাদিদেব। তাই তাঁর রাজকীয় পুজো, আচার-অনুষ্ঠান শ্রীমন্দিরে পালিত হয় ভক্তি-নিষ্ঠা সহযোগে। পুরীধামে তাঁর নিত্যপূজা, উপলক্ষভিত্তিক পূজা ও উৎসবকালীন পূজা অনুষ্ঠিত হয়। এসকল পূজার আচার-অনুষ্ঠানগুলি ‘নীতি’ নামে পরিচিত। গর্ভগৃহে ভোর থেকে রাত পর্যন্ত শ্রীজগন্নাথদেব, শ্রীবলভদ্রদেব, দেবী সুভদ্রা ও সুদর্শনচক্র—এই চতুর্ধা বিগ্রহের নিত্যপূজা ও রীতিনীতি সংক্ষিপ্তাকারে উল্লেখ করা হলো। দ্বারফিটা ও ভিতরশোধা (ভোর ৪টা ৩০) : দিনের প্রথম ‘নীতি’ হলো শ্রীমন্দিরের দ্বার উন্মোচন করা, যা ‘দ্বারফিটা’ নামে পরিচিত। ভোরে মন্দিরের সিংহদ্বার, জয়বিজয়দ্বার, কলাহাটদ্বার খোলা হয়। জগন্নাথদেবের বিভিন্ন সেবার জন্য নিযুক্ত থাকেন বিভিন্ন সেবক—বংশপরম্পরায় এঁরা সেবায় নিয়োজিত। শ্রীমন্দিরের দ্বার খোলার সময় উপস্থিত পাঁচজন সেবকের অন্যতম ভিতরছ মহাপাত্র—যিনি শ্রীমন্দিরে লক্ষ্মীদেবীর পিতাস্বরূপ তথা জগন্নাথদেবের চার মূল সেবকের একজন—তিনি সিংহদরজার তালাটি পর্যবেক্ষণ করেন। আগের দিন রাতে আরেক মূল সেবক তালুছা মহাপাত্র দরজার তালা দেওয়ায় পর তার ওপর মাটির প্রলেপ দেন; তারপর মন্দিরের গুপ্তচিহ্নযুক্ত ধাতব দণ্ড দিয়ে তাতে ছাপ দিয়ে সিলমোহর দেন। সেই সিলমোহর অক্ষত রয়েছে কি না তা দেখে নিশ্চিত হয়ে ভিতরছ মহাপাত্র মাটির প্রলেপটি জল দিয়ে ধুয়ে মন্ত্রপাঠ, করন্যাস ইত্যাদি করে তালা খুলে মন্দিরের কপাট খোলেন। এরপর একইভাবে মন্দিরের গর্ভগৃহের দরজা এবং অন্য সকল মন্দিরের দ্বার খোলা হয়, সারা মন্দির-চত্বর পবিত্র জল দিয়ে শোধন করা হয়। এই নীতিকে বলে ‘ভিতরশোধা’। তারপর দুন্দুভিনাদ, গীত সহযোগে জগন্নাথদেবকে ‘মনিমা’ সম্বোধন করে সেবকরা তাঁর ঘুম ভাঙান। ‘মনিমা’ একটি ওড়িয়া শব্দ, এর অর্থ সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি। এই সময় চতুর্ধা বিগ্রহের খাট, বালিশ, চাদর, পূর্বরাত্রে দেওয়া ভোগ সরিয়ে ভাণ্ডারঘরে রাখা হয়। মঙ্গলারতি (ভোর ৫টা ৩০) : এই সময় রত্নসিংহাসনের...
Read the Digital Edition of Udbodhan online!
Subscribe Now to continue reading
₹100/year
Start Digital SubscriptionAlready Subscribed? Sign in
