প্রাচীন দক্ষিণভারতে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে শিক্ষার ধারাটিও পরিবর্তিত হয়েছিল।

প্রাচীন দক্ষিণভারতে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে শিক্ষার ধারাটিও পরিবর্তিত হয়েছিল। আদি ঐতিহাসিক (early historic) পর্বে যে কৌম সংগঠন ছিল, সেখান থেকে রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার পরিবর্তন এবং তার সঙ্গে সঙ্গে আর্থ-সামাজিক কাঠামোর পরিবর্তন নানাভাবে শিক্ষার উদ্দেশ্য, প্রকরণ ও কাঠামোকে বদলে দিয়েছিল। শিক্ষার একেবারে প্রাথমিক স্তর থেকে বিবর্তিত হয়ে পরবর্তিকালে কোনো গোষ্ঠী বা রাষ্ট্রের নিয়ন্ত্রণে যে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাব্যবস্থা বিকশিত হয়েছিল তা সম্পূর্ণভাবে পৃথক। বিবর্তনের এই ধারাটিকেই আমরা ধরার চেষ্টা করব। প্রাচীন ভারতে ‘শিক্ষা’ শব্দটির ব্যঞ্জনা সম্প্রসারিত হয়েছিল মানবের সাংস্কৃতিক বিকাশ ও ব্যক্তিত্বের উন্নয়নেও—যে-প্রক্রিয়াটি জীবনের অন্তিমকাল পর্যন্ত ব্যাপ্ত।১ তামিল ভাযায় (বিশেষ করে সঙ্গম সাহিত্যে) একটি শব্দের অস্তিত্ব পাওয়া যায়—‘কলভি’, যার অর্থ হলো শিশুর অন্তর্নিহিত সুপ্ত সম্ভাবনাকে বিকশিত করা।২ দক্ষিণভারতে শিক্ষা নিয়ে সুগভীর চিন্তাভাবনার পরিচয় পাওয়া যায়। তিরুবাল্লুবর তাঁর প্রখ্যাত তিরুক্কুরাল গ্রন্থে শিক্ষা সংক্রান্ত পাঁচটি অধ্যায় রচনা করেছিলেন; বলেছিলেন—শিক্ষিতরাই প্রকৃত চক্ষুষ্মান, অশিক্ষিতদের চক্ষু আসলে একটি ক্ষতের মতো যা কোনো কাজে আসে না, উলটে নানা সময়ে বিপত্তির কারণ হয়। শিক্ষার প্রকৃত উদ্দেশ্য ধর্মবোধ জাগ্রত করা এবং সামাজিক কর্তব্য পালনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত করা। প্রাথমিক পর্বে সঙ্গম সাহিত্যের সময়ে তামিল ভাষার প্রসার ঘটলেও পরবর্তিকালে পাঠ ও পাঠদানের প্রধান মাধ্যম ছিল সংস্কৃত; কদাচিৎ তামিল ভাষায় শিক্ষাদান করা হতো। সঙ্গম যুগেই দক্ষিণভারতে একদিকে আর্থিক সমৃদ্ধি ও অন্যদিকে শিল্পকলার বিকাশ তাকে অনন্য করে তুলেছিল।৩ এরই সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থারও যে বিকাশ ঘটেছিল তার প্রমাণ পাওয়া যায় বিশাল সাহিত্যসম্ভার থেকেই। কিন্তু এই শিক্ষা প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নয় বা সকলের জন্য নয়। শিক্ষকতা কোনো আলাদা পেশা হিসাবেও স্বীকৃতি পায়নি। পরিবারই ছিল শিক্ষার উত্স। সামাজিকভাবে বয়স্কদের থেকে পরবর্তী প্রজন্ম নানা শিক্ষা লাভ করত। লিখিত কোনো উপাদান নয়, শিক্ষিত মানুষদের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয় শ্রবণ করাই ছিল শিক্ষার মূল মাধ্যম।৪ কখনো কখনো ধনী গৃহস্থরা গৃহশিক্ষকদের সাহায্যও নিত। সেক্ষেত্রে প্রতিবেশী গৃেহর শিশুরাও সেই শিক্ষকের কাছে অনেক সময় বিদ্যালাভের সুযোগ পেত। সাধারণত কুলপুরোহিতকেই শিক্ষক হিসাবে নিয়োগ করা হতো। অনেক সময়ে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in