জীবনের চাওয়া-পাওয়া পূর্ণতা-অপূর্ণতার মধ্যেই জেগে থাকে একটা অমরত্বলাভের বাসনা—

জীবনের চাওয়া-পাওয়া পূর্ণতা-অপূর্ণতার মধ্যেই জেগে থাকে একটা অমরত্বলাভের বাসনা—লোভ-লালসার আগুনের মতোই ধিকধিক করে তা জ্বলে এই মরশরীরে; আর যতদিন জ্বলে ততদিন আমরা দৌড়ে চলি এক না-জানা টানের অতিকায় শক্তিতে জীবনবৃত্তের পরিধি বরাবর। মাঝে-সাঝে পরিধি থেকে ঢুকে পড়ি কেন্দ্রের সন্ধানে, আবার ছিটকে বেরিয়ে আসি কেন্দ্রে পৌঁছানোর অনেক আগেই। জাগতিক কোলাহলে ফেরত এসে সংজ্ঞা ফিরে পাই, মিশে যাই যন্ত্রজীবনে; তবুও শুধু মনকে স্বর্গচ্যুত ‘স্যাটান’-এর বুলিতে বুঝিয়ে চলি—সব শেষ হয়ে যায়নি… ‘All is not lost’। কিন্তু দ্রুত সবকিছু ভুলে যাই, হারিয়ে যাই জীবনচক্রে, অবচেতনে আবার কোনোদিন ফিরে আসে ইচ্ছে—জেগে ওঠে দুর্নিবার চাওয়া, টানাটানি চলে চেতনে-অবচেতনে। বারে বারে অমরত্বের আশায় জেগে ওঠা সত্তার অস্তিত্বের সুরতহাল করলে এর সূত্র খুঁজে পাই অবচেতনে জমে থাকা, শিশুকালে শোনা মহাভারতের উপকাহিনিতে। ঘুম-পাড়ানি গল্পের মলাটে কতবার যে শুনেছি সমুদ্রমন্থনের কাহিনি! মন্দার পর্বতকে দণ্ড এবং বাসুকিকে রজ্জুরূপে ব্যবহার করে ক্ষীরসাগর থেকে উঠেছিল বহু কিছু। কিন্তু সেই মন্থনের সময় দেবাসুরের মূল দ্বন্দ্বটা ছিল অমৃত নিয়ে। অসুরকুল প্রথমে অমৃতের দখল নিলেও বিষ্ণুর নৈপুণ্যে দেবতারা সে-অমৃতের দখল পায়। তবে ঐ অমৃত উদ্ধার করে উড়ে চলে আসার সময় কলসি থেকে প্রয়াগ (এলাহাবাদ), হরিদ্বার, নাসিক ও উজ্জয়িনী—এই চার জায়গায় অমৃত পড়েছিল বলে বিশ্বাস। আবার অন্য একটি মতে, ইন্দ্রপুত্র জয়ন্তই নাকি অমৃতের কলসি নিয়ে অসুরদের কাছ থেকে ছিনিয়ে নিয়ে আসছিলেন। আসার পথে তাঁর বারোদিন সময় লেগেছিল এবং বারোদিনের দীর্ঘ যাত্রাপথে তিনি চার জায়গায় ঐ অমৃতকুম্ভটি নামান। সে-চারটি জায়গাই হলো— প্রয়াগ, হরিদ্বার, নাসিক ও উজ্জয়িনী। একারণে ঐ চারটি স্থানই অতি পবিত্র বলে বিবেচিত হয় এবং বিশেষ তিথিতে ঐ স্থানগুলিতে স্নান করলে পুণ্য অর্জিত হবে বলে মনে করা হয়। জ্যোতিষ বিচারে, এক মতে, যখন বৃহস্পতি কুম্ভে ও রবি মেষে তখন হরিদ্বারে; যখন বৃহস্পতি বৃষে ও রবি মকরে প্রবেশ করে তখন প্রয়াগে; যখন বৃহস্পতি ও রবি সিংহে প্রবেশ করে তখন নাসিকে; যখন বৃহস্পতি সিংহে আর রবি মেষে প্রবেশ করে...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in