অনালোকিত ইতিহাসে ভারতীয় অধ্যাত্ম-সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল বিন্দু কাশী। কাশী স্বমহিমায় আলোকিত।

অনালোকিত ইতিহাসে ভারতীয় অধ্যাত্ম-সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল বিন্দু কাশী। কাশী স্বমহিমায় আলোকিত। বহু সাধকের সাধনা কাশীকে পুষ্ট করেছে সন্দেহ নেই, কিন্তু এছাড়াও কাশীর এক অনুপম দিব্যসত্তা যুগ যুগ ধরে মানুষকে আকর্ষণ করে চলেছে। আবহমান সময়ের পথে জাগতিক বৈভব হয়তো কখনো তাকে স্পর্শ করেছে, কখনো বা ছেড়ে গেছে সাময়িকভাবে, কিন্তু কাশীশ্বর মহাদেব তাঁর স্থানকে কখনোই ত্যাগ করেননি। কাশীর মহিমা তাই শিবের মহিমা, চৈতন্যের শুভ্র প্রকাশ। জড়ের আবিল চাকচিক্য তার নয়। একারণে কাশীর আরেক নাম ‘অবিমুক্তক্ষেত্র’। শিব যে-স্থান কখনো ত্যাগ করেননি, সেই স্থানই অবিমুক্ত। মৎস্যপুরাণ-এ শিব বলছেন : “বিমুক্তং ন ময়া যস্মান্মোক্ষ্যতে বা কদাচন।/ মহৎ ক্ষেত্রমিদং তস্মাদবিমুক্তমিদং স্মৃতম্‌।।”১ আবার অপর এক অর্থেও অবিমুক্ত শব্দটি প্রচলিত—যে-স্থান কখনো ত্যাগ করা উচিত নয়। কাশী রত্নতুল্য, সেই স্থান ত্যাগ করে কাচখণ্ড খুঁজে বেড়ানো মূর্খতা; কারণ, ‘রত্নং করস্থমুৎসৃজ্য কঃ কাচং সঞ্জিঘৃক্ষতি’।২ কালের প্রবাহে জীবাত্মা বহু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করে, কিন্তু সেগুলির উদ্দেশ্য একই—দুঃখের সমূলে বিনাশ এবং পরমানন্দপ্রাপ্তি। বেদান্তের মতে এটিই মোক্ষ। এর একমাত্র উপায় অজ্ঞাননাশ। কাশী রত্নতুল্য, কারণ তা জীবাত্মাকে দুঃখময় সংসার থেকে আনন্দময় মোক্ষদ্বারে উপনীত করে। তবে প্রশ্ন ওঠে, বেদান্ত যখন বলছেনই মোক্ষের একমাত্র উপায় অজ্ঞাননাশ, তাহলে সেক্ষেত্রে একটি বিশেষ স্থানের ভূমিকা কী হতে পারে? সেটিই আমাদের আলোচ্য। শ্রুতিযুক্ত্যনুভবৈরবগম্যতে বেদান্ত-পরম্পরায় তত্ত্বনিরূপণের কিছু উপায় আছে। তার মধ্যে প্রধান হলো শ্রুতি, যুক্তি ও অনুভূতি—এই তিন কষ্টিপাথরে তত্ত্বটিকে যাচাই করে নেওয়া। ‘শ্রুতিযুক্ত্যনুভবৈরগম্যতে’—শ্রুতি, যুক্তি ও অনুভবের দ্বারাই তত্ত্ব বুঝে নেওয়া হয়।৩ এই পদ্ধতির কথা বেদান্তের ভাষ্যাদিতে বহুবার ঘুরে-ফিরে এসেছে। (১) শ্রুতি অর্থে মূলত উপনিষদ বোঝায়। বহুমানিত স্মৃতিগ্রন্থাদিও তার মধ্যে ধরা হয়।(২) যুক্তি বা উপপত্তি হলো শাস্ত্রসম্মত অনুমান। তর্কশাস্ত্র সমস্ত শাস্ত্রের প্রদীপস্থানীয়। ভাষ্যকার বাৎস্যায়ন বলেছেন : “প্রদীপঃ সর্ববিদ্যানামুপায়ঃ সর্বকর্মণাম্‌।”৪ ন্যায়বিদ্যার অপর নাম ‘আন্বীক্ষিকী’। শ্রুতিমুখে তত্ত্ব শ্রবণের পর যুক্তি দ্বারা তার মনন হলো অন্বীক্ষা। সংক্ষেপে, প্রত্যক্ষ ও শাস্ত্রের অবিরুদ্ধ অনুমানই অন্বীক্ষা। আর এই অন্বীক্ষার নির্বাহক শাস্ত্র হলো আন্বীক্ষিকী।(৩) অনুভূতি তত্ত্বনিরূপণের প্রধান স্তম্ভ। এটিই একমাত্র স্বসংবেদ্য অনুভব,...

Read the Digital Edition of Udbodhan online!

Subscribe Now to continue reading

₹100/year

Start Digital Subscription

Already Subscribed? Sign in